Logo
আজঃ বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4
শিরোনাম

ওরাইমোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন তাহসান

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৭ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | ১৭০জন দেখেছেন

Image
মারুফ সরকার ,স্টাফ রিপোর্টার:ওরাইমো বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী ও জনপ্রিয় অভিনেতা তাহসান রহমান খান। বিশ্বব্যাপী তরুণদের জন্য স্মার্ট এক্সেসরিজ প্রতিষ্ঠান ওরাইমোর ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছে জনপ্রিয় এই তারকা। মঙ্গলবার রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে ডিলারদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাহসানের সঙ্গে ওরাইমোর নতুন এই যাত্রার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় ওরাইমোর ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর তাহসান খান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ওরাইমোর গ্লোবাল ব্র্যান্ড ডিরেক্টর জয়ী জিং ই, ওভারসিস সেলস ডিরেক্টর জাস্টিন ই, কান্ট্রি ম্যানেজার তানবীর মজুমদারসহ প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আগামীতে বাংলাদেশে ওরাইমোর যেসব স্মার্ট এক্সেসরিজ ডিভাইস যেমন টিডব্লিউএস, স্মার্টওয়াচ, হেডফোন, ট্রিমার, চার্জার পাওয়া যাবে এসব পণ্যের সঙ্গে ক্রেতা ও ভক্ত-শ্রোতারা তাহসান খানকে দেখতে পাবেন। নতুন এই যাত্রায় ভক্তদের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় সিক্ত হন জনপ্রিয় এই তারকা। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে ওরাইমো। ওরাইমোর কান্ট্রি ম্যানেজার তানবীর মজুমদার বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত যে, জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী তাহসান খান ও ওরাইমো আগামীতে এক হয়ে কাজ করবে। তাহসান খানের মতো প্রতিভাবান শিল্পীর অগণিত ভক্ত ও দর্শক রয়েছে, যাদের মাধ্যমে ওরাইমোকে চিনবে তরুণরা। আমরা আশাকরি তার সঙ্গে ওরাইমোর যাত্রা হবে আনন্দদায়ক। তাহসান খান বলেন, ওরাইমো বিশ্বব্যাপী তরুণদের কাছে একটি জনপ্রিয় নাম। এ ধরনের একটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি খুবই খুশি। আমি সত্যি দারুণভাবে আশাবাদী যে, ওরাইমোর সঙ্গে আমার এই যাত্রা নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেবে। সঙ্গীত ও সুর দিয়ে বিনোদন জগতে দারুণভাবে যাত্রা শুরু করেন তাহসান খান। পরে অভিনয় জগতেও নাম লিখিয়েছেন তাহসান। ২০১৯ সালে ‘যদি একদিন’ এর মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নাম লেখান তাহসান।

আরও খবর



মোবাইলের অডিওকে উন্নত করতে ইনফিনিক্স ও জেবিএল-এর পার্টনারশিপ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | ১৩২জন দেখেছেন

Image

প্রযুক্তি ডেস্ক:বিশ্বখ্যাত অডিও ব্র্যান্ড জেবিএল-এর সঙ্গে আবারও একসঙ্গে কাজ শুরু করেছে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। পার্টনারশিপটি দুই প্রতিষ্ঠানের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ফলে, সাউন্ড বাই জেবিএল-এর মাধ্যমে ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজের ফোনগুলোতে উন্নত অডিও অভিজ্ঞতা পাবেন গ্রাহকরা।

এই পার্টনারশিপের পর আরও উন্নত মানের সাউন্ডের জন্য স্পিকার ও হেডফোন আউটপুটকে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। ইনফিনিক্স নোট ৩০ সিরিজে এই পার্টনারশিপ তুমুল সাফল্য পেয়েছিল। তার পথ ধরেই, নতুন এই পার্টনারশিপ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করবে। 

জেবিএল-এর অ্যাকুস্টিক ডিজাইন, উন্নত অডিও প্রসেসিং অ্যালগরিদম এবং আধুনিক ড্রাইভার প্রযুক্তি সেরা মানের হার্ডওয়্যার নিশ্চিত করে। এতে ইনফিনিক্স ডিভাইসে পাওয়া যাবে নির্ভরযোগ্য সাউন্ড সিস্টেম।

এই পার্টনারশিপের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো- নোট ৪০ সিরিজের ফোনে ডুয়েল জেবিএল স্পিকারের অন্তর্ভুক্তি। চমৎকার, থ্রিডি সাউন্ডের অভিজ্ঞতা দিতে এই ডুয়েল স্পিকার ডিজাইন করা হয়েছে। এতে আরও আছে ডিপ বেইজ ইফেক্টসহ ৫৮% উন্নত বেইজ পারফরম্যান্স।

নোট ৪০ সিরিজের ফাইভ-ম্যাগনেট সাউন্ড ইউনিট নির্ভরযোগ্য সাউন্ডের ক্ষেত্রে একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। এটি মিউজিক, ভিডিও ও গেমিংয়ে গ্রাহকদের জন্য সেরা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে।

তাছাড়া, ইনফিনিক্সের নিজের তৈরি এআই অ্যালগরিদমযুক্ত ডাবল মাইক্রোফোন সিস্টেম কোলাহলপূর্ণ পরিবেশেও পরিষ্কার ভয়েস ক্যাপচার নিশ্চিত করে। ফিচারটি গেমারদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ থাকলেও গেমিংয়ের সময় তারা টিমের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন নির্বিঘ্নে।

গত মার্চ থেকে বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ইনফিনিক্স নোট ৪০ সিরিজের নোট ৪০ ও নোট ৪০ প্রো স্মার্টফোন দুটি।

নোট ৪০ প্রো ফোনের ৮ জিবি র‍্যাম ও ২৫৬ জিবি ধারণক্ষমতার সংস্করণটির মূল্য ৩০,৯৯৯ টাকা এবং ১২ জিবি র‍্যাম ও ২৫৬ জিবি ধারণক্ষমতার সংস্করণটির মূল্য ৩৪,৯৯৯ টাকা। ৮ জিবি র‍্যাম ও ২৫৬ জিবি ধারণক্ষমতার নোট ৪০ ফোনটির মূল্য ২৬,৯৯৯ টাকা।


আরও খবর



হরিরামপুর ইউনিয়নে অবরুদ্ধ নির্যাতিত গৃহবধূ কে ৯৯৯ ফোন দিয়ে উদ্ধার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | ৬৮জন দেখেছেন

Image

আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী,ফুলবাড়ী, দিনাজপুর প্রতিনিধি:দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলা হরিরামপুর ইউনিয়নে স্ত্রী মোহসীনা বেগমকে মারপিট করে ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখে পাসন্ড স্বামী শাহরিয়ার রহমান রুবেল। অবরুদ্ধ স্ত্রী বন্দিদশা থেকে মুক্ত হতে প্রতিবেশীর সহায়তায় ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশের নিকট বাঁচার আকুতি জানায়। অপরদিকে নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবার ও একই সময়ে তাকে উদ্ধারে পুলিশী সহায়তার জন্য স্ধসঢ়;হানীয় মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে শরণাপন্ন হলে দ্রুত সময়ে পুলিশ নির্যাতিতা গৃহ বধুকে উদ্ধার করে।

শারীরিক নির্যাতনের শিকার এক সন্তানের জননী গৃহবধূ মোহসীনা এখনো রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ চার দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত সোমবার দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়নের হরিরামপুর মোল্লাপাড়া গ্রামের আনারুল হকের ছেলে শাহরিয়ার রহমান রুবেল এর বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে ২৩/৪/২১ সালে রংপুর জেলার বদরগনজ উপজেলার রামকৃষ্ণপুর মাসানডোবার মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে মোহসীনা বেগমের সঙ্গে শাহরিয়ার রহমান রুবেল এর বিবাহ হয়। বিবাহের পর হতেই তুচ্ছ ঘটনায় শশুর শাশুড়ী নন্দিয়া রশিদুল ইসলাম নানা ভাবে শারীরিক মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে শশুর আনারুল হক পুত্র বধু মোহসীনার হাতের আঙুল কেটে দিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ হাসপাতালের বেডে শুয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন আমার স্বামী আমার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করেছে আমার বাবা সহ আত্মীয় স্বজন আসলে তাদেরকে খুন করার হুমকি দেয়। আমি আমার একমাত্র সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মুখ বুঝে সব যন্ত্রনা নীরবে সহ্য করে আছি। এখন দিন দিন শারীরিক মানসিক নির্যাতনের মাত্রা বেড়েই চলেছে।

মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে এসআই বাবুল হোসেন জানান নির্যাতিত গৃহবধু কে ৯৯৯ এর ফোনের আলোকে এএস আই খালেক সঙ্গিয় পুলিশ সহ উদ্ধার করে তদন্ত কেন্দ্রে এনে তার অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন মোহসীনা বেগম এর বাবা মোসলেম উদ্দিন বলেন মেয়ের চিকিৎসা চলছে একটু সুস্থ হলেই আইনানুগ প্রতিকার চেয়ে মামলা করব।


আরও খবর



ভোলায় ৭ গ্রামের ৫ হাজার মানুষের ঈদ উযাপন

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | ১০১জন দেখেছেন

Image

শরীফ হোসাইন, ভোলা বিশেষ প্রতিনিধি:সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ বুধবার ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছে ভোলার ৭ গ্রামের অন্তত ৫ হাজার মানুষ। তারা সুরেশ্বরী দরবার শরীফ ও সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফ অনুসারী। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ০১ নং ওয়ার্ডের পঞ্চাইত বাড়ীর দরজায়, মুলাইপত্তন গ্রামের ৭ ও ৯নং ওয়ার্ডে প্রায় এক হাজার মুসুল্লি ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।

এছাড়া সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার তিনটি গ্রামের ৭শ পরিবার একদিন আগেই ঈদুল ফিতর পালন করেছে। সুরেশ্বরী দরবার শরীফের খলিফা ও মুলাইপত্তন গ্রামের ৭নং ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত জামাতের ইমাম গোলাম মাওলা মঞ্জু জানান, দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে আমরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ পালন করে আসছি। আজ তিন গ্রামে পৃথক জামাতে প্রায় ১ হাজার মুসুল্লি জামাতের সাথে নামাজ আদায় করেন।তিনি আরো বলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাড়াও ভোলা সদর, দৌলতখান, লালমোহন, তজুমউদ্দিন, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার ৩ হাজার পরিবারের প্রায় ৫ হাজার মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

একই ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামের ০৯নং ওয়ার্ডের আমিন মিয়া চৌকিদার বাড়ির দরজার মসজিদে একই সময় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ইমামতি করেন মাও: আনোয়ার হোসেন।তিনি জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ৩০টি রোজা পূর্ণ করে আজ ঈদ উৎযাপন করছি। টবগী ১নং ওয়ার্ডের পঞ্চাইত বাড়ীর মসজিদে হাফেজ তানজীল নামাজের ইমামতি করেন।


আরও খবর



সাফল্য অর্জনকারী ৫ জয়িতার গল্প

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | ৯৭জন দেখেছেন

Image
পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:জয়িতা হচ্ছে সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারীর একটি প্রতিকী নাম। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনায় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রতিবছর দেশব্যাপী “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক অভিনব প্রচারাভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের সফল নারী, তথা জয়িতাদের অনুপ্রাণিত করা। এরি ধারাবাহিকতায় নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলায় ২০২৪ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশেষ সাফল্য অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন ৫ জন আত্মপ্রত্যয়ী এবং সংগ্রামী নারী। তারা হলেনঃ

(১) অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী তাপসী রাবেয়াঃ নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর হরিরামপুর (দক্ষিণ) গ্রামের অধিবাসী এসএম রফিকুল ইসলামের মেয়ে তাপসী রাবেয়া একজন শিক্ষিত যুব নারী যার স্বপ্ন ছিলো ডাক্তার হবার। সেটাতে সফল হতে পারেনি। অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করে বিসিএস পরীক্ষার ব্যর্থ হয়। তবে সে দমে যাবার মেয়ে নয়। ব্যথতায় হচ্ছে সফলতার স্তম্ভ বা খুঁটি এই মন্ত্রে  নতুন উদ্যমে নিজেকে সাজায় সে।

সমাজ, সংসারের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাওয়া রাবেয়া তার সংসার জীবনে জমানো টাকা-গয়না আর আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করা টাকা দিয়ে একটি জমি ক্রয় করে। তারপর সেই জমিতে বাগান করে, পরিচর্যা করে। দুই বছর পর আম বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অঙ্কের টাকা পায়। এইভাবে কয়েক বছর কঠোর পরিশ্রম করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হওয়া শুরু করে।

রাবেয়া জানান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার "একটি বাড়ি একটি খামার" এই প্রকল্পটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি আমার স্বামীর জমিতে একটি খামার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেই। অক্লান্ত পরিশ্রম করে রোদে পুড়ে শ্রমিকদের সাথে হাতে হাত লাগিয়ে গড়ে তুলি "শাহ আলম এগ্রো" নামের একটি প্রতিষ্ঠান। যা একটি গবাদি পশু পালন, বায়োগ্যাস ও প্রাকৃতিক জৈব সার উৎপাদন কারী প্রতিষ্ঠান। 

যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে আমি গবাদির পশুর যত্ন, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচর্যা, প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করে। মৎস্য চাষ ও হাঁস-মুরগি পালন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে কিভাবে লাভজনক ভাবে করা যায় তা আয়ত্ত করে স্বল্প সময়ের মধ্যে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে দেশি মুরগি ও হাঁস পালন শুরু করি। এ লক্ষ্যে নিজস্ব হ্যাচারি স্থাপন করি খামারের মধ্যে। বাচ্চার বয়স আড়াই থেকে সাড়ে তিন মাস হলেই প্রতি চালানে (পাঁচশত) বিক্রি করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা লাভ করি। এছাড়াও বিভিন্ন রকম মৌসুমি ফল ও শাক-সবজি চাষ করে খামারের এক ইঞ্চি জায়গাও নষ্ট করিনি। 

খামারের এক প্রান্তে একটি ছোট পুকুর আছে। সেটার ধারেই হাঁসের সেড স্থাপন করি। সেই পুকুরে সমন্বিত মাছ চাষের পাশাপাশি শামুকও চাষ করি। ফলে হাঁসের খাদ্যের খরচ অর্ধেক লাগে। আবার হাঁসের বিষ্ঠাগুলো পুকুরের মাছের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। হাঁসের ডিম ও মাছ বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অংকের অর্থ উপার্জন করি পাশাপাশি আমার পরিবারের আমিষের চাহিদাও পূরণ হয়।

আজ আমি কারো বোঝা নই। অর্থের জন্য এখন আমাকে আর কারো কাছে হাত পাতাতে হয় না। বরং আমি আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করি। আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী ও গরিব অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। আমি মনে করি অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন নারীদের সামাজিক মুক্তির একটি বড় মাধ্যম।

(২) শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী নিয়তি রানী উরাওঃ পত্নীতলা উপজেলার অন্তর্গত পত্নীতলা ইউনিয়নের বুজরুক মামুদপুর গ্রামে বসবাস ৩৮ বছর বয়সী নিয়তি রানী উড়াও এর। তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং স্বামী সন্তানদের ও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যার অন্য একটি পরিচিতি তিনি হলো মহীয়সী নারী।

বাবা শ্রীমন্ত উরাও ও মা যামিনী উরাও এর পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি পঞ্চম সন্তান। তিনি ছিলেন একটু ভিন্ন প্রকৃতি কর্মচঞ্চল হাসিমাখা মুখের অধিকারী। তার বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈনতায়। তিন বেলা তাদের খাবার যোগাড় ছিল না। 

পড়ালেখা করা খুবই কঠিন হয়ে ওঠে। নিয়তি রানী উড়াও তাই নিজের প্রচেষ্টায় লোকের বাড়িতে দিনমজুরি কাজ করে টাকা জোগাড় করে পড়ালেখার খরচ চালাতো। এভাবে সে জয়পুরহাট খঞ্জনপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাস করেন। একইভাবে সে জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। আর্থিক অনটনের কারণে বাধ্য হয়ে বিবাহ জীবনে আবদ্ধ হন।

নতুন সংসার জীবন শুরু হয়। বছর না যেতেই তার কোলে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান ঘর আলো করে আসে। পরিবারের আর্থিক অনটনের জন্য এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের এ.এন.পি স্কুলে ৪ বছর চালানোর পর দুই বছর পিপিএস বিদ্যালয় শিক্ষকতায় আবদ্ধ হন।

এরপর এনজিও সংস্থা আশ্রয় ৪ প্লাস শিশুর শিক্ষকতা করেন। এরই মধ্যে সার্বিক কল্যাণে সমাজের ক্ষেত্রে নারী নেত্রী হিসেবে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট এর বাংলাদেশ নারীনেত্রী প্রশিক্ষণে চারদিন ব্যাপী জয়পুরহাটে টিএমএসএস তে ১৫০তম ব্যাচে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি তার জীবনের মিল খুঁজে পান। এই প্রশিক্ষণের সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মিশার সুযোগ হয় মানুষকে চেনা এবং তাদের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে তা খুব ভালোভাবে আয়ত্ব করেন নিয়তি রানী। সামাজিক সমস্যার সমাধানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এলাকায় নারীদের সংঘটিত করে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপোষের নেত্রী হিসেবে তিনি এলাকায় সুপরিচিত। এখন তিনি দ্যা হাঙ্গার প্রজেক্ট এর পুষ্টি উজ্জীবক হিসেবে সমাজ সেবায় স্বেচ্ছাসেবিকার কাজ করে চলেছেন। মানুষদের স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে থাকেন। তিনি বিভিন্ন দিবসে নিজের গ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন এলাকার তরুণ এবং বেকার যুবক যুবতীদের আয়বর্ধক কাজে যুক্ত করে সকলের কাছে নিয়তি দিদি জনপ্রিয় মানুষের পরিণত হয়েছেন।

নিয়তি রাণী মনে করেন মানুষ বাঁচে তার কর্মের মাধ্যমে, বয়স এখানে মুখ্য বিষয় নয়। অন্যের জীবনের ভরসার পাত্র কয়জনায় বা হতে পারে? যারা সমাজে মানুষের বিপদে- আপদে পাশে দাঁড়ায়, কাজ করে তারাই প্রকৃত মানুষ।

(৩) সফল জননী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা প্রতিমা রানীঃ পত্নীতলা উপজেলার পত্নীতলা ইউনিয়নের বোরাম গ্রামের শ্রী সন্তোষ চন্দ্র দাসের স্ত্রী প্রতিমা রানী। বাবা হরেন্দ্র নাথ মন্ডল ও মাতা কাদম্বীনি মন্ডলের ৪ সন্তানের মধ্যে প্রতিমা রানী তৃতীয় সন্তান। বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈন্যতায়। তিনবেলা তাদের খাবার জুটতোনা। লেখাপড়া তো দূরের কথা। স্কুলের গন্ডি পেরুনো ভাগ্যে জোটেনি। দৈন্যতার কারণে একেবারেই অল্প বয়সে বিয়ে হয় তার। শ্বশুর-শ্বাশুড়ির অস্বাভাবিক নির্যাতন আর সংসারে অভাব অনটনের মধ্যে সদ্য বিয়ের ১ বছরেই মাথায় জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান। এভাবে সুখে দুঃখে খরকুটু দিয়ে সংসার গড়তে গড়তেই ঠিক ৩ বছর পর তাদের আরও একটি পুত্র সন্তানের জন্য হয়। দুই ছেলে ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিয়ে কোন রকমে দিন কাটতো তারই মধ্যে তাদের সংসার আলো করে আসে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। হাটি হাটি পা পা করে সংসার এগুতেই শুরু হয় সন্তানদের লেখাপড়ার খরচের চাপ।

অভাবের সংসার চালাতে অর্থের প্রয়োজন পড়লে তিনি পড়ে যান অর্থনৈতিক দৈনদশার মধ্যে। পাশের গ্রাম কাঁটাবাড়ীর এক বাবুর নিকট থেকে কিছু জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। পাশাপাশি কিছু গরু-ছাগল, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি নানা ধরনের উৎস থেকে ইনকাম দিয়ে কোন রকমে সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালাতে থাকেন। আস্তেই সন্তানরা উঁচু ক্লাসে উঠে আর লেখাপড়ার খরচও বেশি হতে থাকে। এদিকে সন্তানেরা ক্লাস ফাইভে ও এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। এস.এস.সিতে লেটার মার্ক নিয়ে ফাস্ট ডিভিশনে ফাস্ট হয়। এইদিকে অভাবের সংসার প্রতিবেশি লোকজনদের তিরস্কার, সামাজিক কুসংস্কার, লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সবকিছু উপেক্ষা করে নিজের শেষটুকু দিয়ে প্রচেষ্টায় সন্তানদের মেধা ও হার না মানা পরিশ্রমের ফলে আজ তিনি সত্যিকারের একজন স্বশিক্ষিত মা হিসেবে সমাজে পরিচিত এবং প্রতিষ্ঠিত।

প্রতিমা রানী'র বড় ছেলে স্বপন কুমার দাস এখন সিনিয়র অফিসার জনতা ব্যাংক লিমিটেড, ছোট ছেলে অনুপ কুমার দাস সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সিনিয়র ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার, নাভানা রিয়েল স্টেট লিমিটেড, আর মেয়ে কৃষ্ণাশ্রী দাস সহকারী শিক্ষিকা কাঁটাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সন্তানদের জীবনে ভরসার পাত্র কয়জন মা'ই বা হতে পারে। যারা সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে। কিন্তু প্রতিমা রানী একজন মহীয়সী মা হিসেবে সন্তানদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন।

(৪) নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন জীবন শুরু ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা মান্টি রানী দাসঃ পত্নীতলা উপজেলায় নজিপুর পৌরসভা মামুদপুর গ্রামের অসিম কুমার দাস এর মেয়ে মান্টি রানী দাস। বাবা মার প্রথম সন্তান হওয়ায় মান্টি রানী কৈশর কেটেছিল হেঁসে খেলেই। কিন্তু এই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়না। বাবা অসুস্থ হওয়ায় সংসারে অভাবের কারণে ২০০৮ সালে তাকে বাধ্য হতে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে গিয়ে বেশি দিন ভালো থাকা হয়নি তার। নিজের জীবন এবং সংসার সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না তার। একে তো বাল্যকালে বিয়ে আবার অকালে সন্তান ধারণ। শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর এবং স্বামীর কটু কথা এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। বাচ্চা হওয়ার দীর্ঘ ৯ মাস পরে মান্টির স্বামী মান্টিকে নিতে আসে এবং মান্টিকে নিয়ে যায় শ্বশুড় বাড়ীতে। আবারো তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে মান্টির শশুর বাড়ির লোকেরা মান্টি ও তার না-বালক সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মান্টির বাবা- মা বাধ্য হয়ে মান্টিকে নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে ২০২১ সালে তার সংসার জীবনের ইতি ঘটে।

এরপর মান্টি সেলাই মেশিন পরিচালনার কাজ শেখে। বাবার অভাবী সংসার থেকেই কষ্ট করে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে পোশাক তৈরির কাজ শুরু করে। সেলাই মেশিনের ক্ষুদ্র আয় থেকে একটি গরু ক্রয় করে। গরু বড় হলে তা বিক্রয় করে একটি ছোট সিট-কাপরের দোকান দেয়। পাশাপাশি মান্টি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এসএসসি পাশ করে। কারিগরি কলেজ হতে এইচএসসি পাশ করে। স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর মান্টি তার যোগত্যা দিয়ে প্রথমত একটি সোলার কোম্পানীতে চাকুরী, দ্বিতীয়ত- বেডো এনজিওতে মাঠকর্মী পদে, তৃতীয়ত-ব্রাক প্রতিষ্ঠানে হেলথ্ স্বাস্থ্য কর্মী পদে চাকুরি করে, চতুর্থ পর্যায়ে- পত্নীতলা উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় ভিজিডি প্রকল্পতে ট্রেনার পদে কাজ করে, পঞ্চম ধাপে 'কিশোর- কিশোরী' প্রকল্পে আবৃতি শিক্ষক পদে চাকুরী করে ও চলমান। ষষ্ঠ ধাপে আদমশুমারি ও গৃহগণনা কাজে নিয়োজিত ও একইসঙ্গে মান্টি বাড়িতেই পার্লারের কাজ করে।

সামাজের কিছু কুসংস্কার মানুষ তাকে বিভিন্নভাবে অপবাদ দেয়। তাকে হেও করা চেষ্টা করে। তবুও সমাজের অন্য মেয়েদের অনুপ্রেরনা হয়ে আছে মান্টি। যা অন্যান্য মেয়েদের সামনে চলার উৎসাহ প্রদান করে। মান্টি বলেন স্বপ্ন দেখব জেগে থেকে। অন্যকেও দেখাতে উৎসাহিত করব এমন স্বপ্নই বাস্তবায়ন করতে চাই।

(৫) সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছে যে নারী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সামিমা নাছরিনঃ পত্নীতলা উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষনপুর গ্রামের সামিমা নাছরিন মতিউর রহমান ও নুরজাহান বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। যার বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈন্যতায়। আর্থিক অবস্থা ভাল না হলেও মায়ের প্রচেষ্টায় নিজেকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলেন। 

শামীমা শংকরপুর দাখিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৯৯৫ সালে দাখিল পাস করেন। কিন্তু অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও সামাজিক চাপে বাধ্য হয়ে শামীমার মা তার বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক একই গ্রামের মামুনুর রশিদের সাথে ২০০৫ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। সংসার জীবনে প্রায় শশুর শাশুড়ির নানা কথা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। যৌতুক হিসেবে টাকা-পয়সা দিতে না পারাই স্বাশুড়ির নির্যাতন এবং অনাহার সহ্য করতে হতো যা দেখে প্রতিবেশীরা খাবার এনে দিয়েছেন। 

অভাবের সংসার সাজাতে অর্থের প্রয়োজনে তিনি ব্রাক প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। স্কুলের শিক্ষকতার সময় ননদের নির্যাতনে বাবার বাড়িতে এসে দক্ষিণ লক্ষনপুর গ্রামের গ্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকতা শুরু করেন। এরই মধ্যে সার্বিক সাক্ষরতার আন্দোলন আনসার ভিডিপি গ্রাম উন্নয়ন দলের সভানেত্রী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এর মধ্যে প্রথম সন্তান জন্মগ্রহণ করে। দৈন্যতা দূরীভূত হতে থাকলে স্বামীও শামীমকে গুরুত্ব দিতে থাকেন। এরপর পত্নীতলা উপজেলা আশা ব্যাংক প্রজেক্ট মাঠকর্মী হিসেবে আকবরপুর ইউনিয়নের কার্যক্রম শুরু করেন সামাজিক সমস্যার সমাধানে সহায়তার মধ্য দিয়ে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে পরিচিতি হয়ে ওঠেন শামিমা। এছাড়াও বসতবাড়িতে সবজি চাষ, কম্পোস্ট তৈরি জৈব সার প্রস্তুত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তা বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে জড়িয়ে পড়েন শামীমা।

সামাজিক কাজের অংশগ্রহণ এর সুবাদে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে নানা শ্রেণী পেশা মানুষের সাথে মিশা সুযোগ হয়। যখনই তিনি বাড়িতে আসেন গ্রামের মানুষ অভাব অভিযোগ তাকে ব্যতীত করে তোলে। 

২০১৪ সালে গণ গবেষণা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ৩০ জন নারীকে নিয়ে সামিমা গড়ে তোলেন মুষ্টির চাল সমিতি। তিনি এখন এই সমতির সভাপতি এলাকার কেউ অসুস্থ হয়েছে শুনলে নিজে গিয়ে তাকে ডাক্তার দেখান। কিংবা হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। জমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা মীমাংসা, অসহায় পরিবারকে আইন সহায়তা, গ্রামের স্যানিটেশন ব্যবস্থা শততাগ উন্নতি করন, সকল শিশু বিদ্যালয় ভর্তি নিশ্চিত করন, গর্ভবতী ও পুষ্টি মায়ের পরিচর্যা করা, বিচার সালিশে মেয়েদের মতামতের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করার মতো কাজ গুলো তিনি করে থাকেন।২০১৮ সালে ইউনিয়ন পরিষদের গণ গবেষণা ফোরাম নির্বাচিত হলে তিনি সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের নারী নেত্রী হিসেবে ইউনিয়ন কমিটির কেশিয়ার ও জেলা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। উপজেলা প্রতিবন্ধী কমিটির সদস্যও তিনি। এতাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।

পরিবারের অন্যদের আস্থা অর্জন করে আজ সবার মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন শামীমা। পরিবারের যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে তিনি এখন প্রধান ভূমিকা পালন করেন। মানুষের আত্মশক্তিকে জাগিয়ে দিতে পারে সেই অজয়কে সহজে জয় করতে পারে শামীমা। আর কোন বাধাই তার চলার পথকে রুখতে পারেম না। পরিবর্তনশীন সমাজ সম্পর্কে শামীমার ভাবনা পরিষ্কার। তিনি সবার আগে নিজের মানসিকতা পাল্টিয়েছেন। আর সমাজ পরিবর্তনে ধনী-দরিদ্র কিংবা নারী পুরুষ আলাদা না রেখে সবাইকে মানুষ হিসেবে মূল্য দেওয়া এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে পাশাপাশি সমাজের শিক্ষিত ও জন প্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তাহলেই কেবল সমাজ পরিবর্তন করা সম্ভব।

আরও খবর



কুড়িগ্রামের রৌমারী সীমান্তে ঐতিহাসিক বাড়াইবাড়ী যুদ্ধু দিবস অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | ৮৫জন দেখেছেন

Image

মাজহারুল ইসলাম, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:‘ওয়াহিদ, কাদের, মাহফুজ শহীদদের-আমরা তোমায় ভুলি নাই’ এই শ্লোগানের প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বড়াইবাড়ী সীমান্ত যুদ্ধের ২৪ বছর পদার্পন উপলক্ষে সাবেক এমপি রুহুল আমিনের সহযোগীতায় বড়াইবাড়ি দিবস উদযাপন কমিটির আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালের দিকে বড়াইবাড়ী সীমান্ত যুদ্ধে নিহতের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তপক অর্পণের মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হয়। পরে বড়াইবাড়ী মসজিদ মাঠে সাবেক এমপি রুহুল আমিন এর সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন সাবেক এমপি রুহুল আমিন, বড়াইবাড়ি বিজিবি ক্যাম্প, কলাবাড়ি বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয়, বড়াইবাড়ি গ্রামবাসির পক্ষে, বারবান্দা সুর্য্য সংঘ, শহীদ পরিবারের পক্ষে, চুলিয়ারচর ও বারবান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলাবাড়ি বিবিসি উচ্চ বিদ্যালয়, জাতীয় পার্টি (জেপি), বড়াইবাড়ী গ্রামের কোমলমতি বাচ্চারাসহ এলাকার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। ২০০১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ বড়াইবাড়ী গ্রামে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করে নারকীয় তান্ডব চালায়। অকুতোভয় তৎকালিন বিডিআর ও গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় প্রতিরোধ করা হয়। নিহত হয় বাংলাদেশের তিন বীর বিডিআর জোয়ান ৩৩ রাইফেল্ধসঢ়;স ব্যাটালিয়নের ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদুজ্জামান, সিপাহী মাহফুজার রহমান এবং ২৬ রাইফেলস্ধসঢ়; ব্যাটালিয়নের সিপাহী আঃ কাদের। ভারতীয় পক্ষে নিহত হয় ১৬ বিএসএফ সদস্য। সেই থেকে ঐতিহাসিক এই দিনটি পালিত হয় ‘বড়াইবাড়ী দিবস’ হিসেবে। এলাকাবাসীর দাবী বিজিবি ক্যাম্পের সামনে শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, চলমান নির্মিত ব্রীজ ও রাস্তা তিন শহীদদের নামে নাম করন ও ঐতিহাসিক দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, ইমান আলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আবু হোরায়রা সাধারন সম্পাদক উপজেলা আওয়ামী লীগ, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী, ভাইস চেয়ারম্যান মোজাফফর হোসেন উপজেলা পরিষদের, ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আকতার সৃতি, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শালু, সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল হক মন্ডল, ইউপি সদস্য রুহুল আমিনসহ উপজেলা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।


আরও খবর