মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃবিএ পাশ করার পর একটি বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন মেহেরপুরের গাংনীর মহসিন আলী। দু’বছর শ্রম দেয়ার পরও কোন বেতন ভাতা না পাওয়ায় চাকরী ছাড়েন তিনি। পরে প্রথমে ১০ কাঠা জমিতে কাশ্মিরী জাতের কুল চাষ করে। এতে বেশ লাভবান হওয়ায় তিনি দুবিঘা জমিতে শুরু করেন কুল চাষ। কাশ্মিরী ও বলসুন্দরী জাতের কুল চাষ করে নিজেই পরিচর্যা করেন। রোগ বালাই অত্যন্ত কম। বাগান থেকে ব্যবসায়িরা কুল সংগ্রহ করেন। প্রতিকেজি কুল বিক্রি করেন ১০০ টাকা দরে। চলতি বছরে অন্ততঃ তিন লাখ টাকা আয় করবেন বলে তিনি আশাবাদী।
শুধু মহসিন আলী নয়, তার মতো এলাকার শিক্ষিত ও বেকার যুবকরা চাকরীর আশা না করে বা বিদেশ না গিয়ে ঝুকে পড়েছে কুল চাষে। এতে পরিশ্রম কম আর লাভ বেশি। অনেকেই আবার সাথি ফসল হিসেবে কুলের সাথে অন্যান্য ফসল আবাদ করছেন। আবার অনেকেই আসছেন কুল চাষের পরামর্শ নিতে। কৃষি অফিসও দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় পরামর্শ।
জেলার সবচেয়ে বড় কুল চাষি মালসাদহের বশির আহমেদ জানান,তনি ১৬ বিঘা জমিতে কুল জাষ করেছেন। প্রথমে ৩ বিঘা জমিতে কুল চাষ করে লাভবান হলে ক্রমেই কুলের বাগান বৃদ্ধি করেন। কাশ্মিরি, আপেল ও বলসুন্দরী জাতের কুল চাষ করছেন। এতে খরচ অন্যন্ত কম কিন্তু লাভ বেশি। পাখির অত্যাচার হলেও কামলা রেখে পাখি তাড়াতে হয়। তিনি শিক্ষিত ও বেকার যুবকদেরকুল চাষের আহবান জানান।
কুল চাষি সাহেবুল ইসলাম জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে কুল চাষ করছেন। বাগানে কুলের সাথে বেগুন মুলা চাষ করছেন তিনি। মাঝে মাঝে রোপণ করেছেন লিচু গাছ। এক খরচেই তিন ফসল আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন তিনি। চলতি মৌসুমে আড়াই লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছেন। সেই সাখে লক্ষাধিক টাকার সবজিও বিক্রি করেছেন একই চাষি।
গাংনী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, জেলায় ২৩৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হচ্ছে। রোগ বালাই অত্যন্ত কম আর অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়ায় অনেকেই ঝুকে পড়েছেন কুল চাষে। এ উপজেলায় বেশ কয়েক জাতের কুল আবাদ হয়। তন্মধ্যে কাশ্মিরী ও বল সুন্দরী চাষ হচ্ছে বেশী।