
দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় রাস্তায় সাইড দিতে দেরি হওয়ায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের কাভার্ডভ্যান চালককে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন বিরল উপজেলার তেঘরা নারায়ণপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে শাহিনুর আলম মানিক (৪২) ও বোচাগঞ্জ উপজেলার মুর্শিদহাট গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে রনি হাসান (২৮)। অন্যান্য আসামিরা পলাতক।
গত ২১ ও ২২ জুন নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে বিরল থানা পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কাঠাগারে পাঠানো হয়।
এরআগে ২০ জুন বিকেল পৌনে ৩টার দিকে বিরল উপজেলার ধুকুরঝাড়ী পাওয়ার স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মোস্তফা টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী থানার বড়ইযান গ্রামের মোকাদ্দেছ আলীর ছেলে। আহত চালকের সহকারী আমিনুর রহমান রংপুরের পায়রাবন্দ এলাকার এমদাদ আলীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, রানীশংকৈল উপজেলায় মালামাল ডেলিভারি দিয়ে দিনাজপুরের দিকে আসছিলেন চালক মোস্তফা ও তার সহযোগী আমিনুর রহমান। পথে ধুকুরঝাড়ী পেট্রল পাম্পের সামনে চারটি মোটরসাইকেল কাভার্ডভ্যানকে ওভারটেক করতে হর্ন দিচ্ছিল। তবে রাস্তার বাঁ পাশে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান থাকায় তাদের সাইড দেওয়া সম্ভব হয়নি।
পাওয়ার স্টেশনের সামনে যেতেই চার মোটরসাইকেলে থাকা লোকজন কাভার্ডভ্যানটির গতিরোধ করে। এ সময় ছয়-সাতজন মিলে চালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করেন। তারা চালকের ঊরুতে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।
পরে জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে অ্যাম্বুলেন্স এসে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোস্তফাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গত ২১ জুন নিহত মোস্তফার বড় ভাই কাওছার আলী আবু রায়হান বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা নম্বর ১৭/৯৮।
মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে। অন্যান্য আসামিরা পলাতক।
এ বিষয়ে বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সাইড দেওয়ার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আমরা আসামিদের শনাক্ত করতে পেরেছি। দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্যান্য আসামিরা আত্মগোপনে থাকলেও কারা এবং মোট কয়জন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আমরা তা নিশ্চিত হয়েছি। আসামিরা যে কোনো সময় গ্রেফতার হবেন।’
গ্রেফতার আসামিদের মামলার স্বার্থে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে কি না তা জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘রিমান্ড নয়, অন্যান্য আসামিরা গ্রেফতার হলে একত্রিত করে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যবস্থা করা হবে। তখনই বোঝা যাবে রিমান্ড চাওয়ার প্রয়োজন আছে কি না। তবে দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার ও অভিযোগপত্র দিতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী।’