নিজস্ব প্রতিবেদক:আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, নির্বাচনে দলের কেউ সংঘাত করলে তার রেহাই নেই, তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো। জনগণ নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে সেটিই চাই। গণতন্ত্রকে আরও সুদৃঢ় করতে না পারলে, দেশ শেষ হয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নাটোর, পাবনা, খাগড়াছড়ি জেলায় আয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভোট ও ভাতের অধিকার রক্ষার আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি। মানুষ আজ ভোট দিতে পারে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করেছি।
তিনি বলেন, এমন কোনো এলাকা নেই, যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ১৫ বছরে বদলে গেছে বাংলাদেশ। উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা দেখা যায় না। পার্বত্য অঞ্চলে সহিংসতা দেখা যায় না। পার্বত্য এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত, সুষম উন্নয়নের বাংলাদেশ গড়তে চাই। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দেবো। সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী দল বিএনপির হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।
‘ভোট চুরির সুযোগ নেই বলে বিএনপি নির্বাচনে আসেনি’- মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের কল্যাণে কাজ করে, আর বিএনপি জানে জ্বালা-পোড়াও করতে। ২০১৩-১৪ এর মতো আবারও অগ্নিসন্ত্রাস করছে বিএনপি।
তিনি বলেন, বিদেশ থেকে নির্বাচন বানচালের হুকুম দিচ্ছে। ওরা গণতন্ত্র বানানই জানে না। মানুষের শান্তি ওদের ভালো লাগে না। তাদের সবকিছুই অবৈধ, ওরা নির্বাচনের কি বোঝে?
পাকিস্তানিদের মতো বিএনপি মা-বোনদের ওপর অত্যাচার করে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি কত মানুষকে হত্যা করেছে তার কোনো হিসাব নেই। আমাদের মা বোনদের ওপর পাকিস্তানিরা যেভাবে নির্যাতন করেছে, সেভাবেই নির্যাতন করেছে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, বাংলা ভাই, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, আমাদের কত নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে তার হিসাব নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিজেরাই বারবার তাদের হাতে আক্রমণের শিকার হয়েছি। তারপরও আমরা কিন্তু দমে যাইনি। বরং এগিয়ে গিয়েছি। আমি তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে ধন্যবাদ জানাই, এত বাধা বিপত্তি, অত্যাচার, নির্যাতন, সবকিছু সহ্য কর নেতাকর্মীরা সংগঠনকে ধরে রেখেছেন এবং এগিয়ে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা খাদ্য সেবা নিশ্চিত করি, চিকিৎসা সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নিই, শিক্ষার ব্যবস্থা করি, বিনামূল্যে বই দেওয়ার ব্যবস্থা করি। আমরা এ দেশের রাস্তাঘাট-পুল ব্রিজ নির্মাণের কাজ হাতে নিই, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করি। প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব সেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। কারণ, একটা বড় দেশ থেকে গ্যাস বিক্রির প্রস্তাব ছিল, আমি বলেছিলাম এটা জনগণের সম্পদ আমি বিক্রি করতে পারি না। কিন্তু খালেদা জিয়া রাজি হয়ে যান।
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ফের সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠনের সুযোগ পেলে প্রতিটি জেলা ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত হবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্লাহ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।