মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃমেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী সড়কের বেহাল দশা বিরাজ করছে। গাংনীর কাথুলী থেকে মেহেরপুর শহর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কের বেশির ভাগ স্থানে ইট-খোয়া ওঠে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পয়নিষ্কাশন ড্রেন নির্মাণেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ১৮ গ্রামের মানুষসহ পন্য পরিবহন সংশ্লিষ্ট যানবাহন। সকল কর্মকা-ে পড়ছে ভাটা। সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে ৯ কোটি ৪ লক্ষ টাকা ব্যায়ে সড়ক সংস্কার ও বাজার এলাকায় পয়নিস্কানের জন্য ড্রেন তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের অধিনে পয়নিষ্কাশন ড্রেন নির্মাণ ব্যায় ধরা হয় ৬৪ লক্ষ টাকা। যার কার্যাদেশ পান ঢাকার আবেদ মনসুর কনষ্টাকশন। কাজ দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে কুষ্টিয়া এলাকার শহিদুল ইসলাম। কাজ শেষ হবার কথা চলতি বছরের মে মাসে।
স্থানীয়রা জানান, কায়েমকাটা মোড়ে থেকে দুটি সড়ক দু’দিকে গেছে। একটি সড়ক শোলমারি, শোভরাজপুর, তেরঘরিয়া গ্রামের দিকে গেছে। অন্যাটি কাথুলী ইউনিয়নের সহগলপুর, হাটপাড়া, গাড়াবাড়িয়া, কাথুলী বাজারে গিয়ে ঠেকেছে। এই সড়কটি দির্ঘ ১২ বছর ধরে খানাখন্দে ভরে থাকে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ বছরে একবার করে খানাখন্দগুলো ভরাট করে চলে যায়। কিন্তু নতুন করে কার্পেটিং করার অভাবে পুনরায় নতুন নতুন খানা খন্দ সৃষ্টি হয়ে যানচলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার মানুষের।
গত ফেব্রুয়ারী মাসের শুরুতে ওই সড়কের খানাখন্দ ভরাট করেছে সওজ। শুরু হয়েছে ড্রেন নির্মাণ কাজ। কাথুলী সড়কের কুলবাড়িয়া(যে অংশটি সদর উপজেলাধীন) ও হাটপাড়া বাজার এলাকায় ড্রেন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এই ড্রেন নির্মাণ নিয়ে এলাকার মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের মতে, যেখানে ড্রেন নির্মাণ করা জরুরী সেখানে না করে অন্যস্থানে ড্রেন করছে।
কাথুলী ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বর জিনারুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুমে সড়কের গাড়াবাড়িয়া দারুস সালাম মসজিদ এলাকার সামনে সব চেয়ে বেশি পানি জমে। ওই সময়ে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসিকে। মাঝে মাঝে যানবাহন উল্টে গিয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেখানে ড্রেন করা গুরুত্বপূর্ণ সেখানে না করে উচু স্থানে ড্রেন করছে। যা সাধারণ মানুষের কোন কাজে আসবে না।
গাড়াবাড়িয়ার কম্পিউটার দোকানি আলি হোসেন জানান, গত একযুগেও সড়কটিতে মানুষ আরামে চলাচল করতে পারেনি। বেশিরভাগ স্থানে খানাখন্দ। এবারে নতুন করে আরো একটি ঝামেলা তৈরি করেছে তারা।যেখানে ড্রেনের দরকার সেখানে না করে উচু যায়গায় ড্রেন নির্মাণ করছে। আগামী বর্ষায় এই সড়কদিয়ে মানুষ কেন কোন পরিববহনও চলাচল করতে পারবে না। একই অভিযোগ কাথুলী গ্রামের বাসিন্দা লিয়াকত হোসেনের। তিনি আরো জানান, এই সড়কে কোন কাজের ঠিক নেই। এমনিতে কয়েকস্থানে কার্পেটিং তুলে ফেলার কারণে চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। তার উপর উঁচু স্থানে ড্রেন নির্মাণ।
কাথুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, কাথুলী সড়কে যেখানে ড্রেন নির্মাণের জন্য এলাকাবাসি দির্ঘ দিন থেকে দাবি জানাচ্ছিল। সেই জলাবদ্ধ স্থানে সড়ক বিভাগ ড্রেন নির্মাণ না করে একটি উচু স্থানে ড্রেনটি নির্মাণ করছেন। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায়ে উন্নয়নকে ম্লান করে দিচ্ছেন এসব কর্মকর্তারা। কয়েকদফা তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর পরও তারা সেখানেই ড্রেনটি নির্মাণ করছে।জানতে চাইলে আবেদ মুনসুর কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম জানান, কাজ চলমান রয়েছে।
সড়কের উপরিভাগ তুলে ফেলে নতুন করে কার্পেটিং করা হবে। সওজের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুয়ায়ী ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। কোন কোন স্থানে ড্রেন হবে তা আগে থেকে সওজ কর্তৃপক্ষ নির্ধারন করে রেখেছে। এখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন গাফলতি নেই।
কোন অনিয়ম হয়নি মর্মে দাবি করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী (এসডি) মুহাম্মদ মনজুরুল করিম জানান, ড্রেন হওয়ার কথা বাজার এলাকায়। সওজ সব সময় তদারকি করে কাথুলী সড়কের তিন স্থানে ড্রেন নির্মাণের কাজ করছে। এর আগে সওজ কয়েকদফা এলাকায় ড্রেন নির্মাণের জন্য স্থান নির্বাচন করেছে। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি।