Logo
আজঃ রবিবার ১৯ মে ২০২৪
শিরোনাম
যাত্রাবাড়িতে ছিনতাই হতে যাওয়া মালামাল উদ্ধার করলেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর পবিত্র বিশ্বাস টাঙ্গাইলের মধুপুরে নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানের গন সংবর্ধনা নবীনগরে ভেকু দিয়ে মাটি কাটতে গিয়ে বৈদ্যুতিক তাঁর ছিঁড়ে একজনের মৃত্যু যাত্রাবাড়ীতে অঞ্জাত ব্যাক্তির মরদেহ উদ্ধার রূপগঞ্জে নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিব বাংলাদেশে আবারো শুরু হচ্ছে বার্সা একাডেমির ট্রেনিং ক্যাম্প রেলপথ মন্ত্রী কতৃক মাগুরার নির্মানাধীন রেলপথ নির্মান প্রকল্প পরিদর্শন প্রচারণায় জমে উঠেছে আত্রাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দেশ ও জনগণের স্বার্থে সবাইকে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫টি ইউনিট

সিরাজগঞ্জে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ৮৩জন দেখেছেন

Image
রাকিবুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ সদর থেকে:"স্মার্ট হবে স্থানীয় সরকার,নিশ্চিত করবে সেবার অধিকার" এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সোমবার(২৭ ফ্রেব্রুয়ারি) সারাদেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জে জেলা প্রশাসন এর আয়োজনে স্থানীয় সরকার দিবস২০২৪ হয়েছে। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য  র‍্যালি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় প্রদক্ষিন করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহীদ এ কে শামসুদ্দিন সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা হয়েছে। 

স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক উপসচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, সভাপতিত্ব করেন ও বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) গণপতি রায় এছাড়াও উপস্থিতি মধ্যে বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র সৈয়দ আব্দুল রউফ মুক্তা। সঞ্চান করেন দোলোয়ার হোসেন পরিসংখ্যান কর্মকতা৷জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকতা কানিজ ফাতেমা। কামিল হাসান সহকারী প্রকৌশলী পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের কর্মকতা। পৌর কাউন্সিল রোমানা রেসমা। প্যানেল মেয়র নরুল হক, সৌরভ কুমার সাহা, সহকারী পরিচালক এলজিইডি সহ স্থানীয় সরকার বিভাগের সকল কমকর্তা বৃদ্ধ ও পৌরসভার সকলেই উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর



চাঁদপুরে অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা : বেনাপোল থেকে স্বামী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:শনিবার ১১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ৭৪জন দেখেছেন

Image

ইয়ানূর রহমান শার্শা,যশোর প্রতিনিধি:চাঁদপুরে অন্তঃসত্বা স্ত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার পর আত্নগোপনে থাকা ঘাতক স্বামীকে বেনাপোল কলেজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে যশোর র‌্যাব-৬।

শুক্রবার ভোরে যশোর জেলার বেনাপোল পোর্ট থানার বেনাপোল ডিগ্রী কলেজ এলাকায় বসবাসরত তার আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ইব্রাহিম প্রধানিয়াকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান যশোর র‌্যাব-৬ কোম্পানী অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।

আটক মোঃ ইব্রাহিম প্রধানিয়া (৩৮) চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার বকচর গ্রামের মোঃ আব্দুল মোতালেব প্রাধানিয়ার ছেলে।

মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, ঈদুল ফিতরের দিন চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানা এলাকায় স্বামী ইব্রাহিম প্রধানিয়া তার স্ত্রী খাদিজা আক্তারকে (২৩)শারীরিক নির্যাতন করে শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর এই হত্যাকান্ডের বিষয়ে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে মতলব দক্ষিণ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ভিকটিমের শাশুড়ী মামলা রুজুর পরপরই গ্রেফতার হলেও মূল অপরাধী ঘাতক স্বামী ঘটনার পরপরই নিজেকে আত্মেগোপন করে। ঘটনাটি স্পর্শকাতর ও হৃদয় বিদারক হওয়ায় উক্ত ঘটনায় সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ণ সৃষ্টি করে এবং আলোচিত হত্যাকান্ডের মূল অপরাধী ঘাতক স্বামীকে গ্রেপ্তারের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের সহযোগীতা চান।

স্পর্শকাতর এই ঘটনার মূল পলাতক আসামীকে গ্রেপ্তারে র‌্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং সে আরো জানায়, গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য যশোর জেলার বেনাপোল পোর্ট থানাধীন বেনাপোল ডিগ্রী কলেজ এলাকায় বসবাসরত তার আত্মীয়ের বাড়িতে নিজেকে আত্মগোপনে ছিলেন।

পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।


আরও খবর



সাফল্য অর্জনকারী ৫ জয়িতার গল্প

প্রকাশিত:রবিবার ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | ১৫৫জন দেখেছেন

Image
পত্নীতলা (নওগাঁ) প্রতিনিধি:জয়িতা হচ্ছে সমাজের সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল নারীর একটি প্রতিকী নাম। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনায় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রতিবছর দেশব্যাপী “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” শীর্ষক অভিনব প্রচারাভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের সফল নারী, তথা জয়িতাদের অনুপ্রাণিত করা। এরি ধারাবাহিকতায় নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলায় ২০২৪ সালে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশেষ সাফল্য অর্জনকারী শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন ৫ জন আত্মপ্রত্যয়ী এবং সংগ্রামী নারী। তারা হলেনঃ

(১) অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী তাপসী রাবেয়াঃ নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর হরিরামপুর (দক্ষিণ) গ্রামের অধিবাসী এসএম রফিকুল ইসলামের মেয়ে তাপসী রাবেয়া একজন শিক্ষিত যুব নারী যার স্বপ্ন ছিলো ডাক্তার হবার। সেটাতে সফল হতে পারেনি। অনার্স মাস্টার্স কমপ্লিট করে বিসিএস পরীক্ষার ব্যর্থ হয়। তবে সে দমে যাবার মেয়ে নয়। ব্যথতায় হচ্ছে সফলতার স্তম্ভ বা খুঁটি এই মন্ত্রে  নতুন উদ্যমে নিজেকে সাজায় সে।

সমাজ, সংসারের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাওয়া রাবেয়া তার সংসার জীবনে জমানো টাকা-গয়না আর আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করা টাকা দিয়ে একটি জমি ক্রয় করে। তারপর সেই জমিতে বাগান করে, পরিচর্যা করে। দুই বছর পর আম বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অঙ্কের টাকা পায়। এইভাবে কয়েক বছর কঠোর পরিশ্রম করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হওয়া শুরু করে।

রাবেয়া জানান মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার "একটি বাড়ি একটি খামার" এই প্রকল্পটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমি আমার স্বামীর জমিতে একটি খামার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেই। অক্লান্ত পরিশ্রম করে রোদে পুড়ে শ্রমিকদের সাথে হাতে হাত লাগিয়ে গড়ে তুলি "শাহ আলম এগ্রো" নামের একটি প্রতিষ্ঠান। যা একটি গবাদি পশু পালন, বায়োগ্যাস ও প্রাকৃতিক জৈব সার উৎপাদন কারী প্রতিষ্ঠান। 

যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে আমি গবাদির পশুর যত্ন, খাদ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচর্যা, প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করে। মৎস্য চাষ ও হাঁস-মুরগি পালন বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে কিভাবে লাভজনক ভাবে করা যায় তা আয়ত্ত করে স্বল্প সময়ের মধ্যে অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে দেশি মুরগি ও হাঁস পালন শুরু করি। এ লক্ষ্যে নিজস্ব হ্যাচারি স্থাপন করি খামারের মধ্যে। বাচ্চার বয়স আড়াই থেকে সাড়ে তিন মাস হলেই প্রতি চালানে (পাঁচশত) বিক্রি করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা লাভ করি। এছাড়াও বিভিন্ন রকম মৌসুমি ফল ও শাক-সবজি চাষ করে খামারের এক ইঞ্চি জায়গাও নষ্ট করিনি। 

খামারের এক প্রান্তে একটি ছোট পুকুর আছে। সেটার ধারেই হাঁসের সেড স্থাপন করি। সেই পুকুরে সমন্বিত মাছ চাষের পাশাপাশি শামুকও চাষ করি। ফলে হাঁসের খাদ্যের খরচ অর্ধেক লাগে। আবার হাঁসের বিষ্ঠাগুলো পুকুরের মাছের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। হাঁসের ডিম ও মাছ বিক্রি করে মোটামুটি ভালো অংকের অর্থ উপার্জন করি পাশাপাশি আমার পরিবারের আমিষের চাহিদাও পূরণ হয়।

আজ আমি কারো বোঝা নই। অর্থের জন্য এখন আমাকে আর কারো কাছে হাত পাতাতে হয় না। বরং আমি আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করি। আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী ও গরিব অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। আমি মনে করি অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন নারীদের সামাজিক মুক্তির একটি বড় মাধ্যম।

(২) শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী নিয়তি রানী উরাওঃ পত্নীতলা উপজেলার অন্তর্গত পত্নীতলা ইউনিয়নের বুজরুক মামুদপুর গ্রামে বসবাস ৩৮ বছর বয়সী নিয়তি রানী উড়াও এর। তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এবং স্বামী সন্তানদের ও প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যার অন্য একটি পরিচিতি তিনি হলো মহীয়সী নারী।

বাবা শ্রীমন্ত উরাও ও মা যামিনী উরাও এর পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি পঞ্চম সন্তান। তিনি ছিলেন একটু ভিন্ন প্রকৃতি কর্মচঞ্চল হাসিমাখা মুখের অধিকারী। তার বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈনতায়। তিন বেলা তাদের খাবার যোগাড় ছিল না। 

পড়ালেখা করা খুবই কঠিন হয়ে ওঠে। নিয়তি রানী উড়াও তাই নিজের প্রচেষ্টায় লোকের বাড়িতে দিনমজুরি কাজ করে টাকা জোগাড় করে পড়ালেখার খরচ চালাতো। এভাবে সে জয়পুরহাট খঞ্জনপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাস করেন। একইভাবে সে জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। আর্থিক অনটনের কারণে বাধ্য হয়ে বিবাহ জীবনে আবদ্ধ হন।

নতুন সংসার জীবন শুরু হয়। বছর না যেতেই তার কোলে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান ঘর আলো করে আসে। পরিবারের আর্থিক অনটনের জন্য এনজিও সংস্থা ব্র্যাকের এ.এন.পি স্কুলে ৪ বছর চালানোর পর দুই বছর পিপিএস বিদ্যালয় শিক্ষকতায় আবদ্ধ হন।

এরপর এনজিও সংস্থা আশ্রয় ৪ প্লাস শিশুর শিক্ষকতা করেন। এরই মধ্যে সার্বিক কল্যাণে সমাজের ক্ষেত্রে নারী নেত্রী হিসেবে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট এর বাংলাদেশ নারীনেত্রী প্রশিক্ষণে চারদিন ব্যাপী জয়পুরহাটে টিএমএসএস তে ১৫০তম ব্যাচে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি তার জীবনের মিল খুঁজে পান। এই প্রশিক্ষণের সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে মিশার সুযোগ হয় মানুষকে চেনা এবং তাদের সাথে কেমন আচরণ করতে হবে তা খুব ভালোভাবে আয়ত্ব করেন নিয়তি রানী। সামাজিক সমস্যার সমাধানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এলাকায় নারীদের সংঘটিত করে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধ এবং নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপোষের নেত্রী হিসেবে তিনি এলাকায় সুপরিচিত। এখন তিনি দ্যা হাঙ্গার প্রজেক্ট এর পুষ্টি উজ্জীবক হিসেবে সমাজ সেবায় স্বেচ্ছাসেবিকার কাজ করে চলেছেন। মানুষদের স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে থাকেন। তিনি বিভিন্ন দিবসে নিজের গ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন এলাকার তরুণ এবং বেকার যুবক যুবতীদের আয়বর্ধক কাজে যুক্ত করে সকলের কাছে নিয়তি দিদি জনপ্রিয় মানুষের পরিণত হয়েছেন।

নিয়তি রাণী মনে করেন মানুষ বাঁচে তার কর্মের মাধ্যমে, বয়স এখানে মুখ্য বিষয় নয়। অন্যের জীবনের ভরসার পাত্র কয়জনায় বা হতে পারে? যারা সমাজে মানুষের বিপদে- আপদে পাশে দাঁড়ায়, কাজ করে তারাই প্রকৃত মানুষ।

(৩) সফল জননী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা প্রতিমা রানীঃ পত্নীতলা উপজেলার পত্নীতলা ইউনিয়নের বোরাম গ্রামের শ্রী সন্তোষ চন্দ্র দাসের স্ত্রী প্রতিমা রানী। বাবা হরেন্দ্র নাথ মন্ডল ও মাতা কাদম্বীনি মন্ডলের ৪ সন্তানের মধ্যে প্রতিমা রানী তৃতীয় সন্তান। বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈন্যতায়। তিনবেলা তাদের খাবার জুটতোনা। লেখাপড়া তো দূরের কথা। স্কুলের গন্ডি পেরুনো ভাগ্যে জোটেনি। দৈন্যতার কারণে একেবারেই অল্প বয়সে বিয়ে হয় তার। শ্বশুর-শ্বাশুড়ির অস্বাভাবিক নির্যাতন আর সংসারে অভাব অনটনের মধ্যে সদ্য বিয়ের ১ বছরেই মাথায় জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান। এভাবে সুখে দুঃখে খরকুটু দিয়ে সংসার গড়তে গড়তেই ঠিক ৩ বছর পর তাদের আরও একটি পুত্র সন্তানের জন্য হয়। দুই ছেলে ও শ্বশুর-শ্বাশুড়ি নিয়ে কোন রকমে দিন কাটতো তারই মধ্যে তাদের সংসার আলো করে আসে একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তান। হাটি হাটি পা পা করে সংসার এগুতেই শুরু হয় সন্তানদের লেখাপড়ার খরচের চাপ।

অভাবের সংসার চালাতে অর্থের প্রয়োজন পড়লে তিনি পড়ে যান অর্থনৈতিক দৈনদশার মধ্যে। পাশের গ্রাম কাঁটাবাড়ীর এক বাবুর নিকট থেকে কিছু জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ শুরু করেন। পাশাপাশি কিছু গরু-ছাগল, হাঁস, মুরগি ইত্যাদি নানা ধরনের উৎস থেকে ইনকাম দিয়ে কোন রকমে সংসার ও ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালাতে থাকেন। আস্তেই সন্তানরা উঁচু ক্লাসে উঠে আর লেখাপড়ার খরচও বেশি হতে থাকে। এদিকে সন্তানেরা ক্লাস ফাইভে ও এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। তাদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। এস.এস.সিতে লেটার মার্ক নিয়ে ফাস্ট ডিভিশনে ফাস্ট হয়। এইদিকে অভাবের সংসার প্রতিবেশি লোকজনদের তিরস্কার, সামাজিক কুসংস্কার, লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সবকিছু উপেক্ষা করে নিজের শেষটুকু দিয়ে প্রচেষ্টায় সন্তানদের মেধা ও হার না মানা পরিশ্রমের ফলে আজ তিনি সত্যিকারের একজন স্বশিক্ষিত মা হিসেবে সমাজে পরিচিত এবং প্রতিষ্ঠিত।

প্রতিমা রানী'র বড় ছেলে স্বপন কুমার দাস এখন সিনিয়র অফিসার জনতা ব্যাংক লিমিটেড, ছোট ছেলে অনুপ কুমার দাস সিভিল ইঞ্জিনিয়ার সিনিয়র ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার, নাভানা রিয়েল স্টেট লিমিটেড, আর মেয়ে কৃষ্ণাশ্রী দাস সহকারী শিক্ষিকা কাঁটাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সন্তানদের জীবনে ভরসার পাত্র কয়জন মা'ই বা হতে পারে। যারা সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারে। কিন্তু প্রতিমা রানী একজন মহীয়সী মা হিসেবে সন্তানদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন।

(৪) নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন জীবন শুরু ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা মান্টি রানী দাসঃ পত্নীতলা উপজেলায় নজিপুর পৌরসভা মামুদপুর গ্রামের অসিম কুমার দাস এর মেয়ে মান্টি রানী দাস। বাবা মার প্রথম সন্তান হওয়ায় মান্টি রানী কৈশর কেটেছিল হেঁসে খেলেই। কিন্তু এই আনন্দ বেশি দিন স্থায়ী হয়না। বাবা অসুস্থ হওয়ায় সংসারে অভাবের কারণে ২০০৮ সালে তাকে বাধ্য হতে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে গিয়ে বেশি দিন ভালো থাকা হয়নি তার। নিজের জীবন এবং সংসার সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না তার। একে তো বাল্যকালে বিয়ে আবার অকালে সন্তান ধারণ। শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীর এবং স্বামীর কটু কথা এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়। বাচ্চা হওয়ার দীর্ঘ ৯ মাস পরে মান্টির স্বামী মান্টিকে নিতে আসে এবং মান্টিকে নিয়ে যায় শ্বশুড় বাড়ীতে। আবারো তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। এক পর্যায়ে মান্টির শশুর বাড়ির লোকেরা মান্টি ও তার না-বালক সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। মান্টির বাবা- মা বাধ্য হয়ে মান্টিকে নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে ২০২১ সালে তার সংসার জীবনের ইতি ঘটে।

এরপর মান্টি সেলাই মেশিন পরিচালনার কাজ শেখে। বাবার অভাবী সংসার থেকেই কষ্ট করে একটি সেলাই মেশিন ক্রয় করে পোশাক তৈরির কাজ শুরু করে। সেলাই মেশিনের ক্ষুদ্র আয় থেকে একটি গরু ক্রয় করে। গরু বড় হলে তা বিক্রয় করে একটি ছোট সিট-কাপরের দোকান দেয়। পাশাপাশি মান্টি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এসএসসি পাশ করে। কারিগরি কলেজ হতে এইচএসসি পাশ করে। স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর মান্টি তার যোগত্যা দিয়ে প্রথমত একটি সোলার কোম্পানীতে চাকুরী, দ্বিতীয়ত- বেডো এনজিওতে মাঠকর্মী পদে, তৃতীয়ত-ব্রাক প্রতিষ্ঠানে হেলথ্ স্বাস্থ্য কর্মী পদে চাকুরি করে, চতুর্থ পর্যায়ে- পত্নীতলা উপজেলায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় ভিজিডি প্রকল্পতে ট্রেনার পদে কাজ করে, পঞ্চম ধাপে 'কিশোর- কিশোরী' প্রকল্পে আবৃতি শিক্ষক পদে চাকুরী করে ও চলমান। ষষ্ঠ ধাপে আদমশুমারি ও গৃহগণনা কাজে নিয়োজিত ও একইসঙ্গে মান্টি বাড়িতেই পার্লারের কাজ করে।

সামাজের কিছু কুসংস্কার মানুষ তাকে বিভিন্নভাবে অপবাদ দেয়। তাকে হেও করা চেষ্টা করে। তবুও সমাজের অন্য মেয়েদের অনুপ্রেরনা হয়ে আছে মান্টি। যা অন্যান্য মেয়েদের সামনে চলার উৎসাহ প্রদান করে। মান্টি বলেন স্বপ্ন দেখব জেগে থেকে। অন্যকেও দেখাতে উৎসাহিত করব এমন স্বপ্নই বাস্তবায়ন করতে চাই।

(৫) সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছে যে নারী ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সামিমা নাছরিনঃ পত্নীতলা উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষনপুর গ্রামের সামিমা নাছরিন মতিউর রহমান ও নুরজাহান বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। যার বাল্যকাল কেটেছে চরম আর্থিক দৈন্যতায়। আর্থিক অবস্থা ভাল না হলেও মায়ের প্রচেষ্টায় নিজেকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করে তুলেন। 

শামীমা শংকরপুর দাখিল মাদ্রাসায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৯৯৫ সালে দাখিল পাস করেন। কিন্তু অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও সামাজিক চাপে বাধ্য হয়ে শামীমার মা তার বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক একই গ্রামের মামুনুর রশিদের সাথে ২০০৫ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। সংসার জীবনে প্রায় শশুর শাশুড়ির নানা কথা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়। যৌতুক হিসেবে টাকা-পয়সা দিতে না পারাই স্বাশুড়ির নির্যাতন এবং অনাহার সহ্য করতে হতো যা দেখে প্রতিবেশীরা খাবার এনে দিয়েছেন। 

অভাবের সংসার সাজাতে অর্থের প্রয়োজনে তিনি ব্রাক প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। স্কুলের শিক্ষকতার সময় ননদের নির্যাতনে বাবার বাড়িতে এসে দক্ষিণ লক্ষনপুর গ্রামের গ্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকতা শুরু করেন। এরই মধ্যে সার্বিক সাক্ষরতার আন্দোলন আনসার ভিডিপি গ্রাম উন্নয়ন দলের সভানেত্রী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। এর মধ্যে প্রথম সন্তান জন্মগ্রহণ করে। দৈন্যতা দূরীভূত হতে থাকলে স্বামীও শামীমকে গুরুত্ব দিতে থাকেন। এরপর পত্নীতলা উপজেলা আশা ব্যাংক প্রজেক্ট মাঠকর্মী হিসেবে আকবরপুর ইউনিয়নের কার্যক্রম শুরু করেন সামাজিক সমস্যার সমাধানে সহায়তার মধ্য দিয়ে এলাকার গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হিসেবে পরিচিতি হয়ে ওঠেন শামিমা। এছাড়াও বসতবাড়িতে সবজি চাষ, কম্পোস্ট তৈরি জৈব সার প্রস্তুত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তা বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে জড়িয়ে পড়েন শামীমা।

সামাজিক কাজের অংশগ্রহণ এর সুবাদে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে নানা শ্রেণী পেশা মানুষের সাথে মিশা সুযোগ হয়। যখনই তিনি বাড়িতে আসেন গ্রামের মানুষ অভাব অভিযোগ তাকে ব্যতীত করে তোলে। 

২০১৪ সালে গণ গবেষণা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ৩০ জন নারীকে নিয়ে সামিমা গড়ে তোলেন মুষ্টির চাল সমিতি। তিনি এখন এই সমতির সভাপতি এলাকার কেউ অসুস্থ হয়েছে শুনলে নিজে গিয়ে তাকে ডাক্তার দেখান। কিংবা হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। জমি সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা মীমাংসা, অসহায় পরিবারকে আইন সহায়তা, গ্রামের স্যানিটেশন ব্যবস্থা শততাগ উন্নতি করন, সকল শিশু বিদ্যালয় ভর্তি নিশ্চিত করন, গর্ভবতী ও পুষ্টি মায়ের পরিচর্যা করা, বিচার সালিশে মেয়েদের মতামতের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করার মতো কাজ গুলো তিনি করে থাকেন।২০১৮ সালে ইউনিয়ন পরিষদের গণ গবেষণা ফোরাম নির্বাচিত হলে তিনি সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের নারী নেত্রী হিসেবে ইউনিয়ন কমিটির কেশিয়ার ও জেলা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। উপজেলা প্রতিবন্ধী কমিটির সদস্যও তিনি। এতাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।

পরিবারের অন্যদের আস্থা অর্জন করে আজ সবার মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন শামীমা। পরিবারের যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে তিনি এখন প্রধান ভূমিকা পালন করেন। মানুষের আত্মশক্তিকে জাগিয়ে দিতে পারে সেই অজয়কে সহজে জয় করতে পারে শামীমা। আর কোন বাধাই তার চলার পথকে রুখতে পারেম না। পরিবর্তনশীন সমাজ সম্পর্কে শামীমার ভাবনা পরিষ্কার। তিনি সবার আগে নিজের মানসিকতা পাল্টিয়েছেন। আর সমাজ পরিবর্তনে ধনী-দরিদ্র কিংবা নারী পুরুষ আলাদা না রেখে সবাইকে মানুষ হিসেবে মূল্য দেওয়া এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে পাশাপাশি সমাজের শিক্ষিত ও জন প্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিতে হবে বলে তিনি মনে করেন। তাহলেই কেবল সমাজ পরিবর্তন করা সম্ভব।

আরও খবর



কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ৯৭জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক,গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

শুক্রবার (৩ মে) বেলা ১১টার দিকে তিনি কারাগারের প্রধান ফটক থেকে বের হন। এসময় কারা ফটকের সামনে হেফাজত ইসলামের বিপুল সখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা।

তিনি বলেন, মাওলানা মামুনুল হক কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে দীর্ঘদিন বন্দি ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৩৭টি মামলা রয়েছে। সর্বশেষ মামলায় তিনি বৃহস্পতিবার (২ মে) উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান।

সুব্রত কুমার বালা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছায়। শুক্রবার সকালে জামিনের সব কাগজপত্র নিয়ে ঢাকায় যোগাযোগ করা হয়। সেখানে কাজ শেষ হলে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের মাদরাসা থেকে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।


আরও খবর



মীরার সঙ্গে ডিনার ডেটে মেজাজ হারালেন শাহিদ

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১৯২জন দেখেছেন

Image

বিনোদন প্রতিনিধি:বিলাসবহুল রেস্তোরাঁয় স্ত্রী মীরার সঙ্গে ডিনার ডেটে গিয়েছিলেন শাহিদ কাপুর। দুজনের পরনে ছিল কালো পোশাক।

ডিনার শেষে সোমবার (২২ এপ্রিল) রাতে যখন রেস্তোরাঁ থেকে বের হলেন তারা, ছবি শিকারিরা অনেকটা ঝাঁপিয়ে পড়েন এ জুটির ওপর। হাসি মুখে ছবিও তোলেন শাহিদ-মীরা।

কিন্তু তারা গাড়ির দিকে এগিয়ে যেতেই ঘটে বিপত্তি। পিছু নিতে শুরু করেন ছবি শিকারিরা। তুলতে থাকেন একের পর এক ছবি। ব্যক্তিগত সময়ে এমন হস্তক্ষেপ মানতে পারেননি শাহিদ। রেগে বললেন, ‘আপনারা একটু থামবেন!’ উত্তেজিত হয়ে এ অভিনেতা আরও বলেন, ‘ঠিকঠাক আচরণ করুন।’

২০১৫ সালে মীরা রাজপুতকে বিয়ে করেন শাহিদ। এক বছর পরে আগস্টে কন্যা মিশার জন্ম হয়। এরপর ২০১৮ সালে ছেলে সন্তান আসে তাদের জীবনে। নাম জৈন। ‘মীরার সঙ্গে বিয়ে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ঘটনা’, দাম্পত্য জীবন নিয়ে ‘কফি উইথ করণ ৭’ শোতে বলেছিলেন শাহিদ।

শাহিদ-মীরার রসায়ন বরাবরই নজর কেড়েছে ভক্তদের। স্ত্রীর প্রতি প্রেম নিয়ে কোনো দিনই রাখঢাক করেন না এই বলিউড অভিনেতা। তার কথায়, আমার জীবনে ও অনেক কিছু নিয়ে এসেছে। আমার সবদিকে ভারসাম্য বজায় রাখে। আমার স্বাভাবিক জীবনযাপনের নেপথ্যেও মীরা। আমাদের সুন্দর সন্তানরা রয়েছে। সবকিছুর জন্যই আমি কৃতজ্ঞ মীরার কাছে।


আরও খবর



বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল শুরু

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১২৬জন দেখেছেন

Image

খবর প্রতিদিন ২৪ডেস্ক :[ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪] অন্তর্ভূক্তিমূলক থিয়েটার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী শিল্পীদের নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আজ (২৬ এপ্রিল) ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান আগামীকাল (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত চলবে। বিকেল ৩টা থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আয়োজনটি শুরু হয়। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মরণে একটি অনবদ্য থিয়েটার পারফরমেন্স ‘নৈঃশব্দ্যে ‘৭১’ পরিবেশিত হয়। এ অনুষ্ঠানে ‘অদম্য শিল্পোৎসব’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনী, সেখানে আইআইডি’র তত্ত্বাবধানে সঙ্গীত, চিত্রকলা, ভাস্কর্য সহ আরও নানান শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হয় । এছাড়াও থিয়েটার পারফরমেন্স, প্যানেল আলোচনা, ফিল্ম প্রদর্শনী ও মেলার আয়োজন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেপুটি ব্রিটিশ হাইকমিশনার ও ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ম্যাট ক্যানেল, গ্রেআই থিয়েটার কোম্পানির আর্টিস্টিক ডিরেক্টর জেনি সিলি, ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর (ইন্টেরিম) শ্যানন ওয়েস্ট, ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক নাসিরুদ্দীন ইউসুফ এবং ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিকস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইআইডি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদ আহমেদ। এছাড়া, সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান।

ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডেয়ার (ডিজেবিলিটি আর্টস: রিডিফাইনিং এমপাওয়ারমেন্ট) প্রকল্পের অংশ এই ইন্টারন্যাশনাল ডিজ্যাবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল। বাংলাদেশের শিল্পকলা খাত ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও বোঝাপড়া তৈরিই এই বহুস্তরীয় ডেয়ার প্রকল্পের লক্ষ্য। বৃহত্তর সমাজ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে ব্যবধান কমিয়ে এনে সংযোগ স্থাপন করা এই প্রকল্পের আরেকটি লক্ষ্য। ঢাকা থিয়েটার ও আইআইডির (ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিকস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) অংশীদারিত্বে ২০১৯ সালে চালু হয় প্রকল্পটি।

আয়োজনের প্রথম দিনে অতিথিদের জন্য রমেশ মেয়াপ্পানের ‘৭১ ইন সাইলেন্স’, মোস্তাফিজ শাহিন পরিচালিত ‘সার্কাস সার্কাস’, কাজী নওশাবা আহমেদের ‘ত্রিবেণী’, এশা ইউসুফ ও রফিকুল ইসলামের ‘কেন্দ্র বরাবর সুড়ঙ্গটির নাম পৃথিবী’ এবং কলকাতার জনসংস্কৃতি সেন্টার ফর থিয়েটার অফ দ্য অপ্রেসডের পরিচালক সঞ্জয় গাঙ্গুলির ‘ওয়েস্টল্যান্ড- এ জার্নি’, এই ৫টি থিয়েটার প্রযোজনা পরিবেশিত হয়। প্রথম দিন ‘ডিজেবিলিটি রিপ্রেজেন্টেশন ইন দ্য আর্ট সেক্টর’ শীর্ষক একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শিল্পকলা সহ সমাজের নানান স্তরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্বের ঘাটতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সমাপনী দিনে আরও ৫টি থিয়েটার প্রযোজনার আয়োজন করা হবে - শামীম সাগরের ‘অতঃপর করিম বাওয়ালি’,সামিউন জাহান দোলার ‘সঙ্গতি’, আল জাবিরের ‘কাজলরেখা’, ড. আমির জামানের ‘পিতৃগণ’ ও অসীম দাশের ‘স্বপ্নকাহন’। এছাড়া, ‘ব্রেকিং ব্যারিয়ার্স ফর অ্যাক্সেসিবল আর্টস’ ও ‘ফান্ডিং ইনক্লুশন ফর ডিজ্যাবিলিটি আর্টস’ এই দুইটি প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। ‘ব্রেকিং ব্যারিয়ার্স ফর অ্যাক্সেসিবল আর্টস’ প্যানেল আলোচনায় শিল্প ও সাংস্কৃতিক সুযোগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন তা চিহ্নিতকরণ ও এর সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হবে।

এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, “প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা শারীরিক এবং মানসিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার শিকার হলেও তাদের বেশিরভাগই বুদ্ধি, মননশীলতা ও সৃজনশীলতার দিক থেকে অন্যদের তুলনায় কোন অংশেই কম নয় বরং সৃজনশীলতার দিক থেকে অনেক সময়ই বেশি যদি তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেওয়া যায়। আমি ব্রিটিশ কাউন্সিল, ঢাকা থিয়েটার, আইআইডি, এবং এই অনবদ্য আয়োজনের সাথে যারা জড়িত বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সকলকে জানাই ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।”বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেপুটি ব্রিটিশ হাইকমিশনার ও ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর ম্যাট ক্যানেল বলেন, “সুবিধাবঞ্চিত এবং প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য সমতার ভিত্তিতে পূর্ণ অধিকার ও স্বাধীনতা উপভোগ ও অনুশীলনের সুযোগ তৈরি করতে যুক্তরাজ্য সারা বিশ্বে কাজ করছে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডেয়ার (ডিজেবিলিটি আর্টস: রিডিফাইনিং এমপাওয়ারমেন্ট) প্রকল্প ও এই উৎসব বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতিভা ও অর্জনকে উদযাপন করা এবং একটি আরও বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব নিশ্চিতে আমাদের প্রচেষ্টাকে দ্বিগুণ করার সুযোগ হিসেবে সামনে নিয়ে এসেছে।”

ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর (ইন্টেরিম) শ্যানন ওয়েস্ট বলেন, “ইন্টারন্যাশনাল ডিজেবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর উদ্বোধন করতে পেরে আজ আমরা অত্যন্ত গর্বিত; যা আমাদের ডেয়ার প্রকল্পের একটি চূড়ান্ত আয়োজন। ২০১৯ সাল থেকে আমাদের ডেয়ার প্রকল্পটি বাংলাদেশি থিয়েটার সংস্থাগুলো ও দেশব্যাপী ডেয়ার শিল্পীদের সক্ষমতা তৈরি, অন্তর্ভুক্তিমূলক অনুশীলন চর্চা, নীতিমালা পরিবর্তন ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যকে সংযুক্ত করার কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ডিজেবিলিটি আর্ট থিয়েটারকে মূলধারায় আনয়নে ইতিবাচকভাবে সহযোগিতা করায় সরকার ও সকল অংশীদারের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।”

ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা নাসিরুদ্দীন ইউসুফ বলেন, “২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে মূলধারার থিয়েটারের সাথে ডিজেবিলিটি আর্টকে একীভূত করার ক্ষেত্রে ঢাকা থিয়েটার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে, এজন্য আমরা অত্যন্ত গর্বিত। নানান প্রতিবন্ধকতা এবং নিত্যনতুন বাধা আসার পরেও প্রতিবন্ধী শিল্পী, প্রশিক্ষক, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ঢাকা থিয়েটারের অব্যহত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতার কারণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আনতে পেরেছি আমরা; আর এই ইন্টারন্যাশনাল ডিজেবিলিটি আর্ট ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর সফল আয়োজন তারই প্রমাণ।”

এই আয়োজন থেকে অতিথিরা অন্তর্ভূক্তিমূলক থিয়েটার সম্পর্কে বিস্তৃতভাবে বোঝার সুযোগ পান; প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিল্পের যাত্রায় তাদের অতিক্রান্ত বাধাগুলো সম্পর্কে জানার সুযোগ পান।


আরও খবর