

শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
মেহেরপুর প্রতিনিধিঃএক গৃহবধুর ব্যক্তিগত একান্ত মূহুর্তের ছবি দিয়ে ব্লাকমেইলের হুমকী ও কুপ্রস্তাব দেয়ার ঘটনায় মেহেরপুরের গাংনী থানা পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যারাতে দুজনকে আটক করলেও গভীর রাতে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগি গৃহবধু তার পরিবারসহ সচেতন মহলের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইন বহির্ভূত কিছু না পাওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার জানান, মাস দু’য়েক আগে গাংনী বাজারের কাথুলী মোড়ে চপল মোবাইল সেন্টারে একটি মোবাইল মেরামত করতে দেন ওই গৃহবধূ। সে সময় তাকে ঘন্টা খানেক সময় লাগবে বলে জানান দোকান কর্মচারী সাইফ উদ্দীন। পরে ফোনটি গৃহবধুকে দিয়ে দেয় সে। গত পাঁচ দিন আগে গৃহবধূর ছবি দিয়ে নাবিল নামের একটি ফেসবুক আইডি খুলে ওই গৃহবধুর কাছেই ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো হয়। ভুক্তভোগী গৃহবধূ কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেন। পরে নাবিল নামের আইডি থেকে ওই গৃহবধুর মেসেঞ্জারে তার স্বামির সাথে থাকা অন্তরঙ্গ মূহুর্তের কিছু ছবি প্রেরণ করে ও কুপ্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাব না মানলে সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়া হুমকি দেয়া হয়।
বিষয়টি ভুক্তভোগী গৃহবধূ তার পরিবারকে জানালে তারা মেহেরপুর জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে যান এবং গাংনী থানায় একটি জিডি করেন। শুরু হয় তদন্ত। অন্যদিকে, বিষয়টি জানাজানি হলে গৃহবধু পক্ষের লোকজন ফুঁসে ওঠে। বিভিন্ন ভাবে খোঁজ নিয়ে ও ঘটনা পর্যালোচনা করে ওই গৃহবধুর পরিবার শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে সু-কৌশলে চপল মোবাইল সেন্টারের মালিক চপল হোসেন ও কর্মচারী সাইফ উদ্দীনকে প্রমাণসহ হাতে নাতে ধরতে সক্ষম হয়। উভয় পক্ষ বাক বিত-ায় জড়িয়ে পড়লে গাংনী বাজার কমিটির লোকজন চপল ও তার কর্মচারী সাইফ উদ্দীনকে বাজার কমিটির অফিসে নিয়ে যায় সেই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দুজনকে আটক করে থানায় নেয়। গভীর রাতে দুজনকে ছেড়েও দেয়া হয়েছে। ওই গৃহবধু স্বামি জানান, মেসেঞ্জারে নানাভাবে হুমকী দেয়া হতো। ভয়েজ কলে রাতে গোপনালাপ করার প্রস্তাব দেয়া হতো এবং কথা না বললে তার ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকী দেয়া হতো। এসকল ভয়েজ রেকর্ড ভূয়া ফেসবুক আইডি পুলিশকে দেয়া হয়। সেই সাথে শুক্রবার রাতেই মামলা করার জন্য একটি অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ আমলে না নিয়ে
আটককৃতদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। এখন গোটা পরিবারই হুমকীর মুখে। এ ব্যাপারে গাংনী থানার ওসি(তদন্ত) মনোজিৎ কুমার নন্দী জানান, অভিযোগকারী যে আবেদন ও ধারা উল্লেখ করেছেন সেটি পর্ণেগ্রাফি আইন। কিন্তু আটককৃতদের অপরাধ ওই আইনে নয়। এদের কাছ থেকে তেমন কোন অপরাধমূলক কর্মকা-ের প্রমানও মেলেনি। তাই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, আটককৃতদেরকে ছেড়ে দেয়া হলেও ওই গৃহবধুর জিডি তদন্ত করা হচ্ছে। কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা ওেনয়া হবে।
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
স্পোর্টস ডেস্ক:ব্রাজিলের সময়টা ভাল কাটছে না । নিজেদের সবশেষ তিন ম্যাচেই হারের মুখ দেখেছে সেলেসাওরা। আর টানা এই হারের প্রভাব পড়েছে র্যাঙ্কিংয়েও। সবশেষ ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত র্যাঙ্কিংয়ে দুই ধাপ নেমে ৫ম স্থানে আছে সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। বিপরীতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। ব্রাজিল নিচে নেমে যাওয়ায় র্যাঙ্কিংয়ের উপরে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড এবং বেলজিয়াম। ৩য় স্থানে ইংল্যান্ড এবং ৪র্থ স্থানে রয়েছে বেলজিয়াম।
ব্রাজিল টানা হারের কারণে এক ধাক্কায় ২৮.১১ রেটিং পয়েন্ট হারিয়েছে। বর্তমানে তাদের রেটিং ১৮১২.২। অন্যদিকে র্যাঙ্কিংয়ে সবার উপরে থাকা আর্জেন্টিনারও রেটিং কমেছে ৬.০৯। তারপরও ১৮৫৫.২ রেটিং নিয়ে সবার উপরে রয়েছে আলবিসেলেস্তেরা। আর ১৮৪৫.৪৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে ইউরোপিয়ান জায়ান্ট ফ্রান্স। তাদেরও রেটিং কমেছে ৭.৬৭। ৩য় স্থানে থাকা ইংল্যান্ডও হারিয়েছে ৭.৮৩ রেটিং পয়েন্ট।
এছাড়া এক ধাপ করে পিছিয়ে যথাক্রমে ছয় ও সাতে অবস্থান নেদারল্যান্ডস ও পর্তুগালের। তবে এরপর বাকি তিন দলের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি। র্যাঙ্কিংয়ে ৮ থেকে ১০ নম্বরে আছে যথাক্রমে স্পেন, ইতালি ও ক্রোয়েশিয়া।
সাম্প্রতিক সময়ে লাতিন আমেরিকার দুই জায়ান্ট ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা উভয়কেই হারিয়েছে উরুগুয়ে। ফলে চার ধাপ এগিয়ে ১১ নম্বরে উঠে এসেছে দলটি।
এদিকে, রেটিং ৪.১৫ বাড়লেও র্যাঙ্কিংয়ে কোনো পরিবর্তন আসেনি বাংলাদেশের। ৯১৬.৭৫ রেটিং নিয়ে ১৮৩ নম্বরে আছে বাংলাদেশ।
বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩
বুধবার ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩
বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ডাকা অবরোধে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ প্রতিরোধে স্টপেজে বাস ও যাত্রীদের ছবি তুলে রাখাসহ মালিক শ্রমিকদের ১০ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
রোববার (১২ নভেম্বর) রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা মালিক শ্রমিকদের বলেছি তারা যেন যাত্রীদের ছবি তুলে রাখে। এছাড়া আমরা আরও বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছি।
ডিএমপির নির্দেশনাগুলো হলো:
১। স্টপেজগুলোতে বাসের ও যাত্রীদের ছবি তুলে রাখতে হবে।
২। স্টপেজ ছাড়া যাত্রী ওঠানামা করানো যাবে না।
৩। বাসে থাকা যাত্রীদের বাসের সহকারী সচেতন করবে।
৪। রাতে বিচ্ছিন্নভাবে বাস পার্কিং না করে কোনো উন্মুক্ত স্থানে একত্রে একাধিক বাস রেখে নিজস্ব প্রহরার মাধ্যমে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। চালক ও সহকারী কখনই একই সঙ্গে গাড়ি রেখে খেতে বা বিশ্রামে যাবে না।
৬। ইতোমধ্যে নাশকতাকারীর তথ্য প্রদানকারীর জন্য বিশেষ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
৭। সহকারী ছাড়া চালককে একা গাড়ি চালাতে দেওয়া যাবে না।
৮। রাতে গাড়ির মধ্যে ঘুমানো যাবে না, অন্তত একজনের মাধ্যমে হলেও প্রহরার ব্যবস্থা করতে হবে।
৯। বাসের দুটো দরজা থাকলে পেছনের দরজা অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে এবং মালিক পক্ষ থেকে চালক ও সহকারীদের অবশ্যই নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
১০। এছাড়া যাত্রীদের জন্য সতর্কতামূলক স্টিকার বাসে লাগিয়ে দিতে হবে।
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শরীফ হোসাইন ভোলা বিশেষ প্রতিনিধি:উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলি তান্ডব চালিয়েছে ভোলায়। প্রবল বৃষ্টি আর বাতাসের গতিবেগ নিয়ে দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তান্ডব চালিয়েছে পুরো জেলায়। এতে জেলা শহরসহ ৭ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। গাছপালা ভেঙ্গে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত ৫ শতাধিক ঘরবাড়ী। মিধিলি’র তান্ডবে তজুমদ্দিন ও মনপুরায় ২টি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে ১ জেলে নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে দুপরের দিকে লক্ষ্মীপুরের মঝুচৌধুরীর ঘাটে যাওয়ার সময় কলমি লতা নামের একটি ফেরীর তলা ফেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে কোন হতাহত কিংবা ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। জানা গেছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মিধিলি তান্ডব চালিয়েছে ভোলায়। প্রবল বৃষ্টি আর বাতাসের গতিবেগ নিয়ে দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তান্ডব চালিয়েছে পুরো জেলায়। এতে জেলা শহরসহ ৭ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। গাছপালা ভেঙ্গে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। বিধ্বস্ত হয়েছে অন্তত ৫ শতাধিক ঘরবাড়ী। মিধিলি’র তান্ডবে তজুমদ্দিন ও মনপুরায় ২টি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এতে ১ জেলে নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গাছপালা উপড়ে পরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পুরো জেলা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে। এ ছাড়াও গত ২৪ ঘন্টার ২৪৮.৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অতি বৃষ্টিপাতের কারণে শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
আরো জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় ৪-৫ ফুট নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর মাছ ধরার অধিকাংশ ট্রলারসমূহ নিরাপদ আশ্রয়ে থাকলেও তজুমদ্দিন উপজেলার ৪ জেলে মলংচড়া সিডার চর থেকে মির্জাকালু ঘাটে আসার সময় সফিক মাঝির ট্রলার দূর্ঘটনার কবলে পড়ে। তীরের উদ্দেশ্যে আসার সময় মাঝ নদীতে পৌছলে ডেউয়ের ধাক্কায় নৌকাটি উল্টে যায়। পাশে মাছ ধরারত অন্য জেলেরা ৩ জেলেকে উদ্ধার করলেও বাদশা মিয়া (৫০) নামের এক জেলে নিখোঁজ হয়েছে। তার বাড়ি বড় মলংচড়া ইউনিয়নের বলে জানিয়েছে উদ্ধার হওয়া সফিক মাঝি। এছাড়া মনপুরায় একটি ট্রলার ডুবের ঘটনা ঘটে। এতে ওই ট্রলারে থাকা ৩ জেলেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে কোষ্টগার্ড দক্ষিণ জোনের একটি টিম।
প্রায় অর্ধশতাধিক ঘেরের ও পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া মৌসূমি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনও জানা যায়নি। অন্যদিকে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে ইটভাটা গুলোতে। তাদের প্রস্তুতকৃত কাঁচা ইট বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তাদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে দুপরের দিকে লক্ষ্মীপুরের মঝুচৌধুরীর ঘাটে যাওয়ার সময় কলমি লতা নামের একটি ফেরীর তলা ফেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষনিকভাবে খবর পেয়ে ইউএনও’র নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ফেরী থেকে পানি অপসারণ করে বিদপ মুক্ত করা হয় এবং পূনরায় ভোলার ঘাটে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হয়। তাই হতাহত কিংবা ক্ষয়-ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিনের মেঘনা নদীতে ঘূর্ণিঝড় মিধিলীর প্রভাবে একটি জেলে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে বাদশা মিয়া (৫০) নামের এক জেলে নিখোঁজ রয়েছে। সে মলংচড়া ইউনিয়নের মৃত মজিবল হকের ছেলে। শুক্রবার বেলা ২ টার দিকে ৪ জেলেসহ নৌকা নিয়ে শফিক মাঝী মলংচড়া চর থেকে মির্জাকালু তীরে আসার সময় দূর্ঘটনার কবলে পড়ে।
উদ্ধার হওয়া শফিক মাঝী জানান, মলংচড়া চর থেকে আমরা ৪ জন তীরের উদ্দেশ্যে আসার সময় মাঝ নদীতে পৌছলে ডেউয়ের ধাক্কায় নৌকা উলটে ডুবে যায়। অন্য জেলেরা আমাদের তিনজনকে উদ্ধার করলেও বাদশা মিয়াকে পাওয়া যায়নি। মলংচড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরনবী শিকদার বাবুল জানান, তিনি নৌকা ডুবির সংবাদ পেয়ে নিখোঁজ জেলেকে খুজতে বড় ট্রলার পাঠিয়েছেন। রাত পর্যন্ত নিখোঁজ বাদশা মিয়াকে পাওয়া যায়নি। তজুমদ্দিন থানা অফিসার ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর মাধ্যমে নৌকা ডুবির সংবাদ পেয়েছি। নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারের চেস্টা চলছে।
অন্যদিকে চরফ্যাশন উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তা-বে ২শ’ ১৯টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও ভেঙ্গে পড়েছে শতাধিক গাছ। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নওরীন হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপজেলার ঢালচর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম হাওলাদার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে রাতে আবহাওয়া খারাপ হয়। দুপুরের দিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির দমকা হাওয়াসহ আঘাত হানে উপকূলের এই উপজেলায়। এটা অনেকটা টর্নেডোর মতো ছিল। পরে ঘূর্ণিঝড়টি ঢালচরের পূর্ব দিকে ধেয়ে যায়। এতে ঢালচর ইউনিয়নের বেশ কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয় ও গাছপালা উপড়ে যায়। এবং কিছু মাছ ধরার ট্রলারও ডুবে যায়। পরে জেলেদেরকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে আনা হয়।
উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরকুকরি-মুকররি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, ‘ঝড়ে তার ইউনিয়নের বহু ঘর-বাড়ি ল-ভ- হয়ে গেছে। টিনের ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গাছের ওপর ফেলেছে। কয়েকটি কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গাছপালা উপড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করা হবে। ইউএনও নওরীন হক বলেন, ‘ঢালচর, চরকুকরি মুকরি, ও জাহানপুরসহ বেশ কিছু ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ঘূর্নিঝড় বয়ে গেছে। এতে প্রায় ২শ’ ১৯ ঘর-বাড়ির ক্ষয়- ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি এবং ক্ষয়ক্ষতির তালিকা দ্রুত তৈরি করে জেলায় পাঠানো হবে।
অপরদিকে, মধ্য মেঘনার অদূরবর্তী চরসমূহ মাঝের চর, দৌলতখানের মদনপুর, মেদুয়া, নেয়ামতপুর, তজুমদ্দিনের চর জহিরুদ্দিন, চর মুজাম্মেল, চর নাছরিন, চর শাওনে বসবাসরত পরিবারগুলোকে দুপুর থেকে ট্রলার যোগে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে। এসব এলাকায় স্বাভাবিক জোঁয়ারের চেয়ে ৩-৪ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তবে ক্ষয়-ক্ষতির কোন খবর এখনও পাওয়া যায়নি। ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র কারণে ভোলা থেকে সব ধরনের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। ভোলার বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলের প্রভাবে সকাল থেকে ভোলায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া হওয়ায় জেলার ৭ উপজেলার (ভোলা- ঢাকা, ভোলার বোরহানউদ্দিন-ঢাকা, চরফ্যাশন-ঢাকা, লালমোহন-ঢাকা, মনপুরা- ঢাকা, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, দৌলতখান-আলেকজান্ডার) সব রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এটি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। মিধিলা’র তান্ডবে সার্বিক বিষয়ে ভোলার জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, ঘূর্নিঝড় মিধিলা’র তান্ডবে ভোলায় গাছপালা, ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ২টি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৪ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে একজন নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছি। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপনের কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি এড়াতে ভোলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত হয়। বৃস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ৯ টায় জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান। এ সময় তিনি জানান, যেকোনো ধরনের দুর্যোগে বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার ৭ উপজেলায় খোলা হয়েছে ৮টি কন্ট্রোল রুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১২টি মুজিব কেল্লা। গঠন করা হয়েছে ৯২টি মেডিকেল টিম। এর সাথে জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, ত্রাণের চাল ও নগদ টাকাসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিভিন্ন দুর্গম অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনাসহ তাদের সচেতন করার লক্ষে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির আওতায় ১৩ হাজার সিপিপি, ৮০০ স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্টের ২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কর্মী প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা গুলোকে। একই সাথে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বেড়িবাঁধ যেনো ছুটে না যায় এর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এরই মধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা। পাশাপাশি রয়েছে ৩৪১ টন চাল ও শিশু খাদ্যের জন্য ৯ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং গো-খাদ্যের জন্য ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ। এছাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় উপ-পরিচালক তামিম আল ইয়ামিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মামুন অর রশিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রিপন কুমার সাহ, ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএ ভোলার সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম সহ বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকবৃন্দ।
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
এমরান আলী রানা , সিংড়া (নাটোর):ক্যালেন্ডারের পাতায় অগ্রহায়ন মাসের আগমন। এরই মধ্যে নাটোরের সিংড়ায় গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। রাতে ঠান্ডা-হিমেল বায়ু আর সকালের শিশির ভেজা ঘাস-পাতা জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে গাছিদের খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতি। পাশাপাশি চলছে খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কর্মযজ্ঞ। বাংলার গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতীক মধু বৃক্ষ খেজুর গাছ পরিচর্যা-পরিষ্কারসহ রস সংগ্রহের উপযোগী করতে প্রতিদিন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা।
আর মাত্র কয়েকদিন পরেই পাওয়া যাবে মিষ্টি মধু সেই কাঙ্খিত খেজুরের রস। যার ঘ্রাণে মৌ মৌ হয়ে উঠবে পুরো এলাকার বাতাস। গ্রামীণ জীবনের প্রাত্যহিক উৎসব শুরু হবে খেজুরের মিষ্টি রসকে ঘিরে। পুরো শীত মৌসুম জুড়ে চলবে সু-স্বাদে ভরা বিভিন্ন ধরনের পিঠা উৎসব। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা অঞ্চলে সড়ক, জমির আইল, বাড়ির আঙিনায় ছড়িয়ে আছে প্রায় ৬০ হাজার খেজুরের গাছ। এসব গাছ থেকে গুড় সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬৫ মেট্রিক টন। খেজুর গাছের রস সংগ্রহের ওপর প্রায় ২ হাজার পরিবার নির্ভরশীল। শীত মৌসুমে ৭৫ দিনে প্রতিটি গাছ থেকে ১৭৪ কেজি রস পাওয়া যায়। আর প্রতিটি গাছের রসে গুড় উৎপাদন হয় ১৭ দশমিক ৪০ কেজি।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, কেবল শীতকাল এলেই অযতেœ ও অবহেলায় বেড়ে ওঠা এই খেজুর গাছের কদর বাড়ে। খেজুরের গাছ অন্য কোনো ফসলের ক্ষতি করে না। এই গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ গুনতে হয় না। ঝোপ জঙ্গলে কোনো প্রকার যতœ ছাড়াই বেড়ে ওঠে খেজুর গাছ। শুধু শীত মৌসুম এলে নিয়মিত পরিষ্কার করে রস সংগ্রহ করতে হয়। একজন গাছি শীত মৌসুমে ৭০ থেকে ৭৫ দিনে একটি খেজুর গাছ থেকে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কেজি গুড় পেয়ে থাকেন। এছাড়া খেজুরের পাতা দিয়ে মাদুর তৈরিসহ খেজুরের গাছ কেটে ঘরের তীর তৈরি করা হয়।
সিংড়া পৌরসভার শোলাকুড়া মহল্লার রফিকুল ইসলাম রফু জানান, প্রতি বছর তিনি অন্তত ৭০ থেকে ৮০টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বাড়িতেই গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন। কোনো কোনো সময় বাড়ি থেকেও গুড় বিক্রি হয়। চকসিংড়ার আজাহার শাহ্ধসঢ়; জানান, প্রতি বছর ৫০টির মত গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন তিনি। শীতের সময় খেজুরের গুড় তৈরি ও বিক্রি করে তার সংসার ভালোই চলে।
উপজেলার পাঙ্গাশিয়া গ্রামের সাগর আলী জানান, প্রায় ১৫০টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করছি। এ আয়েই সারাবছর সংসার চলে। রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাট উপজেলা থেকে আগত কয়েকজন গাছি জানান, এ এলাকার খেজুরের গুড় প্রসিদ্ধ। এখানকার গুড় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই বাজারজাত করা হয়। কোনো কোনো সময় দেশের বাইরেও পাটালি গুড় পাঠানো হয়। তাদের দাবি, খেজুরের গুড়ের যেমন কদর আছে, সেই তুলনায় দাম আরও বেশি পাওয়া দরকার। কেননা উৎপাদন খরচ বেশি, পরিশ্রমও বেশি হয়। সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ বলেন, আমরা গাছিদের খেজুরের গাছ লাগানোর জন্য উৎসাহ্ধসঢ়; ও পরামর্শ দিয়ে থাকি। আর খেজুরের গুড়ের চাহিদা সবসময় বেশি থাকে। খেজুরের রস ও গুড়কে ঘিরে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। ইতোমধ্যে গাছিরা খেজুরের রস দিয়ে গুড় উৎপাদন করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আমরা নিরাপদ গুড় বাজারজাত করার জন্য নিয়মিত মনিটরিং করছি।
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩
শুক্রবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩