
কৃষিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, যে আদর্শকে বুকে নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম, সেই আদর্শকে বিনষ্ট করার জন্যই ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। কারণ তারা জানতো, শেখ কামাল বেঁচে থাকলে ফিনিক্স পাখির মতো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ঝাঁপিয়ে পড়বে। এ পথটা রুদ্ধ করতেই তারা শেখ কামালকে হত্যা করে।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি উপস্থিত সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানান।
এসময় বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ত্যাগকে স্মরণ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় পাকিস্তানি মানবাধিকার কর্মী আহমেদ সেলিমের বরাতে বলেন, ১৯৭১ সালের ২৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধুকে জেলখানা থেকে শিহালা রেস্ট হাউজে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তিনি প্রথম তিনটা পত্রিকা এবং একটা রেডিও পান। রেডিও’র নব ঘুরানোর সময় তিনি শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বর শুনতে পান। যাতে শেখ হাসিনা বলছিলেন বাংলাদেশে পাক বাহিনীর অত্যাচারের কথা। তখন বঙ্গবন্ধু টের পান শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন। একটা পরিবার দেশের জন্য কী পরিমাণ ত্যাগ স্বীকার করতে পারে, তা বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে না দেখলে বোঝা যায় না।
টিএসসিতে ছাত্রলীগের করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা প্রদান করে তিনি বলেন, মৌলবাদীরা টিএসসিতে মাঝেমধ্যে বিষাক্ত শ্বাস ফেলে। ছাত্রলীগের বন্ধুরা খেয়াল রাখবেন, যেন মৌলবাদীদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ না হয়। তাদের অপছায়া থেকে যেন টিএসসি সবসময় মুক্ত থাকে। কারণ এই টিএসসি শেখ কামালের স্মৃতি বহন করে। এখানকার সর্বস্তরে ছড়িয়ে আছে শেখ কামালের স্মৃতি।
বেঁচে থাকলে কর্ম এবং গুণে শেখ কামাল মার্শাল টিটোকে ছাড়িয়ে যেতেন বলে উল্লেখ করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, যুগোস্লাভিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোসেফ টিটো শেখ কামালকে নিজের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। যেন কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করে শেখ কামাল টিটোর মতো লড়াকু সৈনিক হতে পারে। শেখ কামাল হয়েছিলেনও তাই। কিন্তু তার এই যোগ্যতাটুকুকে হানাদাররা কাজে লাগাতে দেয়নি। কর্ম, গুণে টিটোকে ছাড়িয়ে যাবার পূর্বেই ঘাতকের বুলেটের আঘাতে প্রাণ যায় শেখ কামালের।
মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে সত্য ইতিহাস সংরক্ষণের তাগিদ জানিয়ে ড. খন্দকার বজলুল হক বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, তারা বাঙালি নয়, তারা বাংলাদেশি, তথা রূপান্তরিত পাকিস্তানি। আপনারা এদের থেকে সাবধানতা অবলম্বন করুন। নিজে ইতিহাস সৃষ্টি করুন এবং এটাকে সংরক্ষণও করুন। আমরা ইতিহাস সংরক্ষণ না করলে আমাদের শত্রুরা, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধের শক্তি ইতিহাস বিকৃত করবে। এভাবে আমরা এগোতে পারবো না।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরীসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।