মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃব্রিটিস এমেরিকান টোব্যাকো (বিএটিবি) মেহেরপুরের এক কর্মকর্তার প্রলোভনে তামাক কিনে বিপাকে পড়েছেন তামাক চাষী ও ব্যবসায়ীরা। বেশি দরে তামাক কিনে বিএটিবি এখন কম দর দেওয়ায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য বিক্ষুদ্ধদের ম্যানেজ করতে নানাভাবে চেষ্টা করছেন বিএটিবি এরিয়া ম্যানেজার সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন মাঠকর্মী।
অভিযোগে জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার কালিগাংনী গ্রামের মানিক হোসেনসহ বেশ কয়েকজন তামাক চাষের পাশাপাশি তামাকের ব্যবসা করেন। এবার তামাক ক্রয় মৌসূমের শুরুতে বিএটিবি কর্মকর্তারা তাদের তামাকের দর যা দেয় তাতে মোটামুটি সšুÍষ্ট হয় চাষীরা। পরবর্তীতে দর নিয়ে নানা টালবাহানা এবং ওজনে বেশি নেওয়ার ঘটনায় চাষীদের মাঝে শুরু হয় অসন্তোষ।
ভুক্তভোগী কয়েজনের অভিযোগ, বিএটিবির কর্মকর্তাদের আশ^াসে তারা অন্য চাষীদের কাছ থেকেও তামাক ক্রয় করেন। এলাকার অনেক চাষীর বিএটিবি তামাক চাষের কার্ড নেই। এমন চাষীদের কাছ থেকে তামাক ক্রয় করে কার্ডধারীদের মাধ্যমে বিএটিবি মেহেরপুর বাইংয়ে তামাক বিক্রি করার প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন থেকেই চলমান। তবে মানিকসহ কয়েকজন চাষী যে দরে এবার তামাক কিনেছেন তার চেয়ে অনেক কম দর দেয় বিএটিবি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ঠরা। এতে চাষীদের মাঝে ক্ষোভ বাড়তে থাকে।
কালিগাংনী গ্রামের ইয়ারুল নামের এক চাষী বলেন, আমার চোষা তামুক প্রথমে ১৬০ টাকা কেজি দাম দেয়। দরাদম করার পর এক ম্যাডাম (বিএটিবি কর্মকর্তা) ১৭২, টাকা, ১৮৫ টাকা ও ১৯৫ টাকা কেজি দর দেয়। দাম কম হওয়ায় আমি তামাক বাড়িতে ফিরিয়ে এনে ২১৫ টাকা কেজি দরে অন্য পার্টির কাছে বিক্রি করি। এভাবে তারা চাষীদের তামাকের দর কম দিয়ে ঠকাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন চাষীরা।
একই গ্রামের গোলাম দাউস নামের আরেক কৃষকের অভিযোগ, বিএটিবিতে তামাক নিয়ে গেলে বেলের ভেতর থেকে কয়েকটি ছোট তামাক পাতা বের করে। তখন মণ প্রতি দুই কেজি কম দেওয়া এবং কম দাওয়ার কথা বলায় তামাক নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তিনি। পরে আবুল খয়ের টোব্যাকোতে সেই তামাক ২২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে আসি।
চাষীদের অভিযোগ, বিএটিবি চাষীদের নানাভাবে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে। ক্রয় মৌসূমে তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ায় চাষীদের সাথে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করছে। এতে অনেক চাষী বিপাকে পড়েছেন।
এদিকে বিএটিবি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী চাষীরা রোববার সংবাদ সম্মেলেন ডাক দেয়। এ খবর পেয়ে বিএটিবি কর্মকর্তারা নানাভাবে চাপ দিয়ে চাষীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা তদবির শুরু করে।
কালিগাংনী গ্রামে গিয়ে তারা চাষীদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও চাষীরা তাতে সাই দেয়নি। বিএটিবি কর্মকর্তা ও মাঠকর্মীরা এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছেন চাষীরা যাতে কোথাও লিখিত অভিযোগ না করে।
তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলেও তারা ফোনটি রিসিভ করেন নি।