Logo
আজঃ বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪
শিরোনাম

ভাসানীর অবিস্মরণীয় কীর্তি কাগমারী সম্মেলন

প্রকাশিত:বুধবার ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | ২৮৯জন দেখেছেন

Image

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া : মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মসূচীর আয়োজন করেছিলেন, এর মধ্যে তাঁর অবিস্মরণীয় কীর্তি এবং উপ-মহাদেশের তথা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আজকের বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হচ্ছে ১৯৫৭ সালের ‘কাগমারী সম্মেলন’। উপ-মহাদেশ ও পূর্ব বাংলা তথা আজকের বাংলাদেশের রাজনীতিতে এর তাৎপর্য অনাগত কালের গবেষকদের কাছে স্বীকৃত।


পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতা মধ্যে ১৯৫৫ সালের ২১-২৩ অক্টোবর পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের তিনদিন ব্যাপী দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায় রুপমহল সিনেমা হলে। এই অধিবেশনে বলা হয়েছিল-“...... পাকিস্তান সরকারের গত কয়েক বছর পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি, বাগদাদ চুক্তি, সিয়াটো চুক্তি প্রভৃতি এমন সব চুক্তিতে আবদ্ধ হইয়াছে, যে সব চুক্তির দ্বারা দেশের সার্বভৌমত্ব এবং দেশের অর্থনৈতিক, ব্যবসাগত ও বানিজ্যিক স্বাধীনতা ক্ষুন্ন হইয়াছে।” ৫৬-র ১৯-২০ মে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনেও যুদ্ধজোটের বিরুদ্ধে প্রস্তাব নেয়া হয়। তাতে বলা হয়, “কোনো বৈদেশিক শক্তির লেজুর”-হিসাবে না থেকে পাকিস্তান সরকারের উচিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বৈদেশীক নীতি অনুসরন করা। এই জাতীয় প্রস্তাব আওয়ামী লীগের অনেক প্রবীণ নেতার বিতৃঞ্সার কারণ হয় এবং মওলানা ভাসানী হন তাদের বিরাগভাজন।


দুটি প্রধান প্রধান বিষয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে মওলানা ভাসানীর মতপার্থক্য শেষ পর্যন্ত মীমাংসার অযোগ্য বিরোধে পর্যবষিত হয়, যার একটি অবহেলিত শোষিত পূর্ব বাংলার পূর্ন আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন আর অপরটি সকল সামরিক চুক্তি বাতিল করে জোট নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহন। এই দুটি বিষয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন আপোষ প্রবন ও নমনীয় পক্ষান্তরের ও মওলানা ভাসানী ছিলেন অনড় ও আপোষহীন। অবশ্য এই দুটি বিষয় কোন ব্যক্তিগত ব্যপার ছিল না, এগুলো ছিল আওয়ামী লীগেরই নীতি। দলের দুই প্রধান নেতার মধ্যে যখন মতবিরোধ চরমে তখনই মওলানা ভাসানী দলীয় প্রধান হিসাবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করেন ১৯৫৭ সালের ৭-৮ ফেব্রুয়ারী। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী যখন কাগমারী সম্মেলনের আয়োজন করেছেন তখন তাঁরই প্রতিষ্ঠিত দল আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে ও পূর্বপাকিস্তানের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। তদূপরী ঐসময়ে বৈদেশীক নীতি বিশেষ করে পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি সম্পাদন ও সামরিক চুক্তি সম্পাদন সমূহ তথা ‘দক্ষিন-পূর্ব এশিয়া সামরিক চুক্তি’ ও ‘বাগদাদ চুক্তি’ সংস্থার সদস্য ভুক্তির প্রশ্নে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মত দ্বৈততার চরম আকার ধারন করেছিল বলে কাগমারী সম্মেলনটির বিশেষ গুরুত্ব দেখা দিয়েছিল।


প্রকৃত পক্ষে বৈদেশীক নীতির প্রশ্নে মওলানা ভাসানী ও প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চিত রাজনৈতিক অবস্থার মধ্যে কাগমারী সম্মেলনের ঘোষনা পাকিস্তানের শাসক শ্রেনীর অন্তরে আতংক সৃষ্টি করেছিল। কাগমারী সাংস্কৃতিক সম্মেলন পূর্ব বাংলা তথা আজকের বাংলাদেশের প্রথম আর্ন্তজাতিক সাংস্কৃতিক কাম রাজনৈতিক সম্মেলনে রুপ নেয়। এই সম্মেলনকে ঘিরে যেমন পাকিস্তানী ‘দর্শনে’র সমর্থকরা বিরুপ সমালোচনায় মুখর ছিলো, তেমনই আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলে পরিচিত এবং প্রকৃত প্রস্তাবে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ব্যক্তিত্বের সমর্থক পত্র-পত্রিকাগুলোও কাগমারী সম্মেলনকে সুনজরে দেখেনি, বরং ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিরুপ সমালোচনা করেছিল।


উল্লেখ্য যে, কাগমারী সম্মেলনের মাত্র স্বল্প সময়ের মাথায় আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করে মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ থেকে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অপসারন এবং সবমেষ ১৯৫৬ সালের সংবিধান বাতিল ও সামরিক শাসন জারির মত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। এসব কারনেই স্বাধীন জাতি রুপে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সাংস্কৃতি ভিত ভূমি নির্মানে কাগমারী সম্মেলন গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেপ।


কাগমারী সম্মেলন উপলক্ষ্যে উপলক্ষ্যে ১৯৫৭ সালের ১৩জানুয়ারী পূর্ব বাংলার গরীব চাষী, মজুর, ছাত্র, যুবক ও জনসাধারনের প্রতি এক আবেদনে মওলানা ভাসানী বলেন, “এদেশে শুধু মন্ত্রী, মেম্বার, সরকারী কর্মচারীদের নহে এদেশ অগনিত জনসাধারণের দেশ। যাহারা এদেশ পরিচালিত করেন, তাহারা শতকরা ৯৫ জন গরীব চাষী, মজুর,কামার, কুমার প্রভৃতি শ্রেনীর জনসাধারনের টাকা দিয়াই চলে। ............ পূর্ব বাংলার বাঁচার দাবী পূর্ন আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন আদায়ের দাবী এবং ২১দফার বাকী ১৪দফা দাবী পূরণের জন্য বিচ্ছিন্ন জনশক্তিকে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ করিয়া তুমুল আন্দোলন গড়িয়া তুলিতে হবে।


দেশের নানাবিধ সমস্যার সমাধানের উপায় উদ্ভাবন এবং আন্দোলনকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আমি আগামী ৭ ফেব্রুয়ারী হইতে সপ্তাহব্যাপী সনোতাষ কাগমারীতে এক বিরাট সম্মেলন আহ্বান করিয়াছি। দল-মত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে উক্ত সম্মেলনে যোগদান করিয়া জনগনের দাবী আদায়ের আন্দোলন জোরদার করুন।”


৩ ফেব্রুয়ারী মওলানা ভাসানী ‘কাগমারীর ডাক’ শীর্ষক আর একটি প্রচারপত্র প্রকাশ করেন। তাতে বলা হয় ঃ-*সাড়ে চার কোটি বাঙ্গালীর বাঁচার দাবী আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন আদায়ের ডাক, * ঐতিহাসিক ২১দফা আদায়ের ডাকা, * চাষী-মজুর, কামার-কুমার, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবি, শিল্পি সকল শ্রেনীর মিলনের ডাকা, * পূর্ব বাংলার ৬০হাজার গ্রামে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার ডাক, * ২১দফার পূর্ন রুপায়নের জন্য আমাদের নিরবিচ্ছিন্ন আন্দোলন চালাইয়া যাইতে হইবে। ইহা সারা পাকিস্তানের সামাজিক ও আর্থিক পরাধীনতার হাত হইতে মুক্তির মহান সনদ, ইহা যেন আমরা কখনো বিস্মৃত না হই।-মওলানা ভাসানী


তখন তাঁর দল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে এবং আতউর রহমান খানের নেতৃত্বে পূর্ব বাংলার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত তখন এই বক্তব্য দিয়ে একটি মহাসম্মেলনের আয়োজন খুবই তাৎপর্য পূর্ন এবং সহজবোধ্যও বটে। কাগমারী সম্মেলনে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, আতাউর রহমান খান-সহ কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশীক মন্ত্রী সভার প্রায় সকল মন্ত্রীই যোগ দিয়েছিলেন। কাগমারী সম্মেলন সফল করতে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে যে প্রস্তুতি কমিটি গঠন হয়েছিল তার অন্যতম সদস্যরা হলেন ইয়ার মোহাম্মদ খান, কাজী মোঃ ইদরীস, ফকির সাহবুদ্দিন আহমেদ, খায়রুল কবির, খন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস, সদর ইস্পাহানী, আবু জাফর শামসুদ্দিন।


সম্মেলনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে যে, এই সম্মেলন উপলক্ষ্যে টাঙ্গাইল শহর থেকে সন্তোষের কাগমারী পর্যন্ত প্রায় ৫কিলো মিটার রাস্তায় যে অসংখ্য তোরণ নির্মিত হয়েছিল। আবার সেই তোরণগুলির নামকরন করা হয়েছিল বিশ্বমানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) থেকে শুরু করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বৃটিশ বিরোধী উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও সংগ্রামে অংশ গ্রহনকারী নেতাদের নামে। উল্লেখযোগ্য তোরণগুলোর নাম হলো হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) তোরণ, মহাত্মা গান্ধী তোরণ, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, কাজী নজরুল ইসলাম, মহাকবী ইকবাল, নেতাজী সুভাস বোস, হাজী শরিয়তউল্লাহ, শহীদ তিতুমির, পন্ডিত জহরলাল নেহেরু, হাজী মোহাম্মদ মহসীন, সি.আর.দাস, লেলিন, স্ট্যালিন, মাও সেতুং, ওয়ার্ড ওয়ার্থ, বায়রন, শেলী, মাওলানা রুমী, হযরত ঈমাম আবু হানিফা, হযরত ঈমাম গাজ্জালী এভাবে ৫১টি তোরণের নাম করণ করেছিলেন মওলানা ভাসানী। সর্বশেষ তোরণটি ছিল কায়েদে আযম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তোরণ।


এই সম্মেলনে অংশগ্রহনের জন্য মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী আমন্ত্রন জানিয়েছিলেন বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র নায়কদের। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন-ভারতের প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরু, মিশরের প্রেসিডেন্ট জামাল আবদুল নাসের, চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ সুকর্নো অথবা তার প্রতিনিধি, পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী বিধান চন্দ্র রায় ও বৃটেনের বিরোধী দলের নেতা। জহরলাল নেহেরু, বিধান চন্দ্র রায় ও জামাল আবদুল নাসের চিঠি দিয়ে সম্মেলনের সাফল্য কামনা করে মওলানা ভাসানীকে ব্যাক্তিগত চিঠি দিয়েছিলেন।


কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানী তাঁর ভাষনের এক পর্যায়ে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্টির উদ্দেশ্যে তাঁর সুপুরিচিত ও সুবিখ্যাত ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারন করেন। ঐ ‘আসসালামু আলাইকুম’-এর তাৎপর্য্য উপস্থিত শ্রোতা যাদের মতে, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্বাধীনতার প্রথম স্পষ্ট দাবী এবং তার জন্যে প্রয়োজনীয় সংগ্রাম ও ত্যাগের সংকল্প ঐ ‘আসসালামু আলাইকুম’ ধ্বনীর মাধ্যমে ঘোষিত হয়েছিল।”


সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে মওলানা ভাসানী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দুই‘ধরনের বক্তব্যই রেখেছিলেন। উপ-মহাদেশের হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপরও দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন। পূর্ব-পাকিস্তানের পূর্ন আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন প্রশ্নে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে সতর্কবাণী উচ্চারন করেন যে, পূর্ন আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন না দিলেও সামরিক-বেসামরিক চাকুরী, ব্যবস-িবাণিজ্য, শিল্পায়ন, কৃষি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সংখ্যা সাম্য নীতি পালিত না হইলে পূর্ব পাকিস্তান ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলিবে অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হইয়া যাইবে। ৮ ফেব্রুয়ারী মূল অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ড. কাজী মোতাহের হোসেন।


কাগমারী সম্মেলন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি মাইল ফলক-বাংলাদেশের স্বাধীকার আন্দোলনের ইতিহাসে এক স্বরণীয় ঘটনা। সম্মেলনের সময় মওলানা ভাসানী টাঙ্গাইল-কাগমারী সড়কের নাম দিয়েছিলেন বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও স্বাধীনতা সড়ক। এ নামকরণ যে খুবই তাৎপর্যপূর্ন তা আলোচনার প্রয়োজন নেই। কাগমারী সম্মেলনে অধিবেশনের আলোচনা ও প্রস্তাবসমূহ সর্বসম্মত না হলেও সাংস্কৃতিক সম্মেলনটি সূচারু রুপে সমাপ্ত হয়। এই সম্মেলনের পর মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও তার সমর্থিত নেতা কর্মীদের আওয়ামী লীগের সাথে থাকা অসম্ভব হয়ে উঠে।


প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মূখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খান এবং তাদের সহকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নীতির প্রশ্নে আপোষের কোন সুযোগ ছিল না। তাঁরা বলেছিলেন পূর্ব বাংলার স্বায়ত্বশাসন হয়েই গেছে এবং মার্কিনপন্থী জোট ভুক্ত পরররাষ্ট্রনীতি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। পশ্চিম পাকিস্তানের এক ইউনিট বাতিলেও প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনিহা ছিল। আর অন্যদিকে এসব প্রশ্নে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ছিলেন অবিচল ও আপোষহীন। তিনি তাঁর মনস্থির করে ফেলেছিলেন, তবে দল ত্যাগের ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোন উচ্চবাক্য করেননি। যে দলটির তিনি শুধু প্রতিষ্ঠাই নন-আপ্রান চেষ্টায় দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রমে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন, যে দলটির পতাকার নিচে সমবেত করেছেন দেশের সকল এলাকার সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে, যে দলটি কেন্দ্রে ও প্রদেশে ক্ষমতাসীন, দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি সত্বেও পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগ সরকার বেশ কিছু প্রগতিশীল কাজও করেছে, যে দলের প্রধান তিনি, সেই দল পরিত্যাগ করার মুহুর্তে তিনি মানসিকভাবে আঘাত পেয়ে ছিলেন বটে, কিন্তু আদর্শের ও নীতির সঙ্গে আপোষ করা তাঁ পক্ষে সম্ভব ছিলো না।


কাগমারী সম্মেলনে মওলানা ভাসানীর কঠোর ভাষন এবং তাঁর ‘আসসালামু আলাইকুম’ যে বতর্কের সূচনা করে তাতে প্রধামন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যিন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাও বটে, বিব্রত হন, পরিস্থিতি আয়ত্ত্বে আনতে তিনি মওলানা ভাসানীর সমর্থনে একটি নমনীয় বিবৃতিও প্রদান করেন, যা ৫৭-র ১৬ ফৈব্র“য়ারী দেশের সমস্ত পত্র-পত্রিকার প্রকাশিত হয়। কাগমারী সম্মেলন মওলানা ভাসানী স্বায়ত্বশাসনের দাবী তুললেন পক্ষান্তরে সম্মলন থেকে ঢাকায় ফিরে সলিমুল্লাহ হলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ঘোষনা করেন যে-পূর্ব পাকিস্তানের ৯৮% স্বায়ত্বশাসন অর্জিত হয়ে গেছে। এই নিয়ে দুই দল ছাত্রদের মধ্যে প্রচন্ড মারামারিও হয়। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী আওয়ামী লীগের কাউন্সিল সভায় বামপন্থীদের সাথে একটি বোঝা পড়ার চেষ্টা চালান, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়। ১৯৫৫ সালের মে অধিবেশনের প্রস্তাবাবলী যেমন পূর্ব বাংলার পূর্ন স্বায়ত্বশাসন, পাকিস্তানের জোট নিরপেক্ষ বৈদেশীক নীতি, বাগদাদ চুক্তি বাতিলের দাবী ইত্যাদি নিয়ে সে সভায় দীর্ঘ আলোচনা চলে। কিন্তু হোসেন শহধি সোহরাওয়ার্দী ও তাঁর সমর্থকদের মার্কিন ঘেষা ও পশ্চিম পাকিস্তানীদের সঙ্গে সহযোগিতার নীতির বিরুদ্ধে মওলানা ভাসানী ও তাঁর অনুগতরা অবিচল থাকেন। উভয় পক্ষই তাদের এই অনমনীয় মনোভাবের পরিনতি কি তাও তাঁরার জানতেন। তবুও আদর্শগত অবস্থানের কারণে আওয়ামী লীগের ভাঙ্গন অবশ্যসম্ভাবী হয়ে পড়ে।


সম্মেলনের পর ২৬মার্চ ১৯৫৭ মওলানা ভাসানী একটি প্রচারপত্র বিলি করেন, যার শিরোনাম ছিল ‘আওয়ামী লীগ কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আবেদন’- “ভাইসব, উভয় পাকিস্তানের সংহতি ও মিলন নির্ভর করে একমাত্র আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন দানের উপর। আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন ব্যতিত সাড়ে চার কোটি বাঙ্গালীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সমাজ জীবনে মুক্তি অসম্ভব।..................... গদীর মোহে মুসলীম লীগের সহিত হ্তা মিলাইয়া সারে চার কোটি বাঙ্গালীকে চিরকালের জন্য কৃতদাস বানাইতে, আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসনের দাবী বিসর্জন দিয়া পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র পাশ করিয়া ছিল, তাহারাই পুনরায় সাম্রাজ্যবাদী ও কোটিপতি শোষকদের সহিত হাত মিলাইয়া বর্তমানে আমার এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সংবাদপত্রে বিবৃতি, পোষ্টার, বিজ্ঞাপন ছড়াইয়া সারা দেশময় মিথ্যা প্রচার শুরু করিয়াছে। এসব কুচক্রিদের দেশবাসী ভাল করিয়াই চিনে। তাহারাইগত ৯ বছর ধরিয়া পূর্ব পাকিস্তান তথা পাকিস্তানের অর্থনৈতিক কাঠামোকে চরম বিপর্যয়ের মুখে ঠেলিয়া দিয়াছে।”


কাগমারী সম্মেলনের পরই মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং এক পর্যায়ে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন এবং আওয়ামী লীগের ভ্রান্তনীতির বিরুদ্ধে জনমত প্রতিষ্ঠা ও পাকিস্তানের মেহনতী জনগনের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যেই পরবর্তীতে ১৯৫৭ সালের ২৫ জুলাই ঢাকার রুপমহলে নিখিল পাকিস্তান গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ।


ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমেই তৎকারীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্ব শাসন ও স্বাধীকার আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এ অঞ্চলের জনগনকে ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন করতে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেছিল। কাগমারী সম্মেলনে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী যে গুরুত্বপূর্ণ ও জ্বালাময়ী বক্তব্য রেখেছিলেন তা আজো আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, পতাকা-মানচিত্র রক্ষার সংগ্রামে এবং সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামে ও লড়াইয়ে অনুপ্রেরনা যোগায়।


১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাগমারী সম্মেলনে যোগ দিতে মওলানা ভাসানীর আমন্ত্রণে যে ভারতীয় সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দল আসে তাতে ছিলেন দলনেতা হুমায়ুন কবির, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রবোধকুমার স্যানাল, নরেন্দ্র দেব, রাধারানী দেবী, কাজী আবদুল ওদুদ প্রমূখ। সম্মেলনের আয়োজন দেখে তাঁরা আক্ষরিক অর্থেই বিস্মিত হন।

প্রবোধকুমার স্যানাল তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, 'এখানকার সাংস্কৃতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের মধ্যে আমি প্রাণের অভিব্যক্তি দেখেছি। সম্মেলনের আশপাশে যে সভা দেখেছি তা অভূতপূর্ব ও বিস্ময়কর। এই সার্থকতার ব্যাকুলতা, স্নেহ ও বন্ধুত্ব, মৈত্রী ও সাম্যের প্রতি অনুরাগের বাঙালি-প্রাণের এত বড় আয়োজন আর কোথাও দেখিনি। পূর্ববাংলা আজ এক আদর্শ মিলন-মোহনায় পরিণত হয়েছে। এখানে এসে এই মিলন মোহনায় অবগাহন করলাম।


কাগমারী সম্মেলনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের সদস্যরা দেশে গিয়ে লেখালেখি করেন এবং সভা-সমাবেশে বলেন, আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে থেকে তাঁদের কথিকা প্রচার করা হয়। সেগুলোর কিছু বেতার-জগৎ-এ প্রকাশিতও হয়। তারাশঙ্কর তার সফরের অভিজ্ঞতা অন্নদাশঙ্কর রায় ও অন্যান্যকে বলেন। সে-সম্পর্কে অন্নদশংকর বহু পরে- তারাশঙ্কর ও মওলানা ভাসানীর মৃত্যুর পর-  কিছু লিখেছেনও।


তারাশঙ্কর কাগমারী সম্মেলন শেষে বলেছিলেন, মওলানা সম্পর্কে কত দুর্নাম শুনেছি। কয়েকদিন কাছে থেকে দেখে বুঝতে পারলাম ওসবের কোনো সত্যতা নেই। প্রতিপক্ষ অনেক কিছু রটায়, তাঁর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে। আসলে তিনি সোজা-সরল ধরনের মানুষ। রেখেঢেকে মেপেবুঝে কথা বলতে জানেন না। মনে যা ভাবেন তাই মুখে তাই বলে ফেলেন। খোলামেলা মানুষ। তাতে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। তাছাড়া তিনি মাটির মানুষের একেবারে কাছে আছেন। তাদের সুখ-দুঃখ-অনুভূতি তিনি ভাল বোঝেন, যা উপমহাদেশের আর কোন নেতা অনুভব করতে পারেন না। ভাসানীর রাজনীতি সম্পূর্ণ অন্য ধরনের রাজনীতি- প্রথাগত রাজনীতির সঙ্গে যার কোনো মিল নেই।


অন্নদাশঙ্কর ভাসানীকে নিয়ে লিখেছেন একটি চমৎকার ছাড়া। ছড়াটির প্রথম দুই পঙতি হলো:

মহান নেতা ভাসানী

ভারতকে দেন শাসানি।


শেষ করতে চাই এইভাবে যে, বাংলাদেশের স্বাধীকার ও স্বাধীনতা আন্দোলন গড়ে তুলতে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী যে অবদান রেখেছেন-যে সম্মানি তিনি প্রাপ্য ছিলেন স্বাধীনতার ৫১ বছরের সরকারগুলো তাঁকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা দিতে ব্যার্থ হয়েছে। আমাদের দেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রয়োজনে মওলানা ভাসানীকে ব্যবহার করলেও প্রকৃত অর্থে তাকে তাঁর যথাযোগ্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার কোন কর্মসূচীই গ্রহন করেনি। নিরপেক্ষ চিন্তায় অবশ্যই তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাওয়ার অধিকারী।


আরও খবর



২৩ নাবিককে যেভাবে দেশে আনা হবে, জানাল কেএসআরএম

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | ৬৪জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:এমভি আব্দুল্লাহ সোমালিয়ান জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাতে পারে ২২ এপ্রিল।

গন্তব্যে পৌঁছাতে জাহাজটিকে নিরাপত্তা দিচ্ছে ইউরোপিয়ান নেভি। সেখানে পৌঁছে ২১ নাবিক জাহাজে করে নৌপথেই দেশে ফিরতে চান। বাকি ২ জন আসতে চান উড়োজাহাজে। তবে কেএসআরএম গ্রুপ বলছে, বাংলাদেশগামী ভাড়া জাহাজ পাওয়া না গেলে সব নাবিককে বিমানে করেই ফেরত আনা হবে।

বর্তমানে আরব আমিরাতের হামরিয়া বন্দরের পথে রয়েছে এমভি আব্দুল্লাহ। জাহাজটিকে এখন পাহারা দিয়ে গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে ইউরোপিয়ান নেভির দুটি জাহাজ। প্রথমে ১৯ এপ্রিল জাহাজটি হামরিয়ায় পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে, ইইউ নেভির সঙ্গে সমন্বয় করতে কিছু বাড়তি সময়ের কারণে সেটি পৌঁছাতে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

কেএসআরএম গ্রুপ জানিয়েছে, ২৩ নাবিকের মধ্যে ২ জন আসতে চান উড়োজাহাজে। বাকি ২১ জনই আব্দুল্লাহতে করেই দেশে ফিরতে আগ্রহী। সেক্ষেত্রে দুবাই থেকে যদি বাংলাদেশগামী পণ্য পাওয়া না যায় তাহলে সব নাবিককেই উড়োজাহাজে করে দেশে আনা হবে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নাবিকদের দেশে আনতে ভালো ভূমিকা রাখছে জাহাজটির মালিকপক্ষ। গতকাল তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা বলেছে, নাবিকরা যদি চান তাহলে বিমানযোগে তাদের দেশে আনা হবে। এছাড়া জাহাজে সেসব নাবিকের স্থলাভিষিক্ত হবেন কারা, তা নিয়েও কাজ করছে মালিকপক্ষ।

কবির গ্রুপের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, জাহাজ যদি চিটাগাং বন্দরে আসে, তাহলে ২১ নাবিকই তাতে আসতে চান। আর বাকি ২ জন বিমানে আসার ইচ্ছার কথা জানিয়েছে। তবে, যেভাবেই আনা হোক না কেন, তাদের আর লম্বা সময়ের জন্য জাহাজে পাঠানো হবে না।

আব্দুল্লাহ ছিনতাইয়ের পর নড়েচড়ে বসেছে কবির গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির সব জাহাজকে আনা হচ্ছে নতুন নিরাপত্তা বলয়ে। ইতোমধ্যে আব্দুল্লাহকে নেওয়া হয়েছে গার্ডিয়ান নামে ১টি সার্ভিলেন্স ব্যবস্থার আওতায়।

কবির গ্রুপের ডিএমডি মো. করিম উদ্দীন বলেন, যেদিকে সুবিধা পাওয়া যাবে সেদিকেই যেতে হবে। আমরা নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছি। সেটা আরও কঠোর করা হবে।

উল্লেখ্য, কবির গ্রুপের সমুদ্রগামী জাহাজ রয়েছে ২৩টি। আর বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা প্রায় ১০০।


আরও খবর



সুন্দরগঞ্জে জমিনিয়ে বিরোধে নিহত-১,আহত-১

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | ১৩১জন দেখেছেন

Image

একেএম,শামছুল হক,সুন্দরগঞ্জ,(গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃসুন্দরগঞ্জ উপজেলার  ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত মিয়া ছেলে আজিজুল ইসলাম (৫৩),সাং-বজরা হলদিয়া চৌধুরী বাজার,ওয়ার্ড নং ০১,থানা সুন্দরগঞ্জ, জেলা গাইবান্ধা  এর সহিতএকই গ্রামের মৃত মোসলেম ক্বারীর ছেলে অপরাধী ফারুক মিয়া(২৮), মৃত জহুরুলের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০)মৃত আব্দুলের ছেলে সিদ্দিক এর দীর্ঘদিন যাবত পারিবারিক ৪৫ শতক জমি নিয়ে ঝুট ঝামেলা চলে আসিতেছিল।

আজ সকাল আনুমানিক ১১:৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম  আজিজল ইসলাম নিজ বাড়িতে কাজ  করিতেছিলেন, ভিকটিমের বাড়ির গলিতে আসিয়া অপরাধী ব্যক্তিগণ ভিকটিম আজিজল ইসলামকে  ডাকাডাকি করিলে ভিকটিম আজিজুল ইসলাম গলির মধ্যে গেলে উক্ত অপরাধীর ব্যক্তিগণ আজিজুল ইসলামের মাথা,শরীর ও  পায়ের বিভিন্ন স্থানে ছুরি দিয়ে আঘাত করিলে ভিকটিম আজিজল ইসলাম গুরুতব আঘাত পাইয়া মাটিতে পড়িয়া যান, পরিবর্তীতে সোহেল মিয়া (৩০),পিতা মৃত আব্দুল আজিজ এর ছেলে আগাইয়া আসলে অপরাধী ব্যক্তিগণ সোহেল মিয়ার মাথায় ও পাছায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করিলে স্থানীয় লোকজন দেখিতে পাইয়া চিৎকার চেঁচামেচি করলে পরিবারের লোকজন ভিকটিম আজিজুল ইসলামকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লইয়া আসলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কর্তব্যরত চিকিৎসক আজিজুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।   

পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে উপস্থিত হইয়া প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। থানা এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। বর্তমানে থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রহিয়াছে।


আরও খবর



বাড়তি ফি টেস্ট পরীক্ষার নামে নেওয়া যাবে না: শিক্ষামন্ত্রী

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | ৯৮জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টেস্ট পরীক্ষার নামে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি নেওয়া যাবে না ও পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে প্রবেশপত্র দেওয়া থেকে বঞ্চিত না করার নির্দেশনা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে সম্প্রতি এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে টেস্ট পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায় করা ও পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে প্রবেশপত্র দেওয়া থেকে বঞ্চিত করাসহ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছে মর্মে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

এতে আরও বলা হয়, বর্ণিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন, টেস্ট পরীক্ষার নামে কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করা যাবে না ও পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে প্রবেশপত্র দেওয়া থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। এই নির্দেশনার প্রতিপালন না করলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।


আরও খবর



সরকারি চাকরিজীবীরা ঈদে দুইদিন ঐচ্ছিক ছুটি পাবেন

প্রকাশিত:সোমবার ০১ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | ১৩৩জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:আগামী ৮ ও ৯ এপ্রিল সরকারি অফিস খোলা থাকবে,জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন । তবে, এবার ঈদে ঐচ্ছিক ছুটির একটা ব্যবস্থা আছে। নিয়মানুযায়ী সেই ছুটি নেওয়া যাবে।

সোমবার (১ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী এবার রমজান ৩০ দিন হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ফলে ঈদুল ফিতর হতে পারে ১১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার)। ১১ এপ্রিলকে ঈদুল ফিতরের দিন ঠিক করে ছুটির তালিকা করেছে সরকার।

তিনি বলেন, ক্যালেন্ডারে আমাদের যেভাবে ছুটি করা আছে, ওইভাবেই ছুটি থাকবে। ৮ এবং ৯ তারিখে অফিস খোলা থাকবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ঐচ্ছিক ছুটির একটা ব্যবস্থা আছে। যারা ঐচ্ছিক ছুটি নিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে আবেদন করবেন, তারা নিতেই পারবেন।

তিনি আরও বলেন, এটার(ঐচ্ছিক ছুটি) জন্য আলাদা নির্দেশ দেওয়ার দরকার নেই। এটা আমাদের ছুটি বিধিতেই আছে। প্রতি বছর আমরা যখন ক্যালেন্ডারটা করি, সেই ক্যালেন্ডারের নিচে ঐচ্ছিক ছুটির কথা লেখা থাকে।

এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় ঈদের ছুটি নিয়ে অনির্ধারিত আলোচনা হয়।


আরও খবর



নিটারে আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ইফতার মাহফিলের আয়োজন

প্রকাশিত:বুধবার ০৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১২৮জন দেখেছেন

Image

মিঠুন দাস মিঠু, ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, নিটার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড রিসার্চ (নিটার) এর কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন মিলনায়তনে গত পহেলা এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ বাদ আছর নিটার কর্তৃপক্ষের আয়োজনে ও নিটার আবাসিক হলে অবস্থানরত  শিক্ষার্থীবৃন্দের অংশগ্রহণে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।


সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল হতেই দলে দলে ধর্মপ্রাণ  শিক্ষার্থীরা ইফতার মাহফিলে যোগদান করার উদ্দেশ্যে নিটার কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন মিলনায়তনে  জড়ো হতে থাকে। উপস্থিত সকলে আসন গ্রহণ করলে নিটার কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম সকলের উদ্দেশ্যে ইফতারের গুরুত্ব ও বিধান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। এছাড়া ইফতার মাহফিলের সকল কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে আয়োজকরা নিরলসভাবে সবকিছুর আয়োজন করে। প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর সুশৃঙ্খল অংশগ্রহনে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইফতার কর্মসূচির সূচনা হয় ও মোনাজাত শেষে ছাত্র-শিক্ষক সকলে একসাথে বসে সম্মিলিতভাবে ইফতার গ্রহন করে এবং নিটার লেডিস হোস্টেলে অবস্থানরত মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথকস্থানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

উক্ত ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এধরনের ইফতার মাহফিল কর্মসূচির আয়োজনে তারা আনন্দিত এবং এরকম আয়োজন পরস্পরের সাথে সম্পর্কের উন্নতি ঘটায়। একে অপরের প্রতি ভ্রাতৃত্ববোধের ও ভালোবাসার বিকাশ ঘটায়। সকলে একসাথে এক স্থানে বসে ইফতার করেছি এরচেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে!  এরকম আয়োজন নিয়মিত করা প্রয়োজন বলে তারা অভিমত জানিয়েছে।

এভাবেই প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ইফতার মাহফিল কর্মসূচি সফল ও সুশৃঙ্খলভাবে সমাপ্ত হয়।


আরও খবর