নিজস্ব প্রতিবেদক:বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সত্তরের দশকে সৌদি আরবে যাওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট নবায়ন করতে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সৌদি আরব জানিয়েছে, এই সংখ্যাটি ৬৯ হাজার।
রোববার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩-৭৪ সালে বাংলাদেশ থেকে কিছু রোহিঙ্গা সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। এর সংখ্যা কত আমাদের জানা নেই। তারা (সৌদি কর্তৃপক্ষ) আমাদের জানিয়েছেন, ৬৯ হাজার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সৌদি আরবের নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট না থাকলে তাদের ফেরত পাঠায়। সে ক্ষেত্রে আমাদের সঙ্গে তাদের একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি মোতাবেক, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবেন না। তবে তাদের (রোহিঙ্গা) পাসপোর্ট রিনিউ (নবায়ন) করে দিতে হবে— এমন শর্ত ছিল চুক্তিতে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এই বিষয়ে আমরা ধীরে এগোচ্ছি কেন? কিংবা আমাদের কোনো অসুবিধা আছে কি না সেটা দেখার জন্য তাঁরা এসেছিলেন। এ ছাড়া সৌদি আরবের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমাদের উভয় দেশের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলাপ হয়েছে।
৬৯ হাজার রোহিঙ্গার দায়িত্ব কোন রাষ্ট্র নেবে বাংলাদেশ নাকি সৌদি আরব? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সৌদি আবর কিন্তু ফেরত পাঠাবে না কাউকে। আবার সৌদি সরকার রোহিঙ্গাদের ওই দেশের নাগরিকত্ব দেবে না। তাহলে কীভাবে থাকবে? সে জন্য তাদের কিছু ডকুমেন্টস প্রয়োজন। সে জন্য তারা আমাদের অনুরোধ করেছিলেন। আমরা গত বছর সেটি (চুক্তি) সই করেছিলাম। সেখানে আমাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না সে বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে তারা এসেছিলেন।
সৌদিতে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা কি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা তো বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়েই গিয়েছিলেন। সুতরাং আমরা শুধু তাদের পাসপোর্ট রিনিউ করে দেব। তাদের নাম-ঠিকানা পাসপোর্টে যেমন আছে তেমনি থাকবে।
বৈঠকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আরও অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, তারা নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্রে বোঝাপড়া বাড়ানোর উপায় নিয়েও আলোচনা করেছেন।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা সব সময় আন্তরিকভাবে কাজ করছে। যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সৌদি আরব।