
অবহেলা নয় তরুণ প্রজন্মকে সাংবাদিকতায় দিতে হবে
নজরুল ইসলাম তোফা:
বাংলাদেশের পাশাপাশি সমগ্র বিশ্বের সৃষ্টিশীল মানুষ কি়ংবা লেখক'রা
সবকালেই যেন সৃজনশীল লেখা জনসাধারণের নিকট নান্দনিক রূপেই হাজির করেছে। কিন্তু এই
লেখকেরা তাদের জীবদ্দশায় আর্থিক অনটনেও ভুগেছে। উদাহরণ স্বরূপ, পাশ্চাত্যের গি দ্য
মোপাসাঁ, ফিওদর মিখাইলোভিচ দস্তয়েভস্কির সহ প্রাচ্যের নজরুল, শরৎচন্দ্র বা
জীবনানন্দের অদ্ভূত এক দারিদ্র্য তার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু, কালে কালে
পাশ্চাত্যের লেখকসমাজের আর্থিক সংকট অনেকাংশে দূর হয়েছে। সেখানে
অনেক দেশেই লেখা লেখিটা পেশা হিসেবে দাঁড়িয়েছে। আর আমাদের দেশে, সেটা এখনও
পুরোপুরি হয়নি বলা চলে। তবে এ লেখা লেখির জগতে এখন 'তরুণ প্রজন্মরা' অনেকেই যেন
আগ্রহ নিয়ে কাজ করছে। সুতরাং লেখালেখি এদেশের এমন একটি পেশা যেখানে উপার্জনের
সম্ভাবনা প্রায় নেই। তবে যারা লেখা লেখি ভালো বাসে প্রানের তাগিদেই লিখে থাকে,
অর্থের লালসায় নয়। বিকল্প উদাহরণ ছাড়া এ কথাটি আজকে জেনেবুঝেই বলছি। কেনো যেনো
আজ হঠাৎ করে মনে হলো বাংলাদেশের সাংবাদিক ও পাঠকদের একটা গল্প শোনাবো। বাংলাদেশে
প্রচুর পরিমাণে 'সংবাদ পত্র এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে' সমৃদ্ধ হয়েছে। বলাটা
বাহুল্য হবে কতটা যে নিয়মিত অনিয়মিত দৈনিক, সাপ্তাহিক ও ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন
পত্রিকাসমূহ এ বা়ংলাদেশে ইয়াত্তা নেই। আর 'জাতীয় দৈনিক ও ইলেক্ট্রনিক' মিডিয়া
সংখ্যা গুনে বলা সম্ভব না। এই গুলো মিডিয়ার প্রায় সকলেরই যেন স্থানীয় প্রতিনিধি
রয়েছে। মিডিয়ার জন্মহার বৃদ্ধির সাথে সাথেই প্রয়োজন হয়ে পড়ে সাংবাদিক। কিন্তু, নাম
মাত্র তারা সাংবাদিক, তাদেরকে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। তাদের মধ্যে কেউ যদি
পারিশ্রমিক পায় সেইটা যেন তাদের সৌভাগ্য।
ভাগ্যবান লেখক,
কলামিষ্ট ও সাংবাদিকগণরা হয়তোবা বলবে যে এইদেশে- প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ লিখেই তো
সফলতা অর্জন সহ বহুত অর্থ উপার্জন করেছে, অথবা অন্য দু’একজন 'লেখক, কলামিষ্ট ও
সাংবাদিকের নাম' উচ্চারণ করে বলতে পারে, এখনও ক্লান্তিহীনভাবেই তো তারা লিখে চলে।
অবশ্যই এ গুলো দু’একটা উদাহরণটা ব্যতিক্রম। কিন্তু এটাও মনে রাখতেই হবে যে,-
'ব্যতিক্রম উদাহরণ দিয়ে সামাজিক রূপ ফুটে ওঠে না'। তবে তারা কষ্টকে আড়াল করে,
লেখাটাকেই পেশা হিসাবেই বেছে নিয়েছে, এটাই সত্য। বলা যায় তারা আমাদের আইডল বা
দিকনির্দেশনার পাথেও। আর তরুণপ্রজন্মের হাজার হাজার লেখকদের অনুপ্রেরণার অগ্রদূত।’
আবারও বলি ব্যতিক্রম
কখনো উদাহরণ হতে পারে না।লেখকের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণেই
শেষ বয়সে উন্নত চিকিৎসার জন্যেই পত্রিকা'র পাতায় সাহায্যের আবেদন দাঁড় করাতে হয়।
এই দেশের লেখক, কবি, কলামিষ্ট ও সাংবাদিকদের এটাই নিয়তি। তারা আমৃত্যু স্বাধীনচেতা
মানসিকতায় কেন এ বাংলার জমিনে বেঁচে থাকার অধিকারটুকু হারিয়ে ফেলে। তারা 'মনের
গহীনে গোপন ভাগ্যের অধীনস্থ' হবে। এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ পেশায় পেশাদার হওয়া
মানুষের সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পেলেও ভাগ্যের উন্নয়নকে রাষ্ট্রীয় ভাবে ভাবা
উচিত। সুতরাং তারা যোগ্যতার মানদন্ড আর ধরে রাখা যায় না। তাই- লেখক, কবি, কলামিষ্ট
কি়ংবা সাংবাদিক সহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তি'রা প্রয়োজনের তাগিদে তাদের সৃজনশীল লেখালেখি
পাঠকদের কাছে উপস্থাপনে যেন ব্যর্থ হয়। তবে বর্তমান প্রজন্মের বেশকিছু লেখক, কবি,
কলামিষ্ট এবং সাংবাদিকরা বিভিন্ন পেশায় কাজ করছে তারা সবাই যে অযোগ্য কিংবা
হতদরিদ্র নয়। বেশ কিছু ট্যালেন্ট লেখক, কবি, কলামিষ্ট ও সাংবাদিক দেখা যায় যারা
স্বশিক্ষিত হয়ে দক্ষতার সাথেই কাজ করছে। তারা চেষ্টা করছে নিজেকে যোগ্য হিসেবে
দাঁড় করবার জন্য।
তারা বিশেষ কিছু কারণে
তাদের সৃজনশীল চেষ্টার বার বার বাধাগ্রস্ত করে বেশকিছু অসাধু মানুষ। এই বিষয়টি
নিয়েই মূলত লিখার চেষ্টা করছি। প্রথমত আজ থেকেই ৪০ বছর আগে যখন এতো আধুনিক
ব্যবস্থা যোগাযোগ ছিল না, তখনও সাংবাদিক ছিল, সংবাদপত্রও ছিল। এ ধারণার
সা়ংবাদিকরা কাজেকর্মে খুবই দক্ষ ছিল। শুধুই সা়ংবাদিকদের নিয়ে আলোচনার
উদ্দেশ্যটা হলো, এমন জগতে কিছু অসাধু মানুষের ক্রাইম করার প্রবনতা দিন দিন বেড়েই
যাচ্ছে। আগেরযুগে তারা চেষ্টাকে মূখ্য করে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নেই সত্য লেখা
প্রকাশ করে যথাযত ভাবে কাজ করতো। তাদের নিজের স্থানীয় ''সংবাদপত্র'' গুলো ছিল
একধরনের 'পাঠশালা'। সেইখনেই তারা কর্ম করে বা পাঠ গ্রহন করে বাইসাইকেল ও পায়ে
হেঁটে যেন যোগাযোগ করতো। তখনো কোনো সাংবাদিকরা বেতন পায় এটা কেউ ধারনা করতো না। আর
সত্য কথা হলো, সাংবাদিকরা পেশা জগতে থাকলে বিয়ের জন্যে "পাত্রী পাওয়া"
কঠিন ছিল। সেই সময়েই যারা পরিশ্রম করেছে তাদের মধ্যে অনেকে এখনো এমন পেশায় আছে।
কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্য ২০২০ সালে এসে তারা ভয়াবহ করোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেক
সুদক্ষ সাংবাদিকরা চীর বিদায় নিয়েছে। তাদের কাছে আমাদের অনেক শিক্ষার নেওয়ার
প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তাদের লেখা ধ্যান ধারনা সাহস সংবাদ নির্বাচন ছিল ভিন্ন
ধরনের। এখনকার এই যুগের সাংবাদিকদের নিকট ''রূপকথার গল্প'' মনে হতেই পারে।
বর্তমানে সাংবাদিকদের
লেখালেখির অনেকটা প্লাটফর্ম সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু তাদের হিংসার পরিমাণটাও
বেড়েছে।কেউ কারো ভালো সহ্য করতে পারে না। জনপ্রিয় এবং ব্যতিক্রম কিছু ''অনলাইন
নিউজ পোর্টাল'' আছে তাদের ভাবি আলাদা। কি হনুবে এমন ভাব। এখানে যারা লেখে তাদের
নিয়মিত লেখক সম্মানী দেয়া হয় না। প্রয়োজনে তারা 'কৌশলে টাকা চায়'।
আবার কেউ যদি লেখককে টাকা দেয় তো 'মাস ছয়েক কি়ংবা বছর' ধরে অপেক্ষায় থাকতে হয়।
মাস শেষ হলেই প্রাপ্য সম্মানী পাওনা সেটা নিয়ে ছিনি মিনি খেলা চলে। এমন কথাটি
জানতে পেরে ব্যক্তিগতভাবেই সাংবাদিকদের পক্ষ নিয়ে ফোন করেও বিস্মিত হয়েছি। অনেকেই
ফেসবুকের ইনবক্সে আমাকে জানালে কষ্ট লাগে।
আমি ব্যক্তিগতভাবেই
লিখে যাচ্ছি কিন্তু টাকার প্রত্যাশা না করলেও কিছু টাকাপয়সা দিলে কারনা ভালো
লাগে, তো দেখা যায়, উল্টো আমাদের কাছেই চায়। তাই বলি-
৮ বছরের লেখা লেখির জগতে আজ অনেকটাই ক্লান্ত। আগে সাংবাদিকতার গুনগত পরিবর্তন
এতোটা খারাপ ছিল না। বেশ ক'টি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ হতো তাদের যেন আদর্শ ছিল।
'সনাতন মূদ্রণ' পদ্ধতি পরিবর্তিত হয়ে কম্পিউটার অর্থাৎ ডিজিটালযুগে প্রবেশ করে যেন
শুরু হয়েছে সব ঝামেলা। কিছু সাংবাদিক স্থানীয়ভাবেই স্বল্প পারিশ্রমিক পেতে শুরু
করলেও এখন সেটাও বন্ধ করা জন্য প্যাইতারা চালায়। এমন নতুন প্রযুক্তির সাথে মেধা
সম্পন্ন সাংবাদিকরা নিজেদের সমন্বয় করতেই হিমশিম খাচ্ছে। তাদের পেশাদারিত্বের
প্রতিও অবহেলা বাড়ছে। বেশকিছু নতুন সাংবাদিকরা পেশায় অন্তর্ভুক্ত হয়, তারা আজকে
মানুষের দ্বারেই ক্রাইম করছে। সত্য কথা এমন ভাবে বলার সৎ সাহসটাও সাংবাদিকদের নেই।
যারা না কি এখনো দাপটের সঙ্গেই পেশায় আছে তারা মিডিয়ার বিস্ফরন ঘটানোর জন্য
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এর দ্বারস্ত হচ্ছে।সাংবাদিকতায় এই ঠান্ডা যুদ্ধ শুরু হয়
প্রিন্ট আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মধ্যে। বলা যায় যে স্থীর ক্যামেরা হাতের
সাংবাদিকের হাতে চলে আসে "চলমান ক্যামেরা", ৩৫ ফ্লিল্ম দুনিয়া সমাপ্ত
হয়ে এখন- ডিজিটাল ক্যামেরায় পদার্পন। খরচ কমে যায়, সাংবাদিকরা পায়ে হাটা আর
বাইসাইকেল ভুলেই গাড়ী আর মটরসাইকেল আর মোবাইল ফোন ইন্টারনেট জগতে ঢুকে পড়ে।
অতীতের সময় থেকে এই
মূহুর্ত পর্যন্ত ক্রমে ক্রমেই যেন আধুনিকতায় প্রবেশ করেছে, সুযোগ সন্ধানী বেশ কিছু
সাংবাদিকরা। অবশ্যই বুকটা ভরে যায়, যখন দেখি এই সাংবাদিকরা ঐ জায়গার সাংবাদিক
হয়ে নানা চ্যানেলে লাইভ সংবাদে ক্যামেরার সামনে দাড়িয়েই তথ্য বিলিয়ে দিচ্ছে।
বর্তমানে বসেই তারা যেন ভবিষ্যত দেখতে পান, ভালোই লাগে, অথচ এ দেশের কোনো লেখক দৃঢ়
কণ্ঠে বলতেই পারবেন না, পত্রিকা গুলোর করুন দশায় এসে দাঁড়িয়েছে। উপযুক্ত
সম্মানী ও প্রকাশক করবার কিছুটা ঝামেলা থেকে রেহাই পেতেছে। আর একটা কথা, এখন যারা
সা়ংবাদিকতায় ভাল কাজ করবার জন্যে খুব চেষ্টা করছে। তারা শেখার আগেই যেন তেষ্টা
মেটানোর দিকে বেশি ঝুকে পড়ছে। সুতরাং, তাড়াতাড়ি স্মার্ট ফোন আর কত বেতন হবে এইসব
কথা আগেই শর্ত দিয়ে ফেলছে। শিখলে, জানলে, বুঝলে, পারলে এইসব সুবিধা আপনা আপনি এসে
যাবে। নিজের মান বৃদ্ধিটাই জরুরি বিষয়। অভাবে থেকে বাহাদুরি নয়, নতুন কিছু করার
চেষ্টাতেই প্রস্তুত হই। নতুন কিছুর পরিবর্তন এনে 'আবিস্কার করি'। সুতরাং অভাবে
স্বভাব নষ্ট না করে এমন সা়ংবাদিকতার পেশাটাকে 'পরিচ্ছন্ন রাখি'। বর্তমানে এই
সা়ংবাদিকতায় তরুণপ্রজন্মের অনেক জায়গা এখনো খালি আছে। এই দেশে প্রকাশনা
শিল্পটাকে সমৃদ্ধ করি। লেখালেখি পেশা নেশা করি।
লেখকঃ
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি
ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।
এই বিভাগের আরও খবর

অবহেলা নয় সাংবাদিকতায় গুরুত্ব দিন

বগা ইউনিয়নের ২ নং বানাজোড়া ওয়ার্ড মেম্বার প্রার্থীর দোয়া কামনা

প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুর কথা শুনে স্বামীর মৃত্যু!পাশাপাশি চিরশায়িত হলেন তারা

ধর্ষণের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই স্কুলছাত্রীর মৃত্যু : ময়নাতদন্ত রিপোর্ট

ডেমরায় সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং সাঈদ বাহিনীর হামলা লুটপাটের ঘটনায় আহত ৪, গ্রেফতার ৩

কুমিল্লা ব্রাম্মনপাড়া চান্দলা গ্রাম কে বদলে দিতে কাজ করছে চান্দলা প্রবাসী শ্রমজীবী সমবায় সমিতি

কেটিভি বাংলার চেয়ারম্যান মামুনুর হাসান টিপু’কে কদমতলী থানা রিপোর্টার্স ক্লাব এর সংবর্ধনা

জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

কেটিভি বাংলা’র ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন

১৯৭১ থেকে ২০২১ রাষ্ট্রের বয়স যখন ৫০ বছর ক্যালেন্ডারে হুবহু মিল

অবহেলা নয় তরুণ প্রজন্মকে সাংবাদিকতায় দিতে হবে

অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো কেটিভি বাংলা’র ৪র্থ বর্ষপূতি

একনেকে তিন হাজার ৩০৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন

এইচএসসির ফলাফল বিষয়ে মঙ্গলবার কথা বলবেন শিক্ষামন্ত্রী

কে কাকে বিয়ে করবে এটা অন্যকেউ কেন নির্ধারন করে দিবে ?

ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে নলতায় মতবিনিময় করলেন তুফান নলতা

বড় রঘুনাথপুর গ্রামের আমজেদ শরীফের মৃত্যুতে শোক

পটুয়াখালীর বাউফলে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, ধর্ষক গ্রেপ্তার

জোড় করে অবসরে পাঠানো,মাতুয়াইল হাজী আঃলতিফ ভুইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ অধ্যক্ষের বিবৃতি

২৫ বা ২৬ জানুয়ারি দেশে সিরামের ভ্যাকসিন আসবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভারতে তিনদফায় কিশোরীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ

জাতীয় সংসদের শীতকালীন ও বছরের প্রথম অধিবেশন বসছে আজ বিকেলে
