Logo
আজঃ সোমবার ০৬ মে ২০২৪
শিরোনাম
রাফাহতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ২২ ফিলিস্তিনি নিহত আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানো কোচ মারা গেছেন ইন্দোনেশিয়া ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল টানা ৭২ ঘণ্টা ১৫০ উপজেলায় মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৭ শতাংশে নেমে আসবে: সংসদে অর্থ প্রতিমন্ত্রী জয়পুরহাটে পরকীয়ার জেরে নুরুন্নবী হত্যা মামলায় বাবা-ছেলেসহ ৫ জনের যাবজ্জীবন মধুপুরে কৃষকের মাঝে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মে‌শিন বিতরণ ‘বিশ্ব কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য দিবস ২০২৪’ পালন করলো এনার্জিপ্যাক উপজেলা নির্বাচনে সৎ যোগ্য প্রার্থীদের জনগন বেছে নেবে: সাকিব আল হাসান এমপি মাগুরায় তীব্র তাপদাহে ঝরে পড়ছে লিচুর গুটি ১শ' কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা কৃষকদের

মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার ভূষিত (উপ) পরিচালক আব্দুস সালাম

প্রকাশিত:রবিবার ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | ৯১জন দেখেছেন

Image

কলারোয়া(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি:মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার পেলেন উন্নয়ন পরিচালক (উপ) নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সালাম। মানব ও সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার-২০২৪ পদকে ভূষিত হয়েছেন। বাংলাদেশের ভারত সীমান্ত ঘেষা সাতক্ষীরার কলারোয়ার উন্নয়ন পরিষদ (উপ) নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সালাম। বৃহস্পতিবার (২২ফেব্রæয়ারি) বিকেল ৫টায় পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রিগুনা সেন হল মিলনায়তনে সার্ক কালচারাল ফোরামের উদ্যোগে ভারত-বাংলাদেশ সম্প্রীতি উৎসবে তাকে ওই পদকে ভূষিত করা হয়।

সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে ক্রেষ্ট ও সনদপত্র তুলে দেন ভারত সরকারের পশ্চিমবঙ্গের এম এল এ দেবাশিষ মূখার্জী ও বাংলাদেশের ড. মাহফুজুর রহমান, চেয়ারম্যান এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ, ভারতের সার্ক কালচারাল ফোরামের সভাপতি এটিএম মমতাজুল করিম সহ পশ্চিমবঙ্গের গুনিজন ব্যক্তিবর্গ। এদিকে সাতক্ষীরার কলারোয়ার উন্নয়ন পরিষদ (উপ) এর নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সালাম মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক শান্তি পুরস্কার পাওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন সংস্থার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।


আরও খবর



কালিয়াকৈরে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ ও শিরনী

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | ৮১জন দেখেছেন

Image

সাগর আহম্মেদ,কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:গ্রীষ্মের গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। গাছ-পালা কাটা ও বন উজার করায় বাতাসের গতিও কম। প্রচন্ড গরমে গলে যাচ্ছে সড়কের পিচও। এমন অবস্থায় এক পশলা বৃষ্টির আশায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার বিশেষ নামাজ আদায় ও শিরনী করেছেন এলাকাবাসী। তবে আরো দুদিন সালাতুল ইস্তিসকার নামাজ আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,সারা দেশের মতো গাজীপুরের কালিয়াকৈরেও বেশ কিছুদিন ধরে তাপদাহ প্রবাহিত হচ্ছে। গ্রীষ্মের গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গাছ-পালা কাটা ও বন উজার করায় বাতাসের গতিও কম।

এক ফোঁটা বৃষ্টির আশায় প্রহর গুনছেন পশুপাখিরাও। প্রচন্ড গরমে গলে যাচ্ছে উপজেলার কাঞ্চনপুর এলাকায় কালিয়াকৈর-ধামরাই সড়কের পিচ। সড়কের পিচে আটকে যাচ্ছে জুতার শোল ও পিচ লেগে যাচ্ছে গাড়ির চাকাতেও। এ উপজেলার কোথাও বৃষ্টির দেখা নেই। উল্টো প্রতিদিন তাপমাত্রা যেন বাড়ছেই। এমন অবস্থায় এক পশলা বৃষ্টির আশায় বিশেষ নামাজ আদায় করছেন বিভিন্ন জেলার মানুষ। এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মৌচাক কারল সুরিচালা এলাকায় বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন এলাকাবাসী। এছাড়াও উপজেলা ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় এ বিশেষ নামাজ আদায় শেষে দোয়া করা হয়। তাছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি চাল তোলে বৃষ্টির জন্য শিরনীও করা হচ্ছে। তবে কারুল সুরিচালা এলাকায় আরো দুদিন সালাতুল ইস্তিসকার নামাজ আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

কারুল সুরিচালা জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওঃ আলহাজ আব্দুল আওয়াল বলেন, বৃষ্টিপাত না হলে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সাহাবিদের নিয়ে খোলা ময়দানে ইস্তিসকার নামাজ আদায় করতেন। সে জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের পাপের জন্য তওবা এবং ক্ষমা চেয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টির জন্য মোনাজাত করেছি। বৃষ্টি বা পানির জন্য আল্লাহ সালাতের মাধ্যমে চাইতে বলেছেন। তাই আমরা সবাই একত্রিত হয়ে এ নামাজ আদায় করেছি। তিনি আরো বলেন, সালাতুল ইস্তিসকার নামাজ পর পর তিন দিন আদায় করতে হয়। তাই স্থানীয় মুসল্লিদের সাথে আলোচনা করে আগামী দুদিন একই স্থানে সালাতুল ইস্তিসকার নামাজ আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।


আরও খবর



নিটারিয়ানদের কেমন কেটেছে পহেলা বৈশাখ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | ১৬৯জন দেখেছেন

Image

মিঠুন দাস মিঠু, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, নিটার:বৈশাখ আর বাঙালি মিলেমিশে একাকার। তাই-তো পহেলা বৈশাখ নিয়ে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই আপামর বাঙালির। নতুন বর্ষকে বরণ করে নিতে ভোরের নতুন সূর্য ওঠার মধ্য দিয়ে ১৪৩১ বঙ্গাব্দের প্রথম প্রভাতেই নানা এলাকায় নানান ধরনের আয়োজন হয়ে থাকে।

আজ রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ। বাংলা নববর্ষ,  ১৪৩১ বঙ্গাব্দের প্রথম দিন। এ দিনটির মধ্য দিয়েই বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হলো নতুন আরেকটি বছর। এ দিনটিকে জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (নিটার) এর শিক্ষার্থীরা কিভাবে দেখছেন, কিভাবে উপভোগ করেছেন বৈশাখি উৎসব তা তুলে ধরেছেন খবর প্রতিদিনের নিটার প্রতিনিধি- মিঠুন দাস মিঠু

                                                                             ‘‘পহেলা বৈশাখ: বাঙালির এক সার্বজনীন উৎসব”
বাঙালির আদি সাংস্কৃতিক পরিচয় বহনকারী অসাম্প্রদায়িক উৎসব পহেলা বৈশাখ, যা বাংলাদেশের জাতীয় উৎসব হিসেবেও পালন করা হয়ে থাকে। পহেলা বৈশাখ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য সর্বজনীন সাংস্কৃতিক আনন্দ-উৎসব। বাংলা নববর্ষের সঙ্গে ধর্মীয় কোনো অনুষঙ্গ নেই। সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে পরিচিত পহেলা বৈশাখের এই দিনটি এই শোভাযাত্রা, মেলা, পান্তাভাত খাওয়া, হালখাতা খোলা, বর্ষবরণ করে পালন করা হয়। ষোড়শ শতাব্দীতে মুঘল যুগ থেকে শুরু হয় এই উৎসবের চল যখন সম্রাট আকবর ফসল কাটার মরশুমের উপর ভিত্তি করে ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন, যা ছিল ইসলামি ও হিন্দু ক্যালেন্ডারের সমন্বয়। বাংলা ক্যালেন্ডারের সঙ্গে আর্থিক বছর মিলিয়ে দেওয়ায় আকবরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এইদিন পরবর্তীকালে উৎসবে পরিণত হয়। বর্তমান পহেলা বৈশাখের এই দিনে আমাদের দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রায়” গ্রামীণ জীবন এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আবেদনক্রমে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে নভেম্বর বাংলাদেশের ‘‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’’ কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এইদিনে বাঙালি ব্যবসায়ী, দোকানদার বছরের সমস্ত হিসাব-নিকাশ শেষ করে নতুন হিসাবের খাতা খোলেন। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তাদের মধ্যে ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু উৎসব এইদিন পালিত হয়। গ্রামগঞ্জে বৈশাখী মেলা বসে। কৃষিজ পণ্য, কুঠির শিল্প দ্রব্য, মৃৎ ও হস্তশিল্প দ্রব্য, আসবাবপত্র ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয়ের ধুম পড়ে সেসব মেলায়। যদিও তার প্রসার এখন কমে গিয়েছে। মেলার সময় নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা, কুস্তির আসর, এমনকি মেলায় ষাঁড়ের লড়াই, মোরগের লড়াই, বলী খেলা ইত্যাদি বিনোদন ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান বসতো। তবে করোনার পরবর্তী বছর গুলোতে আয়োজিত অনুষ্ঠান গুলোয় ভাটা পড়লেও বাঙালির আনন্দ থেমে থাকেনি। সর্বজনীন এই উৎসবের এই দিনটি উদযাপন করার মাধ্যমে পুরনো বছরের সমস্ত দুঃখ গাঁথা কষ্টকে বিদায় জানিয়ে নতুনত্ব কে সাদরে গ্রহণ করে পৃথিবীর সকল প্রান্তে থাকা সকল বাঙালি।
অপরাজিতা অর্পা, ডিপার্টমেন্ট ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রথম বর্ষ)

                                                                                               ‘‘রঙ্গে ভরা বৈশাখ আবার আইলোরে”
ঋতুরাজ বসন্তের রঙের আভা যেতে না যেতেই গ্রীষ্মের শুরু। গ্রীষ্মের শুরু বলতেই মাথায় আসে পহেলা বৈশাখ। বছর ঘুরে নতুন সূর্যোদয়ে পুরোনো বছরের, পুরোনো দিনের সকল গ্লানি, সকল জড়া ধুয়ে মুছে নতুন্যত্বর বরণ। সম্রাট আকবরের সময়কাল থেকে ‘‘পহেলা বৈশাখ” উদযাপনের সূচনা। কালপরিক্রমায় যা একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের রূপ নেয়। নববর্ষের অন্যতম প্রধান রীতি ‘‘হালখাতা”। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হল বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পরে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুটির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা পুলির আয়োজন। ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়া ছাড়াও পুরনো একটি সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর মধ্যে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তি খেলা যার সবচেয়ে বড় আসরটি হয় চট্টগ্রামের লালদিঘী ময়দানে, যা ‘‘জব্বারের বলি খেলা” নামে পরিচিত। সোনারগাঁওয়ে ব্যতিক্রমী এক মেলা বসে যার নাম বউমেলা, এটি স্থানীয়ভাবে ‘‘বটতলার মেলা” নামেও পরিচিত।

রাজধানী ঢাকায় রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখে সূর্যোদয়ের পর পর এ অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের শিল্পীরা সম্মিলিত কণ্ঠে গান গেয়ে নতুন বছরের সূর্যকে আহ্বান জানান। স্থানটির পরিচিতি বটমূল হলেও প্রকৃতপক্ষে যে গাছের ছায়ায় মঞ্চ তৈরি হয় সেটি বট গাছ নয়, অশ্বত্থ গাছ। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পহেলা বৈশাখের উৎসবের মূল কেন্দ্র ‘‘ডিসি হিল পার্ক”। নগরীর অন্যান্য নিয়মিত আয়োজন শিশু প্রতিষ্ঠান ফুলকি’র তিনদিন ব্যাপী ‘‘ছোটদের বৈশাখী উৎসব” যার প্রারম্ভ হয় পহেলা বৈশাখের দুদিন আগে এবং শেষ হয় বৈশাখের প্রথম দিন সন্ধ্যায়।
অংকিতা পোদ্দার তিথি, ডিপার্টমেন্ট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রথম বর্ষ)

                                                                            ‘‘পহেলা বৈশাখ আসে আমাদের বৈচিত্র্যময় ঐতিহ্যকে নিয়ে”
সৌর পঞ্জি অনুসারে বাংলা মাস পালিত হতো অনেক প্রাচীনকাল থেকেই। সম্রাট আকবর বেশি আলোচিত হলেও, বাংলা পঞ্জির উদ্ভাবক ধরা হয় আসলে ৭ম শতকের রাজা শশাঙ্ককে।  প্রধানত কৃষকদের খাজনাপাতি দেয়ার সুবিধার্থে এই সনের প্রবর্তন করা হয়। এ কারণে এই সনের আরেক নাম ‘‘ফসলি সন”। প্রথমে আকবরের পঞ্জিকার নাম ছিল “তারিখ-এ-এলাহী”। ধারণা করা হয় যে, বাংলা বারো মাসের নামকরণ করা হয়েছে বিভিন্ন নক্ষত্র থেকে। যেমন: বিশাখা নক্ষত্র থেকে বৈশাখ, জায়ীস্থা থেকে জৈষ্ঠ্য, শার থেকে আষাঢ়, শ্রাবণী থেকে শ্রাবণ এমন করেই বাংলায় নক্ষত্রের নামে মাসের নামকরণ হয়। এইদিন আব্বু বাসায় অনেক বড় বড় মাছ আনে। আব্বুর মতে, বছরের শুরুটা ভালো খাবার দিয়ে শুরু করলে সারা বছর ভালো খাবার খাওয়া যায়। চারদিকে ‘এসো হে বৈশাখ’, ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’, ‘নোঙর ছাড়িয়া নায়ের দে রে মাঝি ভাই’ সহ বিভিন্ন গান শোনা যায়। নববর্ষের সময় মঙ্গল শোভাযাত্রা মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানায়। আমি ও আমার আম্মু লাল পাড় এর সাদা সাড়ি এবং আব্বু ও আমার ছোট ভাই পাঞ্জাবি পরে। এইদিন আমরা সকালে পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ ভাজা, হরেক রকম ভর্তা দিয়ে খাই। বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী শুভেচ্ছা বাক্য হল “শুভ নববর্ষ”। যেটা আমারা সবাই সবাইকে বলি। আগে নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এটি পুরোটাই অর্থনৈতিক এবং গ্রামে-গঞ্জে ব্যবসায়ীরা নতুন বছরের শুরুর দিনে তাদের পুরনো হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করে হিসাবের নতুন খাতা খুলেন। এই উপলক্ষ্যে তারা তাদের নতুন-পুরনো খদ্দেরদেরকে আমন্ত্রণ জানান মিষ্টি মুখ করাতে। এই আমন্ত্রণ গ্রহন করতে এসে অনেক খদ্দের তাদের পুরনো দেনার পুরোটা বা কিছু অংশ শোধ করে নতুন খাতায় হিসাব হালনাগাদ করে। আমরা পুরো পরিবার বিকেলে মেলাতে যাই মেলাতে বিভিন্ন ধরনের দোকান বসে, তার মধ্যে হাতের নাকশা করার দোকান আমার সবচেয়ে প্রিয়। আমি সেখানে সবসময় হাতে নকশা করাই। তাছাড়াও সেখানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঐতিহ্যবাহী খাবার পাওয়া যায় যেমন মুড়ি-মুরকি, খাজা-গজা, চিনির তৈরি হাতি, ঘোড়া, মাছ, পাখি আকৃতির নানা রকম মিষ্টি, হরেক রকমের পিঠা। মেলায় মুল আকর্ষন থাকে নাগরদোলা। যেটায় প্রতিবার আমি উঠি। মেলায় রং বেরঙের খেলনা পাওয়া যায়। খেলনা গুলো এতো সুন্দর যে যেটা দেখি সেটাই কিনতে ইচ্ছা করে। মেলায় আঞ্চলিক ও লোকগানের আসর, যাএাপাল, পুতুল নাচ। বাঁশিবিক্রেতা বাঁশি বাজিয়ে মুখর করে তোলে মেলা প্রাঙ্গণ। এছাড়াও গান, নাচ, আবৃত্তি, নাটক সহ সংস্কৃতিক আনুষ্ঠান হয়ে থাকে। বিকালে বিভিন্ন ধরনের খেলার ব্যবস্থা করা হয়। খেলা গুলোর মধ্যে নৌকাবাইচ, গরু-মোষের লড়াই, কাবাডি, মোরগ লড়াই থাকে। এভাবেই আমি পহেলা বৈশাখ উদযাপন করি। প্রায় সময় আমরা ভুলে যাই আমরা বাঙালি, আর আমাদের সংস্কৃতির কথা। তাই প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ এসে আমাদের ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয় ।
আফরোজা আলম তানি, ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রথম বর্ষ)

                                                                                                      ‘‘এসো হে বৈশাখ : ১৪৩১ বঙ্গাব্দ”
পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির সর্বজনীন একটি উৎসব। এই উৎসবে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল বাঙালি অংশ নিয়ে থাকে। এই উৎসবের সময় দেশ নতুন করে সাজে, দোকানপাট থেকে শুরু করে বাসা বাড়ি রঙিন করে সাজানো হয় নতুন বছর বরণ করার জন্য। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রা কে ইউনেস্কো ২০১৬ সালে ‘‘মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য” হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। এছাড়াও, প্রতি বছর রমনা বটমূলে ঘটা করে মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে । সেখানে মাটির পুতুল, শাড়ি ও বিভিন্ন দেশীয় ঐতিহ্যবাহী খাবার বিক্রি করা হয়। সবার কামনা থাকে, নতুন বছরটি যেন সুখময় ও শান্তির হয়। পহেলা বৈশাখের আয়োজন গুলোর মধ্যে অন্যতম ‘‘হালখাতা”। এদিনে গ্রাহকেরা দোকানিদের বাকি টাকা মিটিয়ে থাকে। তবে বর্তমানে বাংলা নববর্ষের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হল বৈশাখী মেলা। বিভিন্ন অঞ্চলে বৈশাখী মেলা আয়োজন করা হয়, গ্রামে গ্রামে আয়োজন করা হয় কবিগান, কীর্তন, গম্ভীরা গান, পুতুল-নাচের।
মো: লতিফুর রহমান লিহাদ, ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রথম বর্ষ)


আরও খবর



মাগুরায় বিনামূল্যে সার বীজ বিতরণ

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | ১৫০জন দেখেছেন

Image
স্টাফ রিপোর্টার মাগুরা থেকে:মাগুরা সদর উপজেলা কমপ্লেক্স চত্ত্বরে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খরিপ-০১/২০২৪-২৫ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় সদর উপজেলায় বিনামূল্যে উফশী রোপা আউশ ধানের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরার জেলা প্রশাসক,  মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ। মাগুরা সদর  উপজেলা নির্বাহী অফিসার  মো: মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে করেণ।  অনুষ্ঠানে কারিগরি আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  ড. মো: ইয়াছিন আলী, উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মাগুরা। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মাগুরা এর আয়োজনে উক্ত অনুষ্ঠানে ২৫০ জন কৃষকের মাঝে এ কৃষি প্রণোদনার সার ও বীজ বিতরণ করা হয়। উপজেলায় ১৯০০ সহ  মাগুরা জেলায় মোট ৬০০০  জন কৃষকের মাঝে ধাপে ধাপে প্রণোদনার এ সামগ্রী বিতরণ করা হবে। বীজ ও সার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি বলেন যে, উন্নত জাতের ফসল ফলাতে প্রয়োজন উন্নত জাতের সার ও বীজ যা মাগুরা জেলায় নিয়মিত বিরতিতে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। উক্ত সার ও বীজের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের সর্বোচ্চ উৎপাদন নিশ্চিত করতে কৃষকদের প্রতি আহবান জানান তিনি। প্রচলিত ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি উন্নত জাতের সুপারক্রপ চিয়া সিড, কালিজিরা প্রভৃতি উৎপাদনে কর্ষকদের এগিয়ে আসার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। আগামীতে মাগুরা জেলার কৃষিক্ষেত্রে সমৃদ্ধি আনয়নে জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে মর্মে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জেলা প্রশাসক।

আরও খবর



ছাত‌কে অনু‌মো‌দিত ছাড়াই ১৩‌টি গাছ কর্তন,শি‌ক্ষিকা হ‌য়ে আইন মানচ্ছেন না!

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | ২৫জন দেখেছেন

Image

র‌নি,ছাতক সুনামগঞ্জ প্রতি‌নি‌ধি:দেশব্যাপী খরতাপ, পরিবেশের রুক্ষতা নিয়ে হৈ—চৈ’এর মধ্যেই সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপ‌জেলার দ‌ক্ষিন খুরমা ইউপির ম‌নিঞ্জা‌তি সরকা‌রি প্রাথমিক বিদ‌্যাল‌য়ের প্রধান শি‌ক্ষিকা পূরবী চৌধুরী ও পরিচালনা কমিটির দুই সদস্যের সহায়তায় কতৃপ‌ক্ষের অনু‌মো‌দিত ছাড়াই নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাআঙ্গুল দে‌খি‌য়ে ১৩টি ছায়াবৃক্ষের গাছ কর্তন ক‌রে প্রায় ২ লাখ টাকার বি‌নিময় বি‌ত্রিু করেছেন। এ ঘটনায় ‌জেলাজু‌ড়েই ব‌্যাপক তোলপাড় সৃ‌ষ্টি হ‌য়ে‌ছে।

এলাকার ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমিরা এই অবিচার সাইতে না পেরে বিচারের জন্য বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে ধরণা দিচ্ছেন তারা। গত ১ মে  সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রাথ‌মিক শিক্ষা কর্মকতার বরাব‌রে গ্রামবাসী লিখিত এক‌টি অ‌ভি‌যোগ দা‌য়ের ক‌রা হ‌য়ে‌ছে।

গ্রামবাসীর অ‌ভি‌যো‌গে বলা হয়, প্রায় তিন যুগ ধ‌রে গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্কুলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গ্রামবাসীর যত্নে কিছু ছায়াবৃক্ষ বড় হয় । বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই বৃক্ষের ছায়ায় পাঠ নিচ্ছে বহুদিন ধরে।

গত ৩ মাচ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির দুই সদস্যের সহায়তায় কতৃর্পক্ষ বা গ্রামের সঙ্গে কথা না বলেই এ বৃক্ষ গু‌লো কেটে বিক্রয় করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই লাখ টাকা বলে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে এসব তথ‌্য নি‌শ্চিত ক‌রেন ।

গ্রামের শিক্ষার্থী অভিভাবক প্রাক্তন শিক্ষক আব্দুল আলী জানান, গাছগুলো কাটায় আমরা মর্মাহত হয়েছি। গাছগুলো আমার হাতে লাগানো, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ গাছ কর্তন করে না। কিন্তু আমাদের গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন মর্মান্তিক কাজ ক‌রে‌ছে প্রধান শি‌ক্ষিকা পূরবী চৌধুরী ।

গ্রামের প্রাক্তন মেম্বার মফজ্জুল ইসলাম ও আব্দুর রশিদ জানান, বৃক্ষ কর্তনে কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। আমরা জেনেছি বন বিভাগের অনুমতি, মতামত কিংবা তাদেরকে দিয়ে মূল্য নির্ধারণ করাও হয়নি।এই অনিয়মের বিচার চেয়ে বিভিন্ন স্থানে ধরণা দিলেও কেউ আমাদের ফরিয়াদ আমলে নিচ্ছেন না কেউ—ই।

এব‌্যাপা‌রে প্রধান শিক্ষিকা পূরবী চৌধুরী জানান, উপ‌জেলার নিবাহী কর্মকতার অনু‌মো‌দিত নি‌য়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মাধ‌্যমে এই গাছগু‌লো কর্তন করা হয়ে‌ছে । 

এব‌্যাপাার ইউপি সদস‌্য সুমন মিয়া জানান,ইউএনও অনু‌মো‌দিত নি‌য়ে বিদ‌্যাল‌য়ের নানা জা‌তের গাছ গু‌লো কে‌টে‌ছেন শি‌ক্ষিকা।

এব‌্যাপারে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্না জানান,ছাতকে বন বিট কর্মকর্তাকে জানানোর পর বিট কর্মকর্তা সরেজমিনে গিয়ে মতামত ও মূল্য নির্ধারণ করে জেলা কমিটিতে পাঠিয়েছেন। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

এব‌্যাপারে জেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন আহমদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ছাতক বন বিট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানালেন, তিনি বা ছাতক বন বিটের কর্মকর্তা এই বিষয়ে কিছুই জানেন না। তারা মতামতও দেয়নি। মূল্যও নির্ধারণ করেননি। এব‌্যাপা‌রে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস জানান,,অভিযোগ আমিও পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এব‌্যাপা‌রে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, এই বিষয়টি নিয়ে তিনি ছাতকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবেন।


আরও খবর



রেলওয়ের জমি,কোয়ার্টার ওপানির পাম্প দখল অব্যাহত,রেলকর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | ৫০জন দেখেছেন

Image

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:সৈয়দপুরে রেলওয়ের জমি, কোয়ার্টার ও পনির পাম্প রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের কারণে রেলওয়ের কোয়ার্টার ও ভবনসংলগ্ন জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলছেই। একই সাথে পানির পাম্প ও দখল করে সেখানে স্হাপনা নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।  এই দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী রেলওয়ে জমিতে স্থাপনাকারীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ নিয়ে থাকেন বলে দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েও মিলছে না কোনো প্রতিকার। এতে সৈয়দপুর রেলবিভাগ হারাচ্ছে পুরোনো দিনের ঐতিহ্য। যার ফলে প্রায় প্রকাশ্যেই চলছে কোয়ার্টারসহ কোয়ার্টার ভেঙে ঘরবাড়ি নির্মাণ,ভবনসংলগ্ন জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ ও পানির পাম্প দখল। গত ৫০ বছরে সৈয়দপুর রেল বিভাগ দখল হারিয়েছে প্রায় সারে ৪ শত একর সম্পত্তি ও ১২৩৮কোয়ার্টার।

পার্বতীপুর ৭ নং রেলওয়ের কাছারি ফিল্ড কানুনগো সাজ্জাদ হোসেন দখলের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তৎকালীন রেল কর্তৃপক্ষ এ শহরে রেলকে ঢেলে সাজাতে প্রায় ৮৫০ একর ভূসম্পত্তি অ্যাকুয়ার করে নেন। ১৮৭০ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত রেলওয়ের এসব অ্যাকুয়ারকৃত জমি সুরক্ষিত ছিল। এরপর থেকে শুরু হয় রেলওয়ের জমি দখল বিক্রয়। যেসব জমি বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে খতিয়ান ভুক্ত বা দখল হয়েছে,সেগুলির রেকর্ড সংশোধনী মামলা ও দখলদার উচ্ছেদের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। 

রেলওয়ে কারিগরি পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান জানান,  সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কজন কর্মকর্তার ঢিলামি ও সেলামী নেয়ার কারণে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় সারে ৪ শত একর জমি ও প্রায় ১২৩৮ কোয়ার্টার বেদখলে চলে যায়। দখলবাজরা ওই কজন রেল কর্মকর্তা রেলের জমি দখল বিক্রয় কারিদের সেলামি নিয়ে লাখ লাখ টাকার মালিক হলেও রেল বিভাগ দখল হারিয়েছে ৪২৭ একর সম্পত্তি ।

শহরের মুন্সিপাড়ার ইসলামিয়া স্কুল সংলগ্ন তন্ময় নামের এক ব্যাক্তি বলেন,ওই এলাকার ফটিক নামের এক ব্যক্তি রেলওয়ের কোয়ার্টার ভেঙে ও পতিত জমিতে একাধিক স্থাপনা নির্মাণ করেছেন এবং তার ছত্র ছায়ায় আশপাশ এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা নির্মাণ হয়েছে। এসব বিষয়ে অভিযোগ দিয়েও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পকেট ভারী হওয়ায় প্রতিকার বা লাভবান হয়নি অভিযোগকারীসহ রেল বিভাগ। 

জানতে চাইলে ফটিক নামের ব্যাক্তিটি বলেন,মুন্সিপাড়ার কেউই কোয়ার্টার ভেংগে ঘরবাড়ি বানাতে রেলওয়ের লাইসেন্স বা অনুমতি নেয়নি। সবাই যেভাবে ঘরবাড়ি বানাচ্ছেন,আমিও সেভাবেই নির্মান করছি।

 এ ছাড়া শহরের রেললাইনের দুপাশ, ড্র্রেনসংলগ্ন এলাকা ও অফিসার্স কলোনি, রসুলপুর হাওয়াদ পাড়াও গার্ডপাড়া এলাকায় রেলওয়ের জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলছেই। একই সাথে বানিজ্যিক বরাদ্দের কাগজ দেখিয়ে পানির পাম্প দখল করে সেখানে নির্মান হচ্ছে পাকা দোকানপাট। 

স্থানীয়রা বলেন , সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের আঙুল ফুলে কলাগাছ হলেও রেল বিভাগ যেমন লোকসান ভুগছেন তেমনি অভিযোগকারীরা দখলদারদের হাতে লাঞ্ছিত হচ্ছেন। তারা বলেন, বাস্তুহারার নামে সৈয়দপুরের কোটি কোটি টাকার মালিকরাও রেলের জমি দখল করে বহুতল ভবন ও মার্কেট নির্মাণ করেছেন। বাস্তুহারাদের বাদ দিয়ে রেলওয়ের ঐতিহ্য রক্ষায় দখল হওয়া সব জমি উদ্ধার করে অপ্রয়োজনীয় সব জমি বিক্রি করা হলে সে টাকা দিয়ে পদ্মা সেতুর মতো সেতু নির্মাণের অর্ধেক অর্থ জোগান দেওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তারা।

শহরের মিস্ত্রি পাড়া মোড়ের বাবু নামের এক ব্যাক্তি বলেন, সেখানকার পানির পাম্প সংলগ্ন কিছু জমি বরাদ্দের জন্য শহীদ সন্তান শেখ জামিল ও নিয়াজ আহমেদ বাবলু পাকশি রেলবিভাগে আবেদন করেন। কিন্ত সেখানে পানির পাম্প বরাদ্দ দেয়া হয় না বলে জানানো হয়। এর পরপরই ঈদের আগে রমজান মাসে সরকারি বেসরকারি সব অফিস আদালত বন্ধ হয়ে যায়। ছুটি শেষে অফিস খোলার আগেই বাবলু নামের ওই যুবদল নেতা বানিজ্যিক বরাদ্দের কাগজ দেখিয়ে পানির পাম্পটি দখল নিয়ে স্হাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করে দেন। তিনি আরো বলেন,শেখ জামিল হলেন শহীদ সন্তান। কিন্তু এরপরেও তাঁকে বরাদ্দ না দেয়ায় অভিযোগ দেয়া হয় স্হানীয় উপসহকারী প্রকৌশলীর দপ্তরে। কিন্তু ওই দপ্তরের উপসহকারী আবাসিক প্রকৌশলী সরিফুল ইসলাম  ঘটনাস্থল প্রদর্শন করার পরও কার্যকর কোন পদক্ষেপই নেননি। একজন যুবদল নেতা কিভাবে রেলওয়ের পানির পাম্প ও জমি বরাদ্দ পায়, এবং তার বিরুদ্ধে কিসের স্বার্থে ব্যবস্হা নেয়া হচ্ছে না সেটি ভাবার বিষয়। বিষয় টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেয়ার জোড় দাবী জানান তিনি। 

বিষয়টি নিয়ে সৈয়দপুর রেলওেয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল যাই, সেখানে নিয়াজ আহমেদ প্রথমে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে রাজস্ব প্রদানের কাগজ দেখান, এটাকেই তিনি লাইসেন্স মনে করেন। পরে তার বরাদ্দের কাগজ চাইলে  স্হাপনা নির্মাণের একটি বানিজ্যিক লাইসেন্স প্রদর্শন করেন। তিনি আরো বলেন, যেহেতু জায়গাটি রেলওেয়ের এবং সেখানে পানির পাম্প বিদ্যমান,সেহেতু যদি লাইসেন্স দেয়া হয়, তাহলে সেটি বাতিল করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ষ্টেট বিভাগ পাকশির বিভাগীয় প্রধানের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত লাইসেন্স বাতিল করে পাম্প টি রেলওয়ের নিজ দখলে নিতে পারবো না, ততক্ষণ পর্যন্ত ক্ষান্ত হবেন না।  একই সাথে বেদখল হয়ে যাওয়া ভুসম্পত্তি দখলে নেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। 


আরও খবর