
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেনের শেরুতে শেয়ারবাজারে বড় ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত সবকটি মূল্যসূচকের পতন ঘটেছে। মূল্যসূচকের পতনের পাশাপাশি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দরপতন হয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। এর মাধ্যমে ঈদের পর লেনদেন হওয়া আট কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
ঈদের পর থেকেই শেয়ারবাজারে টানা দরপতন ঘটলেও সরকার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত জানানোর পর পতনের মাত্রা বেড়ে যায়। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে গত সোমবার সারাদেশে এলাকাভিত্তিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় সরকার।
সরকারের এমন ঘোষণা আসার পর সোমবার শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। সেই সঙ্গে চরম ক্রেতা সংকটে পড়ে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। মঙ্গলবারও এ ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে মূল্যসূচকের বড় পতন হয়। পরের কার্যদিবস বুধবারও দরপতন হয় শেয়ারবাজারে।
এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক ৫১ পয়েন্ট বেড়ে যায়। আর দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় ৭০ শতাংশের বেশি প্রতিষ্ঠান।
লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে এমন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিলেও তা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকেনি। বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের বিক্রির চাপে প্রথম আধা ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন ঘটতে থাকে। ফলে ছোট হতে থাকে দাম বাড়ার তালিকা। বিপরীতে দাম কমার তালিকা বড় হতে থাকে।
লেনদেনের শেষ সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে এ প্রবণতা। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১১৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৯টির এবং ৪৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১২৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২০০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক কমলেও বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৬৭৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬৬৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সোনালী পেপারের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪০ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির ২৩ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- কেডিএস এক্সেসরিজ, তিতাস গ্যাস, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, প্রাইম ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম টেক্সটাইল, ওরিয়ন ইনফিউশন ও লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ।
এদিকে, সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ১১ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৭৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টির এবং ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।