নিজস্ব প্রতিবেদক:রেল দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রেললাইনের উপর দিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলতে গিয়ে দুর্ঘটনা হয়। রেলগেট পড়া থাকলেও পাশ থেকে গাড়ি ঢুকিয়ে দিয়ে দুর্ঘটনা হয়। এসব বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আজ রোববার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি চিলাহাটি-ঢাকা-চিলাহাটি রুটে নতুন আন্তঃনগর ট্রেন ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ভারতে কী ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরকম দুর্ঘটনা কিন্তু সচরাচর চোখে দেখা যায় না। কারণ ভারতে সবই তো ইলেক্ট্রিক ট্রেন। তিনটি রেল একসঙ্গে দুর্ঘটনায় কবলিত হয়ে প্রায় ২৮৮ জন মানুষ মারা গেছেন। যারা মৃত্যুবরণ করেছেন আমি তাদের প্রতি শোক জানাচ্ছি। তাদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমি চিঠি দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে, সরকারের পক্ষ থেকে এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে শোক বার্তা পাঠিয়েছি। এ ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমাদের দুজন বাংলাদেশি ওখানে আহত আছেন। এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা সত্যি চিন্তার বিষয়।
তিনি বলেন, ‘তারপরও আমি বলবো যারা রেল গাড়ি পরিচালনা করেন তাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা, তাদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা ও যথেষ্ট লোকবল নেওয়া এগুলোর দিকে নজর দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, যোগাযোগব্যবস্থা সহজ করতে দেশজুড়ে তার সরকার রেল নেটওয়ার্ক তৈরি করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকার গঠন করার পর থেকে রেলপথ, সড়ক পথ, নৌপথ সবকিছু যাতে চালু হয় তার ব্যবস্থা নিয়েছি। আমাদের বিমানবন্দরগুলো উন্নত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে জ্বালানি ও নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ও লোডশেডিংয়ে দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। একদিকে মূল্যস্ফীতি আর অপরদিকে এখন বিদ্যুৎ নেই; এই দুটো কষ্ট আমার দেশের মানুষ পাচ্ছে। আর একবার যদি বিদ্যুতের পাঙ্খায় বাতাস খাওয়ার অভ্যাস হয়ে যায় তারপরে না পেলে তো কষ্ট হয়ে যায়। এটাও তো বাস্তব কথা।
তিনি বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্বব্যাপী গ্যাস, তেল, কয়লা সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়াতে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না- এরকমই অবস্থা দাঁড়িয়েছে। যার জন্য আমি জানি এই গরমে মানুষের কষ্ট হচ্ছে।
এর মধ্য দিয়ে চিলাহাটি-ঢাকা রেলপথে ‘চিলাহাটি এক্সপ্রেস’ নামে নতুন একটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু হয়েছে। দূর গন্তব্যের ট্রেনটি চিলাহাটি থেকে ছেড়ে ডোমার, নীলফামারী, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, জয়পুরহাট, সান্তাহার, ঈশ্বরদী বাইপাস ও ঢাকা বিমানবন্দর যাত্রা বিরতি করে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির ছাড়াও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া নীলফামারী প্রান্তে অন্যদের মধ্যে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ট্রেনটি সাজানো হয়েছে ১১টি কোচ দিয়ে। এতে থাকছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি শয়ন কোচ, একটি স্নিগ্ধা এসি চেয়ার কোচ ও বাকিগুলো শোভন শ্রেণির কোচ।