মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া-সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের চারাগাঁও সীমান্তে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি টাকার কয়লা পাচাঁরের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মামলার আসামীরা। তারা গত ২বছর যাবত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি করে কোটিপতি হয়েগেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে শুল্কস্টেশনের বৈধ ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে- জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের জঙ্গলবাড়ি, লামাকাটা, কলাগাঁও, এলসি পয়েন্ট, বাঁশতলা ও লালঘাট এলাকা দিয়ে অবৈধ ভাবে পাচাঁরকৃত প্রায় ২হাজার মেঃটন অবৈধ কয়লা চোরাকারবারীদের বসতবাড়ি ও উঠানে মজুত করে রাখা হয়েছে। নানান জটিলতার কারণে গত ৭দিন যাবত অবৈধ চোরাই কয়লা শুল্কস্টেশনের ডিপুতে ঢুকতে পারছেনা।
আজ সোমবার (১ জানুয়ারী) রাত ১২টার পর থেকে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের পাশে অবস্থিত সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালান মামলার আসামী রফ মিয়ার ডিপুসহ শুল্কস্টেশনের আরো একাধিক ডিপুতে নিয়ে অবৈধ কয়লা মজুত করার জন্য পায়তারা শুরু করেছে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মামলার আসামী আইনাল মিয়া, সাইফুল মিয়া, রিপন মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু, শামসুল মিয়া ও শরাফত আলীগং। এজন্য দুপুর থেকে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম ভাংগিয়ে প্রতি ট্রলি চোরাই কয়লা (৩ মেঃটন) থেকে ৭হাজার টাকা করে চাঁদা উত্তোলন শুরু করেছে সোর্স আইনাল মিয়া ও রফ মিয়া। কোন ভাবে রাতের আধারে অবৈধ কয়লা শুল্কস্টেশনের ডিপুতে মজুত করতে পারলেই হয়ে যাবে বৈধ। এছাড়াও প্রতিদিন চারাগাঁও ছড়া দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী একাধিক মামলার আসামী বাবুল মিয়া ২থেকে ৩শ বস্তা কয়লা পাচাঁর করে তার নিজ বসতবাড়ি ও তার সহযোগী আরো একাধিক চোরাকারবারীদের বাড়িতে মজুত করছে। এজন্য পাচাঁরকৃত ১ বস্তা (৫০ কেজি) অবৈধ কয়লা থেকে বিজিবি ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে ৭০টাকা করে চাঁদা নিয়ে সোর্স বাবুল মিয়া। কিন্তু চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বন্ধ করাসহ একাধিক মামলার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোড়ালো কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে শুল্কস্টেশনের শতশত বৈধ ব্যবসায়ীরা। গত বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্ভর) ভোর ৫টায় এই সীমান্তের লালঘাট ও বাঁশতলা এলাকা দিয়ে প্রায় ২শ মেঃটন ও গত বুধবার (২৭ ডিসেম্ভর) ভোরে কলাগাঁও, জঙ্গলবাড়ি ও লামাকাটা এলাকা দিয়ে প্রায় ৮শ মেঃটন কয়লা পাচাঁর করে শুল্কস্টেশনের ডিপুতে মজুত করেছে উপরের উল্লেখিত সোর্সরা বাহিনী। কিন্তু এব্যাপারে নেওয়া হয়নি আইনগত পদক্ষেপ। তবে শীগ্রই চারাগাঁও ক্যাম্পের পাশে অবস্থিত সোর্স রফ মিয়া ও তার সহযোগীদের একাধিক ডিপুসহ জঙ্গলবাড়ি, কলাগাঁও, লামাকাটা, লালঘাট ও বাঁশতলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করলে কমপক্ষে ৫কোটি টাকার অবৈধ কয়লা উদ্ধার করাসহ সোর্সদের বাড়ি থেকে লাখলাখ টাকা জব্দ করা সম্ভব হবে জানাগেছে। তাই এব্যাপারে সংশ্লিস্ট প্রশাসনের উপরস্থ কর্মকর্তাদের সহযোগীতা জরুরী প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বৈধ ব্যবসায়ীরা।
এব্যাপারে জানতে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯- ৬১৩১২৬) নাম্বারে কল করলে কমান্ডার মোতালিব খান বলেন- আমাদের বিজিবি ক্যাম্পের কোন সোর্স নাই। আইনাল মিয়া, রফ মিয়া, সাইফুল মিয়া, রিপন মিয়া, আনোয়ার হোসেন বাবলু ও বাবুল মিয়াসহ কাউকেই আমি চিনিনা। আমি কাউকে অবৈধ পথে কয়লাসহ কোন মালামাল পাচাঁরের অনুমতি দেইনি। তাহিরপুর থানার ওসি কাজী নাজিম উদ্দিন বলেন- থানাপুলিশের কোন সোর্স নাই। যারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে কয়লার পাচাঁরের পর পুলিশের নাম ভাংগিয়ে চাঁদাবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।