Logo
আজঃ বুধবার ০৭ জুন ২০২৩
শিরোনাম
১১ জেলায় ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস আল ইত্তিহাদে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করলেন বেনজেমা সিলেটে ট্রাক-পিকআপ ভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১৩ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করবে এমন সংকট বাংলাদেশে হয়নি: ওবায়দুল কাদের তীব্র তাপপ্রবাহে এবার ইবতেদায়ি স্তরের ক্লাস বন্ধ ঘোষণা বাংলাদেশ-ভারত সেনাবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ রূপগঞ্জের ইছাপুরা ব্রীজ-দুর্গামন্দির সড়ক নির্মাণ কাজের উদ্বোধন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ইউপি সদস্য সহ চারজনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় সাবেক মেম্বার সেলিম গ্রেফতার বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের সূচি জানাল বিসিবি

গুরু রবিদাসজী’র ৬৪৬ তম জন্মজয়ন্তীর ডাক : জাতপাত নিপাত যাক

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ ফেব্রুয়ারী 2০২3 | হালনাগাদ:বুধবার ০৭ জুন ২০২৩ | ১৩৯জন দেখেছেন

Image

লেখক : শিপন রবিদাস প্রাণকৃষ্ণ: ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ গুরু রবিদাসজী’র ৬৪৬ তম জন্মজয়ন্তী। ভক্তিবাদী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা, জাতপাতের বিরুদ্ধে আজন্ম সংগ্রামী, সন্ত শিরোমণি রবিদাসজী। স্বতন্ত্র ভাষা, সংস্কৃতি, প্রথা, বিশ্বাস ও বর্ণমালায় সমৃদ্ধ রবিদাস জনগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান ও পরম পূজনীয় উৎসব হলো মাঘী পূর্নিমা বা গুরু রবিদাসজী’র জন্মজয়ন্তী। বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত রবিদাসীয়দের নিকট এই তিথিটি অত্যন্ত আনন্দের, শ্রদ্ধার আর ভক্তির সাথে পালনের। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় রবিদাসীয়গণ গুরুগাদী পূজা, রাতভর ভজন কীর্তন, আলোচনা সহ বিভিন্ন আয়োজনে পালন করে থাকেন এই উৎসবটি। উত্তর ভারতের বারানসীর অন্তর্গত কাশীর নিকটবর্তী শ্রী গোবর্দ্ধনপুর গ্রামে ১৩৭৭ খ্রিস্টাব্দের (মাঘ সুদী ১৫ বিক্রম সংবত ১৪৩৩) মাঘ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে রবিবার দিন এক চর্মপাদুকা নির্মানকারী পরিবারে জন্মগ্রহন করেন এই পরম সমাজ সংস্কারক। তৎকালে কাশী ছিল রাজা নগর মহলের রাজ্যভুক্ত। সন্ত রবিদাসজী (স্থানভেদে ভক্ত রুহিদাস, রাইদাস ও রাভিদাস নামেও পরিচিত) এর পিতা সন্তোখ দাস ছিলেন চর্মপাদুকা নির্মানকারী গোত্রের দলপিতা। মাতা শ্রীমতি কালসী দেবী, যিনি পরলোকগমন করেন যখন রবিদাসজীর বয়স মাত্র ৫ বছর। গুরুজীর পিতামহ কালুরাম, পিতামহী শ্রীমতি লাখপতি দেবী, স্ত্রী লোনা দেবী ও একমাত্র পুত্রের নাম বিজয় রবিদাস।


সন্ত রবিদাসজী হচ্ছেন ভারতবর্ষের “মধ্যযুগের ভাববিপ্লব” এর একজন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। তিনি “তথাকথিত নিম্ন বর্ণে” জন্মগ্রহন করেছিলেন কিন্তু জ্ঞানে ও প্রজ্ঞায় ছাপিয়ে গিয়েছিলেন উচ্চবর্ণের লোকদের। তিনি সকল প্রকার বর্ণবাদ, জাতিভেদ প্রথা, ধর্মীয় গোঁড়ামী (ভেদাভেদ) ও উগ্রপন্থার বিরোধী ছিলেন এবং সারাজীবন লড়াই করেছেন এগুলোর বিরুদ্ধে। তিনি সবার মাঝে প্রচার করতেন সাম্য, প্রেম ও সম্প্রীতির বাণী। গুরুজীর আধ্যাত্মিক শক্তির প্রকাশ হয় তাঁর জন্মের ক্ষণ থেকেই। তাঁর বৃদ্ধা ও ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন ধাত্রীমাতা নবজাতক রবিদাসজীর দিকে তাকানো মাত্রই দৃষ্টিশক্তি ফিরে পান এবং উনার ভাষ্যমতে এই শিশুটি ছিল অন্যান্য শিশুর চেয়ে আলাদা রকমের। বাল্যকালে রবিদাসজীর পিসিমা তাঁর জন্য একটি চামড়ার খরগোশ নিয়ে এসেছিলেন। গুরুজীর  চরণস্পর্শে এটি প্রান ফিরে পায় এবং বালক রবিদাসজীর সাথে দৌড়াতে আরম্ভ করে। এমন অলৌকিক ঘটনায় আশ্চর্যান্বিত হয়ে সকলে মিলে বালক রবিদাসজীর চরণপদ্মে প্রণিপাত করেন। এছাড়াও তাঁর আধ্যাত্মিকতার প্রমাণ মেলে ষাটোর্ধ বয়সী অন্ধ অথচ চরকায় সুতা কাটা অবস্থায় কর্মবতী (রবিদাসজীর পিতামহী লাখপতির বান্ধবী) এর চোখস্পর্শপূর্বক দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। পন্ডিত সারদানন্দের বাড়িতে নির্মিত পাঠশালায় হাতেখড়ি নিতে গিয়ে নিজেই যখন প্রত্যেকটি অক্ষর ও বর্ণের ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন তখন শিক্ষাগুরু নিজেই আশ্চার্যান্বিত হয়ে শিষ্যকে শ্রদ্ধা করতে শুরু করলেন। একবার পন্ডিত সারদানন্দের শিশুপুত্র আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু শিশুটির সাথে মৌখিক চুক্তি অনুযায়ী লুকোচুরি খেলায় পালা অনুসারে ঐ শিশুটির বালক রবিদাসজীকে খুঁজে বের করার কথা ছিল। প্রিয়সখার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তাঁর শবপাশে বসে গুরুজী তাকে ঘুমিয়ে না থেকে চুক্তি অনুযায়ী খেলার আহ্বান জানান। তখন গুরুজীর আধ্যাত্মিক ক্ষমতাবলে তার সখা জীবিত হয়ে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করে। তথাকথিত নিচুজাতির বালক রবিদাসজীর সাথে ব্রাহ্মণবালক রামলাল খেলাধুলা করার অপরাধে প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে রামলালের পিতামাতাকে সাবধান করে দেয় স্থানীয় ব্রাহ্মণসমাজ। এতে কর্ণপাত না করায় রামলালকে ক্ষুধার্ত সিংহের খাঁচায় নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু দেখা গেল রবিদাসজী খাঁচার ভেতর বসে আছেন আর তার আধ্যাত্মিক ক্ষমতাবলে সিংহ শান্তভাব ধারণপূর্বক রামলালকে প্রণাম করলেন। এছাড়াও গুরুজীর সাথে অসৌজন্যতামূলক আচরণের ফলে জনৈক ধন্যাঢ্য শেঠজীর কুষ্ঠরোগাক্রান্ত হবার ঘটনা, চিতোরের রানী ও রাজস্থানের রাজকন্যা মীরাবাঈয়ের গুরুজীর নিকট দীক্ষাগ্রহন, রবিদাসজীর পিতার মৃতদেহ সৎকারে ব্রাহ্মণদের বাধার মুখে নাগওয়াতে সৎকারের সময় গঙ্গা নদীর আগমন, গুরুজীর অন্নদান অনুষ্ঠানে গঙ্গাদেবীর কুমারীরূপে আবির্ভাব, গুরুজীর সাথে সম্রাট বাবরের দর্শণ ও পরামর্শগ্রহন, কবীরসাহেব, শিখধর্মের প্রবর্তক গুরুনানকজী এবং আলাওয়াদী রাজা, রাজা চন্দ্র প্রতাপ, গোরক্ষনাথ, সদনা পীর, সহিত সংলাপের ঘটনায় গুরুজীর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রমাণ মেলে বহুবার।

পৌরাণিক হিন্দু শাস্ত্রানুসারে ঈশ্বরের পূজার্চনার অধিকার ছিলো কেবলমাত্র ব্রাহ্মণদের। ব্রাহ্মণের চরণধৌত জল পান করলে মানবজীবনের সর্বপাপ ধুয়ে মুছে যায়, তাদেরকে দুগ্ধবতী ধেনুদান করলে লোম সংখ্যক বর্ষ গোলকে বাস করা যায়- শাস্ত্রমতে এমনটাই বিশ্বাস প্রচলিত ছিলো সর্বত্র। এমনকি সংসারে ধনরত্ন, স্ত্রী, কন্যা সবকিছুতেই ব্রাহ্মণের অগ্রাধিকার। শুদ্র কেবলমাত্র ব্রাহ্মণের উচ্ছিষ্ঠ ভোগ করবে এবং তাদের পরিত্যক্ত কৌপিন ব্যবহার করবে, সর্বোপরি পশুর ন্যায় জীবনযাপন করে ভবলীলা সাঙ্গ করবে। এমন বিশ্বাসের বিরোধিতা করা মানেই নাস্তিকতার সামিল হিসেবে গণ্য করা হতো। এমন এক প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতিতে রবিদাসজীর মতো একজন তথাকথিত অস্পৃশ্য ও অব্রাহ্মণ ব্যক্তি ঈশ^রের ভজন-সাধন-পূজন করবে এমন বিষয় কতটা ঔদ্ধত্য, অপরাধ ও মহাপাপ হিসেবে পরিগণিত হতো তা সহজেই অনুমেয় বটে। আসলে ভক্তির ঠাকুর কখনো কোন প্রথার জালে আবদ্ধ থাকেন না, বাস করেন না কোন শাস্ত্র পুথিতে। ঈশ্বরগতপ্রাণ রবিদাসজী তৎকালীন জটিল পূজা পদ্ধতি পরিহারপূর্বক সহজসাধ্য ভজনের সূচনা করেন যা ছিলো মূলত ভক্তিকেন্দ্রীক। যার ফলস্বরূপ বর্ণবাদীদের প্রাচীর ভেঙ্গে লাখো মানুষ তার নৈকট্যলাভের আশায় আসতে থাকেন। এতে করে যে শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের বর্ণশ্রেষ্ঠতাকে আঘাত করা হচ্ছিলো তা নয়, বরং তাদের অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধনও হয়েছিল সন্দেহাতীতভাবেই। ব্রাহ্মণেরা তাঁকে পূজা অর্চনা করতে নিষেধ করেন। এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও রবিদাসজী মানবমুক্তির লড়াইয়ে স্বোচ্চার থেকেছেন। জাতপাতের বিরুদ্ধে লড়েছেন। লিখে গেছেন অসংখ্য পদ, দোহা, ভজন। যার অধিকাংশই শিখ ধর্মের প্রধান ধর্মগ্রন্থ “গুরু গ্রন্থ  সাহেব” এ লিপিবদ্ধ রয়েছে।


জগৎগুরু রবিদাস মহারাজজী কে ভক্তির শিরোমণি মেনে নিয়ে সন্ত গুরু কবীর দাস জী বলেছেন -


"সাধন মে রবিদাস সন্ত হে, সুপচ ঋষি সো মানিয়া।

হিন্দু তুরখ দুই দিন বনে হে, কছু নেহি পেহচানিয়া।।"


অর্থাৎ : সন্তদের মধ্যে মহান হলেন সন্তগুরু রবিদাস মহারাজজী, যাকে সারা বিশ্ব এক মহান সন্ত ঋষি বলে মেনে নিয়েছেন। তৎকালীন সময়ে হিন্দু-মুসলমান একই সাথে তাঁর সামনে নতমস্তক হয়ে তাঁকে গুরু রূপে স্বীকার করে নিয়েছিলেন।


"রবিদাস চামারু উসততি করে।

হরি কীরতি নিমখ ইক গায়ি।।

পতিত জাতি উতমু ভাইয়া।

চারু বরণ পএ পগি আয়ি।।"


সৎগুরু রামদাসজী বলেছেন যে- গুরু রবিদাসজী, এক ঔঁকার পরমাত্মার এমন ভক্তি, আরাধনা এবং উপমা করেছেন যে তিনি নিজেই পরমাত্মার রূপ হয়ে গিয়েছেন। তৎকালীন সমাজের তথাকথিত নীচু জাতিতে জন্ম নেওয়া সত্ত্বেও তাঁর ভক্তি ও আধ্যাত্মিকতার জন্য সমাজের চার বর্ণ যথা - ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র সকলেই তাঁর চরণে নতমস্তক হয়েছিলো।


সৎগুরু অর্জুন দেব মহারাজ তাঁর উপমা করেছেন -


''ঊঁচ তে ঊঁচ নামদেও সমদরশী।

রবিদাস ঠাকুর বাণী আঈ।।"


অর্থাৎ : উচ্চ থেকে উচ্চ সমদৃষ্টি সম্পন্ন সৎগুরু নামদেব জী হয়েছেন এবং  সৎগুরু রবিদাস জী এই সংসারে প্রভু রূপে এসেছেন।


জগৎগুরু রবিদাসজীর মানবতার প্রতি উপকার কে নিজের বাণী দ্বারা, সন্ত পীপাজী এভাবে বর্ণনা করেছেন -


"যে কলি রৈদাস কবীর না হোতে, 

লোগ বেদ অরু কলিযুগ মিলি কর

ভগতি কো রসাতল দেতে।"


অর্থাৎ : যদি সৎগুরু রবিদাস জী ও সৎগুরু কবীরদাস জী যথাসময়ে অবতারিত না হতেন, তাহলে তৎকালীন উচ্চবর্গ, বেদ আর কলিযুগীয় বিচারধারাতে ভক্তিকে পাতালে নিয়ে গিয়ে স্থান দিতেন।


জগৎগুরু রবিদাস জী তাঁর বাণীতে বলেছেন -


"মেরী জাতি কুট বালা ঢোর ঢোবন্তা

নিতহি বানারসী আস পাসা।

অব বিপ্র পরধানু তিহি করহি ডঁডউতি

তেরে নাম সরণায়ি রবিদাসু দাসা।।"


অর্থাৎ : আমার জন্ম সেই মানুষদের মধ্যে হয়েছে, যারা বানারসের কাছাকাছি প্রতিদিন মৃত পশুদের নাড়াচাড়া করে। কিন্তু আমি, প্রভূর নামের শরণ নিলাম আর আজ বিপ্রদের প্রধান লোকেরা আমাকে দন্ডবৎ হয়ে নমস্কার করে।  


গুরু রবিদাসজী’র বিখ্যাত বাণী, 

“মন চাঙ্গা, তো কঠৌতি মে গঙ্গা।”

“উংচে কুল কারণৈ ব্রাহ্মণ কোনো না হোই। জও জানোহি ব্রহ্ম-আত্মা রবিদাস কহে ব্রাহ্মণ সোই।।”

“তু হাজরা হুজুর যোগ ইক, অউর নাহি হৈং দুজা। জিসকে এক আসরা নাহি, কেয়া নামাজ, কেয়া পূজা।।”


কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও রবিদাসজীকে নিয়ে লিখেছেন “প্রেমের সোনা” কবিতা। লালন সাঁইজীর কন্ঠেও গুরু রবিদাসজী’র পংতি করবার প্রমাণ মেলে। তাতে গুরু রবিদাসজী’র মহত্ত্বেও বিশালত্ব বিষয়ে অনেকটাই ধারণা পাওয়া যায় অনায়াসেই।


মোটাদাগে বলতে গেলে বলা যায়, সারা পৃথিবীর চিরদুখী, চিরবঞ্চিত ও অবহেলিত মেহনতি মানুষের মুখপাত্র ছিলেন গুরু রবিদাসজী। তিনি আজীবন সমাজের পশ্চাদপদ অংশের সুখ-দুখের কথা বলার প্রতিনিধিত্বের দ্বায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন নিজ দ্বায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই। তৎকালীন সময়ে ভারতবর্ষের তথাকথিত অস্পৃশ্য অংশকে দীর্ঘদিনের মানবসৃষ্ট বৈষম্যজাল ভেদ করে সত্য ও সুন্দরের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য প্রণোদনা প্রদান করেন। গুরুজীর অসংখ্য অমৃত সমান বাণী পথভ্রষ্ট জাতিকে আলোর পথ দেখাতে পারে। অসাম্প্রদায়িক, শোষণমুক্ত ও জাতপাতহীন সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে রবিদাসজী’র জীবনাদর্শ অবশ্য অনুসরনীয়। গুরু রবিদাসজী’র মানবতাবাদী চেতনা ছড়িয়ে পড়ুক সবখানে। তবেই সমাজের কূপমন্ডুকতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প হতে মুক্তি মিলবে। রবির আলোয় দূরীভূত হোক সকল আঁধার। রবিদাসীয় চেতনার জয় হোক।



আরও খবর



তানোরে ৫ বছর পর রাস্তার কাজ সম্পন্ন স্বস্তিতে গ্রামবাসী

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ৯১জন দেখেছেন

Image
আব্দুস সবুর তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়ন(ইউপির) কাসারদিঘি গ্রামের রাস্তাটি দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ডাবলু বিএম করে রাখা হয়েছিল। সেই রাস্তাটি গত বুধবার ও বৃহস্পতিবারে পিচ ঢালায় সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে করে গ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক স্বস্তি বিরাজ করছে। ফলে একের পর এক গ্রামীন রাস্তা পাকা করন হচ্ছে। যার কারনে গ্রামের মানুষের জীবন যাত্রায় এসেছে আমুল পরিবর্তন।

জানা গেছে, বিগত ২০১৮ সালের দিকে উপজেলা এলজিইডি অফিসে দরপত্র আহবান করা হয়। দরপত্রে কার্যাদেশ পান এম এন জেড কনস্ট্রাকশন। যার মালিক মাহবুর রহমান। ২০১৮ সালের শেষের দিকে কার্যাদেশটি পান। ওই সময় মাটির রাস্তাটি খননের সময় বৃষ্টি ও পরে মহামারি  করোনা ভাইরাসের কারনে কাজটি বন্ধ থাকে। এরপরে রাস্তার কাজের যাবতীয় জিনিসপত্রের দাম প্রচুর হারে বেড়ে যায়। কিন্তু বরাদ্দ বাড়েনি। মুলত এজন্য ঠিকাদার কাজটি রেখে চলে যান।পরে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলীর কঠোর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে কাজ করতে বাধ্য হন ঠিকাদার।ওই গ্রামের বাসিন্দা  আবু সাইদ, শাওনসহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, বিগত ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে এমপি ফারুক চৌধূরীর প্রতিশ্রুতি উপজেলার মুল ও গ্রামের রাস্তার কোন সমস্যা থাকবে না। সে মোতাবেক আমাদের গ্রামের রাস্তাটি পাকা করন হয়েছে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে বাড়ি থেকে বের হওয়া যেত না। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেওয়া যায় না। রাস্তাটি পিচ ঢালায় হওয়ার কারনে এসব সমস্যায় আর পড়তে হবে না। শুধু আমাদের গ্রামে না, যে কোন উপজেলার চেয়ে এউপজেলার রাস্তা চকচক করছে। মুল সড়ক গ্রামীন রাস্তা সব জায়গায় এমপির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী  উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মত। রাস্তার আর কোন সমস্য নেই উপজেলা বাসির।

পজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থায় এউপজেলা এখন রোল মডেল। এটা এমপি স্যারের জন্য সম্ভব হয়েছে। কাসারদিঘি গ্রামের ৫০০ মিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। ৫০০ মিটার রাস্তার বিপরীতে ৮ লাখ টাকার মত বরাদ্দ ছিল।

আরও খবর



মাগুরায় সমলয়ে আবাদকৃত ধান কর্তন ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৯ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ০৪ জুন ২০২৩ | ৬২জন দেখেছেন

Image
স্টাফ রিপোর্টার মাগুরা থেকে: মাগুরার  মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের পিয়াদাপাড়া হরিণধরার মাঠে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়িত বোরো ধানের সমলয়ে চাষাবাদের ধান কর্তন ও মাঠ দিবস সোমবার ৮ মে দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়। ধান কর্তনের জন্য চিরাচরিত কাঁচি-কাস্তের পাশাপাশি আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি কম্বাইন্ড হারভেস্টার ব্যবহার করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ। জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন   উপজেলা নির্বাহী অফিসার,রামানন্দ পাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান,  উপজেলা পরিষদের  ভাইস চেয়ারম্যান বেবী নাজনীন , বরকত আলী, সহকারী কমিশনার (ভূমি), বাসুদেব কুমার মালো, মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসিত কুমার রায়। অনুষ্ঠানে এলাকার মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা কৃষি অফিসার, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, কৃষক-কৃষাণীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন   কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেরর উপ পরিচালক সুফি মোঃ রফিকুল ইসলাম। 

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন  কৃষি নির্ভর অর্থনীতির এ দেশে কৃষিকে উপজীব্য করেই সবাইকে বাঁচতে হবে। তিনি বলেন, সমলয়ে চাষাবাদ বর্তমানে  খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। পরে  তিনি কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে 'বিনা মুগ-৮' জাতের ডালবীজ বিতরণ করেন।

আরও খবর



হজযাত্রীদের ভিসা ইস্যু না করায় ৯০ এজেন্সিকে শোকজ

প্রকাশিত:সোমবার ০৫ জুন ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ০৭ জুন ২০২৩ | ১০০জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বেধে দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা ইস্যু না করায় ৯০টি এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার এ নোটিশটি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সময় শেষ হয়ে হলেও বেসরকারি প্রায় ৪৯ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে গত ৩১ মে চিঠি দিয়ে তিন দিনের মধ্যে হজ এজেন্সিগুলোকে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু এজেন্সিগুলো সেই নির্দেশনা মানেনি।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, চলতি বছর হজ কার্যক্রম পরিচালনাকারী এজেন্সিকে তিন দিনের মধ্যে স্ব স্ব এজেন্সির হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত নিবন্ধিত হজযাত্রীদের ভিসা ইস্যু করা হয়নি, যা সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় অসহযোগিতার সামিল। এ ধরনের অব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে। সরকারের হজ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা উপেক্ষিত হয়েছে। এ ঘটনা ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১’র পরিপন্থী। এতে এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

নোটিশে এসব হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২১’র ১৩ ধারা অনুযায়ী কেন প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সেই জবাব আগামী তিন দিনের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দাখিল করার অনুরোধ জানানো হয়।


আরও খবর



নবীনগরে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হলেন ইব্রাহীম খলিল।

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ০৫ জুন ২০২৩ | ১১৭জন দেখেছেন

Image

মোহাম্মাদ হেদায়েতুল্লাহ্ ,নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৩ প্রতিযোগিতায় মাদ্রাসা ক‍্যাটাগরিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন ইব্রাহিমপুর সুফিয়াবাদ শাহ সুফি সাইয়্যেদ আজমত উল্লাহ (রঃ) ফাজিল মাদ্রাসার জেষ্ঠ্য প্রভাষক মোঃ ইব্রাহীম খলিল।আজ ১৬ মে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এর স্বাক্ষরিত এক ফলাফল বিবরণীতে এ তথ্য জানা যায়।

জানা যায়, এ গুণী শিক্ষক কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃতিসন্তান। তিনি নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি ও একজন সংস্কৃতিকর্মী। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দোয়া কামনা করেছেন।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোকাররম হোসেন জানান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান ও নিষ্ঠা, প্রশিক্ষণ ও সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরির দক্ষতা, ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি ও শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়ার ব‍্যবহার, গবেষণামূলক সৃজনশীল প্রকাশনা, শ্রেণি পাঠদানে সক্ষমতাসহ বিভিন্ন কৃতিত্ব মূল‍্যায়নে এ শ্রেষ্ঠত্ব নির্বাচন করা হয়।

-খবর প্রতিদিন/ সি.ব


আরও খবর



ডেমরায় নকশা বহির্ভূত নির্মাণধীন ভবনে রাজউকের উচ্ছেদ অভিযান

প্রকাশিত:সোমবার ০৮ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৬ জুন ২০২৩ | ১০৮জন দেখেছেন

Image

নাজমুল হাসানঃ 

রাজধানীর ডেমরায় নকশা বহির্ভূত স্থাপনা অপসারণে অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এ সময় বেশ কয়েকটি ভবনে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে নির্মিত অংশ অপসারণসহ বিভিন্ন অংকের জরিমানা আদায় করা হয়।


সোমবার (৮ মে) রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল ইসলাম ও অথরাইজড অফিসার রাজীবুল ইসলাম এর নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্স এ অভিযান চালায়।এ সময় রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মাসুদ রানা উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন।


অভিযানে ডেমরা কোনাপাড়া আল-আমিন রোড প্রধান সড়কে  ডগাইর মৌজার ৯৬৭ নং দাগে বেইজমেন্টসহ ১৪ তলা ভবনের অনুমোদন নিয়ে নকশা বহির্ভূত ভাবে চারপাশে কোন জায়গা না ছেড়েই নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।সোহরাব হোসেন নাদু শেখ গং ৯৬ জন মিলে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করছে।


  নির্মাণাধীন ঐ ভবনে রাস্তার পাশের ৪ টি কলাম ভেঙ্গে অপসারণ করা হয়। এবং ভবন মালিক কে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। অবশিষ্ট নকশা ব্যতয়কৃত অংশ ভেঙে ফেলতে সময় দিয়ে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়।

আল-আমিন রোডের ছায়াকুঞ্জ ভবনে নকশা ব্যতয় করে দেলোয়ার হোসেন নামের এক ভবন মালিক নির্মাণ কাজ করায় ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। ভবনের ব্যত্যয়কৃত অংশ ভেঙে ফেলতে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে সময় বেঁধে দেয়া হয়।

এছাড়াও ডেমরা আল-আমিন রোডের বাইতুল মামুর মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় আপন সিটি বিল্ডার্স নামক একটি ডেভলপার কোম্পানি কর্তৃক নির্মিত ভবনে অভিযান পরিচালিত হয়। নকশা বহির্ভূত ভাবে সেখানে নির্মাণ কাজ করায় ২ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করে রাজউক।


রাজউক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, অথোরাইড অফিসার, ইমারত পরিদর্শক ছাড়াও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা অভিযানে অংশগ্রহণ করে। 



রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রাজউক এর দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমারত পরিদর্শক মাসুদ রানা দৈনিক সকালের সময়কে জানান,অবৈধভাবে নির্মাণাধীন ভবনের বিরুদ্ধে রাজউকের এই অভিযান নিয়মিত পরিচালিত হবে। 




আরও খবর