Logo
আজঃ বুধবার ২৯ মার্চ ২০২৩
শিরোনাম

তুরস্কে ভূ‌মিকম্পে নিখোঁজ এক বাংলাদে‌শি উদ্ধার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ মার্চ ২০২৩ | ৮২জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক; তুরস্কে ভূ‌মিক‌ম্পে দেশ‌টির আজাজ শহরে নিখোঁজ দুই বাংলাদেশির ম‌ধ্যে একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া নুর আলম না‌মের ওই বাংলা‌দে‌শি সুস্থ আছেন এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নুরে আলম এ তথ্য জা‌নি‌য়ে‌ছেন।

তি‌নি জানান, তুরস্কে ভূমিকম্পে নিখোঁজ দুই বাংলাদেশির ম‌ধ্যে নুর আলম না‌মের এক বাংলা‌দে‌শি‌কে উদ্ধার করা হ‌য়ে‌ছে। কিন্তু মো. রিংকু না‌মের এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। তারা দু`জন তুরস্কের আজাজ শহরে বসবাস কর‌ছি‌লেন। নি‌খোঁজ রিংকুর বা‌ড়ি বগুড়ায়।

দুটি ভূমিকম্পের প্রথমটি স্থানীয় গতকাল সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল সিরিয়া সীমান্তবর্তী গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। দ্বিতীয়টি আঘাত হানে দুপুরের দিকে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৬। ভূমিকম্পে তুরস্কে দুই হাজার ৯২১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। অন্যদিকে, সিরিয়ায় প্রাণহানি বেড়ে ১ হাজার ৪৫১ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় অভিযান অব্যাহত আছে।

৮৪ বছরের মধ্যে তুরস্ক এতো শক্তিশালী ভূমিকম্প দেখেনি। সবশেষ ১৯৩৯ সালে উত্তর-পুর্ব তুরস্কে এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। তখন প্রায় ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ১৯৯৯ সালে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইজমীতে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল।


আরও খবর



উচ্চ আদালত বন্ধের নির্দেশ দিলেও পুরোদমে চলছে ইটভাটার কাজ

প্রকাশিত:রবিবার ০৫ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ মার্চ ২০২৩ | ১০৫জন দেখেছেন

Image

মোঃ আব্দুল হান্নান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার  নাসির নগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুরে  অবৈধভাবে গড়ে উঠা দুটি ইটভাটা উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চালিয়ে যাচ্ছে উৎপাদন। 

হরিপুর রাজবাড়ী থেকে কয়েকশত গজ দক্ষিণে রয়েল  ও  সততা ব্রিকস নামে লোকালয়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠে দুটি ইটভাটা। স্থানীয়রা ইট ভাটা দুটি এখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র স্থানান্তরের দাবি জানান। 


ইট ভাটা দুটি অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য স্থানীয় হরিপুর গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে মোঃ আউয়াল মিয়া ৩০ জানুয়ারি ২০২২ সালে উচ্চ আদালতে একটি পিটিশন ও দায়ের করেন,যার পটিশন নম্বর ১৪৬৫৯। পিটিশনে তিনি উল্লেখ করেন ভাটা দুটির কালো ধোয়ার দূষণে স্থানীয় এলাকার পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রী ও এলাকার মানুষ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর প্রতিকার চেয়ে তিনি ভাটা দুটির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বাতিল করে অন্যত্র স্থানান্তরের দাবি করেন। এই বিষয়ে আউয়াল মিয়া জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও আবেদন করেন।


আওয়ালের আবেদনের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর একটি রুল জারি করেন। যা ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ উচ্চ আদালতে যথাযথ জবাব দিতে না পারায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ উচ্চ আদালত ভাটা দুটিকে বন্ধের নির্দেশ দেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ভাটার মালিকরা প্রশাসনকে মেনেজ করে উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। 


 সরেজমিন এলাকায় গিয়ে  দেখা গেছে, রয়েল ব্রিকস ও সততা ব্রিকস দুটিতেই পুরোদমে চলছে উৎপাদন । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানায় এখানে মাঝে মধ্যে প্রশাসনের লোকজনও আসে।  তাদের ম্যানেজ করেই চলছে উৎপাদন। 

রয়েল  ও সততা ব্রিকস দুটিতে গিয়ে মালিক পক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। সাংবাদিকের কথা শোনে কারখানার ব্যাবস্থাপক ও সটকে পড়ে। 

পরে রয়েল ব্রিকস এর মালিক মোঃ ইয়াসিন মিয়ার  সাথে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি ঢাকায় আছি পরে এসে কথা বলবো। 


এগুলো ছাড়াও চাপড়তলা ইউনিয়নের উড়িয়াইনে রহিমা,গোয়াল নগর ইউনিয়নের লালুয়ারটুকে সালমা আর শাহেনা নামক ইটভাটা গুলোতে পুড়ানো হচ্ছে কাট আর জুট।তাদের নেই কোন প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রও।কোন কোন ইটভাটার অবস্থান আবার রয়েছে বিদ্যালয় সংলগ্ন।


নাসির নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাবিবুল্লা সরকার বলেন, ইট ভাটা অনুমোদন বা বন্ধের দায়িত্ব আমাদের নয়। এইটা পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব।, আমরা শুধু সহযোগিতা করতে পারি। আর এই রায়ের কোন কপি আমাদের হাতে এখনো আসেনি। 


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, গত দুইতিন দিন আগে  আমার হাতে রায়ের কপি এসেছে। আমরা এই গুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

-খবর প্রতিদিন/ সি.বা


আরও খবর



হজের খরচ ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে আইনি নোটিশ

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ২৬ মার্চ ২০২৩ | ৯১জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক: হজের প্যাকেজ সংশোধন করে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আল কোরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামান এ নোটিশ পাঠান।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে হজের খরচ ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। অন্যদিকে, কোরবানি ছাড়াই এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য সর্বনিম্ন প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। এর আগে যা ছিল পাঁচ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। অর্থাৎ, আগের বছরের চেয়ে দেড় লাখ টাকা বেড়েছে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন সৌদি আরবে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী এ বছর হজযাত্রীর কোটা এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন।

এ বছর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সৌদি আরবে যাওয়া শতভাগ হজযাত্রীর প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন বিমানবন্দরেই অনুষ্ঠিত হবে।


আরও খবর



গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে র‌্যাব: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ | ৬৩জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক ;র‌্যাব জননিরাপত্তা রক্ষায় গণমানুষের আস্থার বাহিনীতে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষা একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের পূর্ব শর্ত। দেশের উন্নয়নের এই পূর্ব শর্তকে সঠিকভাবে ধারণ করে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, প্রতারণা বন্ধসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে র‌্যাব।”

আজ রোববার র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “র‌্যাব জঙ্গি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারিদের কাছে একটা আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে। র‌্যাবের কার্যক্রমের ফলেই ধর্ষণ, খুন, অপহরণের আসামিদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারের বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়েছে। মানবিকবোধের জায়গা থেকে র‌্যাব দুস্থ, কাঙাল, প্রতিবন্ধীদের পাশেও দাঁড়াচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় সর্বহারা জনসাধারণের পাশে থেকে কাজ করছে গণমুখী এ বাহিনী।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বিগত সময়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান পরিচালনা করে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে র‌্যাব। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের তিন হাজার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। র‌্যাব জঙ্গিবাদ দমনে মাঠপর্যায়ে নজরদারির পাশাপাশি সাইবার জগতে সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। জঙ্গিবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে র‌্যাব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে সফল তৎপরতা চালিয়েছে তাতে র‌্যাবের ভূমিকা অগ্রগণ্য।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’ এই মূলমন্ত্রকে বুকে লালন করে আগামীতে আরও উৎসাহ-উদ্দীপনায় দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠা-আন্তরিকতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে র‌্যাব। এসময় একটি মাদকমুক্ত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে র‌্যাব অবদান রাখবে বলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দৃঢ়তা প্রদর্শন করেন তিনি।

এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান ও র‍্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন উপস্থিত রয়েছেন।


আরও খবর



হজের খরচ কমাতে হাইকোর্টে রিট

প্রকাশিত:রবিবার ১২ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:বুধবার ২৯ মার্চ ২০২৩ | ১৭২জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের হজ প্যাকেজ সংশোধন করতে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ সংশ্লিষ্টদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। হাবিবুর রহমান, আব্দুল আজিজ ও আব্দুল হাই নামে তিন আবেদনকারীর পক্ষে আজ রোববার এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আল মামুন রাসেল।

নোটিশে বিমানভাড়া কমানোসহ হজ প্যাকেজ সংশোধন, পরিবর্তন ও পুনর্নির্ধারণ করে নতুন প্যাকেজ ঘোষণার অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া হজযাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট কিনতে বাধ্য করা হয়। যা যাত্রীদের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়। এ নিয়মেও পরিবর্তনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

নোটিশটি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অনুবিভাগের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও বলাকা বিমান বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী আল মামুন রাসেল।

এর আগে গত ৬ মার্চ হজ প্যাকেজ সংশোধন করে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আল কোরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামান এ নোটিশ পাঠিয়েছিলেন।


আরও খবর



ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আজ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৭ মার্চ ২০২৩ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ২৮ মার্চ ২০২৩ | ১০১জন দেখেছেন

Image

বাসস: আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক এই ভাষণ পরবর্তীতে স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজমন্ত্রে রূপ নেয়।

এ দিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে এই মহান নেতা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো। এছাড়াও এ ভাষণটি পৃথিবীর অনেক ভাষায় অনুদিত হয়েছে।

একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় চিন্তা, সাম্প্রদায়িকতার মানসিকতা ও দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্ত্বা, জাতীয়তাবোধ ও জাতিরাষ্ট্র গঠনের যে ভিত রচিত হয়। তারই চূড়ান্ত পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর ছাত্র-কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

মাত্র ১৮ মিনিটের ভাষণ। এই স্বল্প সময়ে তিনি ইতিহাসের পুরো ক্যানভাসই তুলে ধরেন। তিনি তাঁর ভাষণে সামরিক আইন প্রত্যাহার, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া এবং বিভিন্ন স্থানে হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রীত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র-মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করবো। আজও আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত। আমি বলে দিতে চাই- আজ থেকে কোর্ট-কাচারি, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। কোন কর্মচারী অফিসে যাবেন না। এ আমার নির্দেশ।’

বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সর্বশেষ দুটি বাক্য, যা পরবর্তীতে বাঙালির স্বাধীনতার চূড়ান্ত লড়াইয়ের দিক-নির্দেশনা ও প্রেরণার হাতিয়ারে পরিণত হয়। বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং সেদিনের সেই সভায় উপস্থিত তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু তাঁর চশমাটা সেদিন ডায়াসের উপর রেখে ১৮ মিনিটের যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তার পুরোটাই অলিখিত। একদিকে তিনি পাকিস্তানিদের প্রতি চার দফা শর্ত আরোপ করলেন, অন্যদিকে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বললেন। ভাতে মারার কথা বললেন, পানিতে মারার কথা বলেন।

তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, ‘সাতই মার্চের আগে বঙ্গবন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলাম। একজন তাঁকে বললেন, জনগণ কিন্তু সম্পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা ছাড়া মানবে না। বঙ্গবন্ধু তাঁকে বললেন, তুমি তোমার কাজ কর। আমি তাঁদের নেতা, আমি তাঁদের পরিচালিত করবো, তাঁরা আমাকে নয়।’

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের শ্রেষ্ঠত্বের কথা তুলে ধরে ইতিহাসের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের পর গোটা বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের পরিবর্তে বাঙালিদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। অনেকে বিভিন্ন জায়গায় পূর্ব পাকিস্তান শব্দ মুছে বাংলাদেশ লেখে। এ ভাষণের পর গোটা দেশ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় চলতে থাকে। এ ভাষণ গুটি কয়েক রাজাকার ছাড়া গোটা বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুধু বাঙালি জাতিকে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান নয়; এটি ছিল জাতির মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার দিক-নির্দেশনা।


আরও খবর