তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহী তানোরে মাধ্যমিক নিম্ম মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা বন্ধ করে শিক্ষক কর্মচারী মিলন মেলার নামে এমপি সভা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার সকাল থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউপির নাইস গার্ডেন পার্কে অনুষ্ঠিত হয় মিলন মেলা। একযোগে উপজেলার সকল শিক্ষক কর্মচারীদের নিয়ে রাজনৈতিক সভা করছেন এমপি ফারুক চৌধূরী বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন। এতে করে শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিভাবক মহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ডে এমপির বিরুদ্ধেও উঠেছে সমালোচনা, সেই সাথে রাজনৈতিক ভাবে শিক্ষক কর্মচারীরাই কি আগামী ভোটে এমপির মুল কর্মী হিসেবে মাঠে থাকবেন এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের। কারন গত ১৮ মার্চ শনিবার উপজেলার সকল কলেজ ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের মিলন মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
মিলন মেলায় আসা বেশকিছু শিক্ষকরা জানান, আমাদের বলা হয়েছে মিলন মেলা হবে, এবং শিক্ষার মান ও শিক্ষকদেরও কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু কোন শিক্ষককে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। নতুন কারিকুলামে পাঠদান হবে, সেই বই বা নির্দেশনা পায়নি। এসব বিষয়সহ শিক্ষকরা আরো কিছুই বিষয়ে কথা বলত, কিন্তু কাউকে কোন কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাহলে কিজন্য শিক্ষক মিলন মেলা বলা হল। পুরোটাই এমপি সভা হয়েছে, তিনি প্রায় ২ ঘন্টা সময় ধরে বক্তব্য দিয়েছেন। আগামীতে জাতীয় নির্বাচন নিজের পক্ষে রাখতেই সভা। যাকে বলে শিক্ষকদের টাকায় এমপির ব্যক্তিগত সভা।
সভায় না আসা আরেক শিক্ষক জানান, এক সাথে সকল স্কুল মাদ্রাসা ছুটি দিয়ে এভাবে সভা করে শিক্ষার মান বাড়বে কিভাবে। মিলন মেলায় যাও আর নাই যাও চাঁদার টাকা দিতে হয়েছে। বেআইনি ভাবে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে শিক্ষকদের যেতে বাধ্য করা হয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন দল ও মতের শিক্ষক রয়েছে, তারা কি সবাই এমপির পক্ষে থাকবেন। আর মিলন মেলা হোক কিন্তু পাঠদান ব্যাহত করে করার এখতিয়ার নেই।
জানা গেছে, উপজেলা মাধ্যমিক নিম্ম মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষক কর্মচারী কল্যান সমিতির আয়োজনে চান্দুড়িয়া নাইস গার্ডেন পার্কে অনুষ্ঠিত হয় মিলন মেলা। মাধ্যমিক সমিতির সভাপতি চাপড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ ওমর ফারুক চৌধূরী। সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন স্কুল সমিতির সম্পাদক আকচা স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসলাম উদ্দিন, মাদ্রাসা সমিতির সভাপতি সরনজাই দাখিল মাদ্রাসার সুপার সিরাজুল ইসলাম, সম্পাদক গোকুল দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল হামিদ।
উপজেলায় ৬৭ টি মাধ্যমিক ও ২৮ টি মাদ্রাসা বন্ধ করে হয় মিলন মেলা। সভাপতি জিল্লুর রহমান জানান, প্রতি বছর হয় এবারো হয়েছে, নিউজ হলে হবে। মাদ্রাসা সমিতির সিরাজুল ইসলাম জানান, এসব বিষয়ে আমার কিছুই বলার নাই। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অডিট আইন) নাদিয়া মাহমুদ জানান, সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার কোন আইন নেই। মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শশক (রাজশাহী বিভাগ) শহীদ লতিফ জানান, একযোগে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে কোন মিলন মেলা করার সুযোগ নাই। তদন্তে প্রমান হলে কঠোর ব্যবস্থা।
উপপরিচালক (প্রশাসন) জাকির হোসেনও একই ধরনের কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর আব্দুল খালেক সরকার জানান, বছরে একদিন প্রধান শিক্ষকরা ছুটি দিতে পারেন। কিন্তু একসাথে সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে মিলন মেলা বা সভা করার কোন আইন বা বিধান নেই।আমি ঢাকাতে আছি বিস্তারিত খোজ খবর নিয়ে এমন হয়ে থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।