Logo
আজঃ শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শিরোনাম

কয়েক যুগ ধরে এক উঠানেই চলছে তিন ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা-ধর্মীয় উৎসব

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ ফেব্রুয়ারী 2০২3 | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | ২৩০জন দেখেছেন

Image

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি : কুয়াকাটায় সহাবস্থানে থেকে অনন্য এক ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আসছে কুয়াকাটা সাগর সৈকত মসজিদ, শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও সিমা বৌদ্ধ বিহার। এক উঠানের একপাশে মসজিদ-অন্যপাশে মন্দির, কয়েক কদম হাটলে আবার শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার। একপাশে ঢোলির ঢাক অন্য পাশে ভেসে আসে মোয়াজ্জিনের আজান। আবার সকাল-সন্ধ্যা বৌদ্ধ বিহারের ভান্তের বন্দনার আওয়াজ। মসজিদ ও মন্দিরের প্রবেশ পথ একটাই, মাঝে শুধু ইটের ছোট্ট একটি দেয়াল। এটি দিয়ে মুসলিমরা মসজিদে ও হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রী শ্রী রাধা কৃষ্ণ মন্দিরে প্রবেশ করে। যুগযুগ ধরে পাশাপাশি থেকে চলছে তিন পক্ষের এ ধর্মীয় কার্যক্রম। কখনো কেউ কোনো কারনে বিরক্তিবোধ করেনি। এ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ যেনো ধর্মীয় সম্প্রীতির এক বিরল দৃষ্টান্ত। 


বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদে আজান হলে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের ধর্মীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখেন। আবার সময়-ক্ষন বুঝে বৌদ্ধ সম্প্রদায় বন্দনায় মশগুল থাকে। হিন্দু সম্প্রদায়ের দূর্গা পূজাসহ বছরে কয়েকটি বড় উৎসব উৎযাপন করতে হয় এ মন্দিরে। প্রতিবছর ঐতিহ্যবাহী রাসমেলায় লক্ষাধিক লোকের সমাগমও হয় এ মন্দির প্রাঙ্গণে তবুও কোনদিন কারো ধর্মচর্চায় বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি কেউ কারো। কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা এমন সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির বসবাস দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন।  


স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াকাটা সাগর সৈকত জামে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৭ সালে এবং শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের ব্রম্মচারী শিশির মহারাজের কাছ থেকে  জানা গেছ,  কালীমন্দিরের প্রাঙ্গণে স্নানের কার্যক্রম চলে আসছে প্রায় দুইশত বছর আগ থেকে এবং শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে পূজা হয় ১৯৯৬ সাল থেকে। অন্যপাশে শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার স্থাপিত হয় ১৭৮৪ সালে। ওই সময় থেকে একই জায়গায় পাশাপাশি চলছে তিন ধর্মের তিন উপাসনালয়ের কার্যক্রম। আজানের সময় থেকে নামাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্দিরের ঢাক-ঢোলসহ যাবতীয় বাদ্য বাজানো বন্ধ থাকে। নামাজ শেষ হলে মন্দিরের কার্যক্রম শুরু হয়। আবার সকাল-সন্ধ্যা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ভুক্তরা তাদের বিহারে বন্দনা করেন। 


স্থানীয় বাসিন্দা হাফেজ মো. জালাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি একই মাঠে মসজিদ-মন্দির। অন্যপাশে বৌদ্ধদের বৌদ্ধ বিহার। এতদ্বসত্ত্বেও নামাজ পড়তে কোনো অসুবিধা হয়না। ওদের ধর্ম ওরা পালন করে, আমাদের ধর্ম আমরা পালন করি। এখানে কোনো সমস্যা হয়না।


কুয়াকাটা সাগর সৈকত জামে মসজিদের মোয়াজ্জেম মাওলঅনা মো. হারুনর রশিদ জানান, আমি প্রায় ৩০ বছর ধরে এই মসজিদে খেদমত করে আসছি। ধর্ম পালনে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। মসজিদ-মন্দির কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই সবকিছু হয়। কোনোদিন কোন বিষয় আমাদেও মধ্যে মত বিরোধ হয়নি।


শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের ব্রম্মচারী শিশির মহারাজ বলেন, প্রতি বছর রাস উৎসবকে সামনে রেখে এখানে অসংখ্য মানুষের আগমন ঘটে। মসজিদে আজানের সময় মন্দিরের সবধরনের ঢাক-ঢোল বাজানো বন্ধ থাকে। নামাজ শেষ হলে আবারও কার্যক্রম শুরু হয়। ধর্মীয় সম্প্রতি সদা সর্বদাই  বজায় রাখি। 


শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহারের উপাধাক্ষ ইন্দ্রনীল ভিক্ষু জানায়, আমরা তিন সম্প্রদায় পরস্পর পরস্পরের প্রতি সদা-সর্বদা সম্মান জানাই। এখন পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি আশা করি কোনদিন ঘটবেনা। 


কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, যুগযুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চলে আসছে। কোনদিন কারো প্রার্থনায় বাধার সৃষ্টি হয়নি, সম্প্রীতির বন্ধন চিরকাল অটুট থাকবে বলে তিনি জানান।          

-খবর প্রতিদিন/ সি.বা


আরও খবর

৫ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪




আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সৈয়দপুরে শোভাযাত্রা

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৮ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২৭ মার্চ ২০২৪ | ১১১জন দেখেছেন

Image

জহুরুল ইসলাম খোকন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:নারীর কাজের স্বীকৃতি প্রদান,নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ,নারীর সাফল্য উযযাাপন ও নারীর প্রতি সম্মান শ্রদ্ধার সাথে সম-অধিকারের উদ্দেশ্যে শোভাযাত্রা বের করেছে সৈয়দপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সকাল সারে ১০ টায় সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর থেকে শোভাযাত্রা টি বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন্নাহার শাহজাদী, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সানজিদা আকতার লাকি,এএস আই লুবনা লিপি,কনস্টেবল ববিতা রানী,কনস্টেবল মল্লিকা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম। বেলা সারে ১১ টায়,উপজেলা মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।সেখানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশের নারীদের সাফল্য আজ অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। নারীর উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সমুহকেও নানাবিধ উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। সারা পৃথিবীর ন্যায়,বাংলাদেশের নারীদের ও সমঅধিকার, সমসুযোহ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ। 

এছাড়াও নারীর অধিকার নিয়ে বক্তব্য রাখেন, প্রথম আলো পত্রিকার সৈয়দপুর প্রতিনিধি, এম আর আলম ঝন্টু, কালের কন্ঠ পত্রিকার প্রতিনিধি তোফাজ্জল হোসেন লুতু, ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম প্রমুখ।

আরও খবর

৫ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪




সব ধরনের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা : আইজিপি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১২ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১১৮জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:পণ্য পরিবহনসহ কোনো সেক্টরে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি বরদাশত করা হবে না। সকল ধরনের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে,বলেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

আইজিপি মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পবিত্র রমজান ও আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতিত্বকালে এ নির্দেশনা প্রদান করেন।

আইজিপি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং এবং পণ্যবাহী যানবাহনের নির্বিঘ্ন চলাচলের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে কোন ইস্যু তৈরি করে কেউ যেন আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, কোনো স্বার্থন্বেষী মহল সাইবার ওয়ার্ল্ডে গুজব ও অপপ্রচারের মাধ্যমে যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটাতে না পারে সেজন্য কর্মকর্তাদের তৎপর থাকতে হবে।

আইজিপি বলেন পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সব পুলিশ ইউনিটকে নির্দেশনা প্রদান করেন। বাসের ছাদে বা ট্রাকে যাতে যাত্রী পরিবহন করতে না পারে সেজন্য হাইওয়ে পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।

আইজিপি বলেন, রমজানে নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইফতার, তারাবি এবং সেহরির সময় বিশেষভাবে সতর্ক ও সজাগ থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আইজিপি গার্মেন্টস শিল্পের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে যেন কোনো ধরনের সমস্যার সৃষ্টি না হয় সেজন্য শিল্প পুলিশকে তৎপর থাকার নির্দেশ দেন।

সভায় অতিরিক্ত আইজিপিগণ, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানগণ এবং সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, র‌্যাব, এটিইউ, পিবিআই, হাইওয়ে পুলিশ, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, নৌ পুলিশের প্রধানগণ, মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারগণ, রেঞ্জ ডিআইজিগণ, ডিআইজি (এফডিএমএন), সব জেলার পুলিশ সুপার এবং বিশেষায়িত ইউনিট নৌ, হাইওয়ে, রেলওয়ে, ট্যুরিস্ট ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের মাঠ পর্যায়ের কমান্ডারগণ ভার্চুয়ালি সভায় সংযুক্ত ছিলেন।

সভায় আগামী ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস; ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিতব্য অনুষ্ঠানের নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করা হয়।


আরও খবর

৫ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪




কাইতলা আকাঈদে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের উদ্যোগে দরিদ্রদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

প্রকাশিত:শনিবার ২৩ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ৫৮জন দেখেছেন

Image

মোহাম্মদ হেদায়েতুল্লাহ  নবীনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধিঃ-

নবীনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের সর্ববৃহৎ আলেম ওলামাদের সংগঠন কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন আকাঈদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের উদ্যোগে শতাধিক অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ইফতার ও খাদ্য  সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার সকাল কাইতলা বাজার আকাঈদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রধান কার্যালয়ে কাইতলা ইউনিয়নের আলেম ওলামাদেরগণের উপস্থিথিতে এই ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।


এ সময় সংগঠনের সভাপতি হযরত মাওলানা নাজির হোসাইনের সভাপতিত্বে  ও মুফতি মিজানুর রহমান এর সঞ্চালনায় উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মুফতি আলাউদ্দিন সাহেব, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা ফারহাদ উদ্দিন ফরিদী,সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি হেলাল উদ্দিন সহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।


এসময় বক্তারা বলেন,আমরা কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের প্রত্যেকটা ওয়ার্ডের প্রায় শতাধিক মানুষের মাঝে ইফতার ও খাদ্য সামগ্রী প্রতি বছরের নেয় এবারও বিতরণ করেছি।আমরা ২০১১ প্রতিষ্ঠাতার পর থেকে  সাল থেকে আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কাজ করে আসছি। কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন কে মাদক মুক্ত ইভটিজিং মুক্ত ও দাঙ্গা হাঙ্গামা মুক্ত রাখতে সংগঠনের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে।আমাদের এই কাজ অব্যাহত থাকবে ।

-খবর প্রতিদিন/ সি.ব


আরও খবর

৫ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪




২৫ মার্চ ভয়াল, গণহত্যা দিবস আজ

প্রকাশিত:সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ | ৬৩জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:২৫ মার্চ ভয়াল, গণহত্যা দিবস আজ।বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এইদিন শেষে এক বিভীষিকাময় ভয়াল রাত নেমে এসেছিল। এদিন মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

বাঙালির স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে, তারই নাম অপারেশন সার্চলাইট।

এই অভিযানের নির্দেশনামা তৈরি করে পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। নির্দেশনামার কোনো লিখিত নথি রাখা হয়নি। গণহত্যার সেই পুরো নির্দেশ মুখে মুখে ফরমেশন কমান্ডার বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়। অনেক পরে, ২০১২ সালে, মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ‘এ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি’ নামে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশিত সেই আত্মজীবনীতে প্রথমবারের মতো অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।

অপারেশন সার্চলাইট কিভাবে পরিকল্পিত হয়, ১৯৭১ সালের সেই স্মৃতিচারণ করে রাজা লিখেছেন, ‘১৭ মার্চ, সকাল প্রায় ১০টা বাজে। টিক্কা খান আমাকে ও মেজর জেনারেল ফরমানকে কমান্ড হাউসে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে খবর পাঠান। খবর পেয়ে আমরা দুজন টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করি। গিয়ে দেখি, সেখানে জেনারেল আবদুল হামিদ খানও রয়েছেন। টিক্কা খান আমাদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ মুজিবের সমঝোতা আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট চান আমরা যেন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহন করি এবং সে অনুযায়ী একটা পরিকল্পনা তৈরি করি। এ ছাড়া আর কোনো মৌখিক বা লিখিত নির্দেশনা আমরা পাইনি। আমাদের বলা হয়, পরদিন ১৮ মার্চ বিকেলে আমরা দুজন যেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি।’ পরদিন সকালেই খাদিম হোসেন রাজা তার কার্যালয়ে রাও ফরমান আলীকে নিয়ে বসেন। তারাই গণহত্যার এ অভিযানের নাম দেন অপারেশন সার্চলাইট।

মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চ রাত সম্পর্কে লিখেছেন, ‘সেই রাতে ৭০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেফতার করা হল আরো ৩০০০ লোক। ঢাকায় ঘটনার শুরু মাত্র হয়েছিল। এরপর সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস যেন তাদের নেশায় পরিণত হল। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হল। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুন তাড়িত শ্মশান ভূমি।

পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্কট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল তাতে বলা হয় , ‘১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানি জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। হেলিকপ্টারযোগে তারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাস পরিদর্শন করে বিকেলের মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরে আসে।

ঢাকার ইপিআর সদর দফতর পিলখানাতে অবস্থানরত ২২তম বালুচ রেজিমেন্টকে পিলখানার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে দেখা যায়। মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টারের মাধ্যমে নীলক্ষেতসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়। সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীর জনসংযোগ অফিসারের দায়িত্বে থাকা সিদ্দিক সালিকের ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থেও এ সংক্রান্ত একটি বিবরণ পাওয়া যায়। সিদ্দিক সালিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল নিয়াজীর পাশেই ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনুগত পাকিস্তানি হিসাবে পাক সামরিক জান্তার চক্রান্ত তিনি খুব কাছে থেকেই দেখেছেন। ২৫ মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর মুহূর্ত নিয়ে তিনি লিখেন ‘নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সামরিক কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। এমন আঘাত হানার নির্ধারিত মুহূর্ত (এইচ-আওয়ার) পর্যন্ত স্থির থাকার চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেল। নরকের দরজা উন্মুক্ত হয়ে গেল।

পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান। সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।

যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ রাত ১১ থেকে ১১টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হবে। তবে কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দেবেন। এদিন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।

সারাদেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গীতিনাট্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশনে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হবে। এছাড়াও ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর বা সুবিধাজনক সময় দেশের সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে একই কর্মসূচি পালন করা হবে। বাসস


আরও খবর

৫ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪




মেহেরপুরে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ দানাদার বালাইনাশক

প্রকাশিত:সোমবার ০৪ মার্চ ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১০৭জন দেখেছেন

Image

মজনুর রহমান আকাশ, মেহেরপুরঃসরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও মেহেরপুরে অবাধে বিক্রি করা হচ্ছে দানাদার বালাইনাশক কার্বোফুরান। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর বালাইনাশক অবাধে বিক্রি হলেও সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের তেমন কোন পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। এসিআই কোম্পানীর বিভিন্ন ডিলারদের কাছে এই বালাইনাশক রয়েছে বলে বেশ কয়েকটি সুত্র জানিয়েছেন। অন্যদিকে ওই ডিলারগন দানাদার বালাইনাশক বিক্রি করেন না মর্মে দাবী করেছেন। আর কৃষি অফিস বলছে, প্রত্যেক ডিলারকে এ ব্যাপারে সচেতন করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে গাংনী কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন গাংনীর করমদি গ্রামের আশ্রাফ ট্রেডার্সের একটি ঘর থেকে ১১ প্যাকেট দানাদার বালাইনাশক কার্বোফুরান বিনষ্ট করেন। সোমবার সকালে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রিংকু এ অভিযান চালায়। আশ্রাফ আলী এ বালাইনাশক এসিআই কোম্পানীর প্রতিনিধির কাছ থেকে নিয়েছেন এবং অনেকেই এ বালাইনাশক বিক্রি করছেন বলেও স্বীকার করেন।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর বালাইনাশকের একটি তালিকা করে। তাতে কার্বোফুরান বা কার্বোমেট-জাতীয় বালাইনাশককে মারাত্মক ক্ষতিকর (এক্সট্রিমলি হেজারডাস) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ’৯০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্র ও নিউজিল্যান্ড বালাইনাশকটি নিষিদ্ধ করে। তবে দামে কম হওয়ায় ও পোকা দমনে ভালো কাজ করায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর ব্যবহার চলতে থাকে। ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদন প্রকাশের পর এসব দেশ বালাইনাশকটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

২০২৩ সালে জুন মাসে বিশ্বের ৮৮তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ কার্বোফুরান নামের বালাইনাশক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর চিহ্নিত করে ২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি এটি নিষিদ্ধ করে গেজেট প্রকাশ করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি হওয়া ওই গেজেট জুন মাস থেকে এটির আমদানি, ব্যবহার ও উৎপাদন বন্ধ করার আদেশ দেয়া হয়। আদেশে বলা হয়, অবিক্রিত কীটনাশক সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর কাছে ফেরত প্রদান অথবা নিজ দায়িত্বে ধ্বংস করতে হবে।

কৃষিবীদ আব্দুর রউফের মতে, কার্বোফুরান জাতীয় দানাদার বালাইনাশক মানুষের জন্য ক্ষতিকর তো বটেই, গাছের পরাগায়ণের ভূমিকা রাখা বিভিন্ন জাতের মাছি, প্রজাপতি থেকে শুরু করে ক্ষতিকর পোকা খেয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য রেখে চলা লেডি বিটল ও টাইগার বিটলের মতো পোকা এর কারণে মারা যায়। এটি মাটির উপকারী ব্যাকটেরিয়া ও কেঁচো এবং মাছের ক্ষতি করে।

একটি সুত্র জানায়, কৃষি অফিসের একটি চক্রকে ম্যানেজ করেই তারা এ ধরনের কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে। সুত্রটি আরো জানায়, তরল বালাই নাশকের ৭ দিন থেকে সর্বোচ্চ ১৫ দিন পর্যন্ত কার্যকরী ক্ষমতা থাকে। আর কার্বোফুরান কার্বোমেট দানাদার বালাইনাশকের কার্যকরী ক্ষমতা থাকে ৩০ দিন থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত। ফলে প্রত্যেকেই অজ্ঞাতসারে এ কীটনাশকের ছোবল গ্রহন করছেন।

বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবসায়িরা চাষিদেরকে নানাভাবে এসব দানাদার বালাইনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে করে চাষিরা ভাল ফলাফলের আশায় এসব ব্যবহার করছেন। অনেকেই সন্ধ্যায় বালাইনাশক ব্যবহার করে সকালে সবজিসহ অন্যান্য ফসল তুলে বাজারে বিক্রি করছেন। শুধু ভোক্তা বা ক্রেতা নয়, উৎপাদন কাজে নিয়জিত কৃষকরাও আক্রান্ত হচ্ছেন নানা ধরনের রোগে। প্রকাশ্য ও গোপনে এসব দানাদার বালাইনাশক বিক্রি হলেও কৃষি অফিস তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সুপ্রভা রাণী জানান, এমন কতগুলো বালাইনাশক বা রাসায়নিক পদার্থ আছে যা শাক সবজিতে স্প্রে করার পর ভালো করে ধুলেও সবজি শতভাগ পরিষ্কার ও নিরাপদ হয় না। ওই সবজি খেলে কিডনি, লিভার, স্তন, ফুসফুস, পাকস্থলী, প্রস্টেট, অগ্নাশয় ও ব্লাড ক্যানসারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের রাসায়নিক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক নিয়ে সচেতন করতে হবে। অর্গানিক উপায়ে খাবার উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে। ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, কার্বোফুরান মানব দেহ শুধু নয়, পশু পাখি এমন কি গাছ ও মাটির উপকারী কীটেরও ক্ষতি করে। এ জন্য এ বালাই নাশককে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। কৃষকদেরকে এ বালাইনাশক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করার পরও অনেক ক্ষেত্রে কৃষক তা যথাযথভাবে মানেন না। বিভিন্ন বালাইনাশক বিক্রয়কারীকে এটি বিক্রির জন্য নিষেধ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে একজন বিক্রয়কারীর দোকানে অভিযান চালিয়ে কিছু বালাইনাশক কার্বোফুরান বিনষ্ট করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কৃষি অফিসের যোগ সাজশে এ ধরনের বালাইনাশক বিক্রি হচ্ছে মর্মে অভিযোগে ব্যাপারে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হন নি।


আরও খবর

৫ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা

শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪