
এ.আর হানিফঃ
রাজধানীর ডেমরা বাদশা মিয়া রোড এলাকায় রাকিব রহমান (৩৫) নামে এক যুবককে চুরির অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।মামলায়এ হত্যাকান্ডের হুকুমদাতা আনোয়ার হোসেন মৃধার নাম বাদ দেয়ায় ক্ষুব্ধ নিহতের পরিবার।
শুক্রবার ১৭ জুন সকালে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের পর এ ঘটনায় ৮ জনকে অভিযুক্ত করে ডেমরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
নিহত রাকিব রহমানের স্ত্রী মুন্নী সংবাদ কর্মীদের জানান, "রাকিব রহমান ডেমরার বড় পাইটি এলাকায় একটি মুদি দোকান পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন,ঘটনার দিন ভোরবেলা রাকিবের মোবাইলে একজন করে ডেমরা এলাকার বাদশা মিয়া রোডের ৬নং গলির ভেতর স্যাটেলাইট গার্ডেন-২ নামক নির্মানধীন একটি ভবনের সামনে ডেকে নিয়ে যায়,সেখানে পুর্ব পরিকল্পনামতে স্যাটেলাইট গার্ডেন-২ ভবনের মালিক আনোয়ার হোসেন মৃধার নির্দেশে মামলার আসামীরা যথাক্রমে সাদ্দাম হোসেন,কেয়ারটেকার আশিক,নাজমুল,মোঃ শাহীন,মোঃ মিলন,মোঃ শফিকুল,আজিজার ও লেবার কন্ট্রাকটর সোহাগ সহ আরো ৪/৫ জন মিলে পরস্পর যোগসাজোশে আমার স্বামীকে পুর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত জেনে রাস্তার উপড় ফেলে রাখে।আমি খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার ভাসুর সুজন এবং মিঠু খানের সহায়তায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।ঘটনাস্থলে আশপাশের মানুষের কাছ থেকে জানতে পারি ভবনের মালিক আনোয়ার হোসেন মৃধার নির্দেশে আমার স্বামী রাকিব রহমান খুন হয়েছেন।আমি মামলায় অভিযোগ দায়ের করার সময় আনোয়ার হোসেন মৃধার নাম বারবার বলার পরেও পুলিশ তাকে বাদ দিয়ে তড়িঘরি করে মামলাটি দায়ের করে।এ সময় স্যাটেলাইট গার্ডেন-২ ভবনের মালিক আনোয়ার হোসেন মৃধার নাম মামলায় না দিতে তার পক্ষে কয়েকজন আমাকে অনুরোধ করে এবং মোটা অংকের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।আমি তাদের প্রস্তাবে রাজী না হলে তারা ডেমরা থানার পুলিশকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে মামলার এজাহার থেকে তার নাম বাদ দিয়ে দেয়।"
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানাগেছে, নিহত রাকিব রহমান ডেমরার বড় পাইটি এলাকার খলিল রহমানের ছেলে। তাদের গ্রামের বাড়ি দিনাজপুর জেলায়।ডেমরার পাইটিএলাকায় তার মুদি দোকানের ব্যাবসা রয়েছে।তিন মাস আগে তার পিতা মারা যান।পাইটি এলাকায় তার নিজ বাড়িতে স্ত্রী মুন্নীকে নিয়ে বসবাস করতেন।তার এগারো বছরের পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ুয়া একটি কন্যা সন্তান এবং ৪ বছর বয়সী একটি ছেলে আছে।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাহিন মিয়া (২৫) ও নাজমুল (২৪) নামে দুজনকে আটক করলেও মামলার অন্য আসামীরা পলাতক রয়েছে।অন্যদিকে হত্যাকা্ন্ডে হুকুমদাতা আনোয়ার হোসেন মৃধা ধরাছোয়ার বাইরে থাকায় ন্যায় বাচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছেন বাদীর পরিবার।
এবিষয়ে ডেমরা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি শফিকুল ইসলাম জানান,"বাদীর লিখিত এজাহার মোতাবেক মামলাটি রুজ্জু হয়েছ,আনোয়র হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কোন আলামত পাওয়া যায়নি,যতদুর জেনেছি ঘটনার সময় তিনি স্পটেওছিলেন না,তার পরেও যদি আনোয়ার হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে কোন তথ্য প্রমান পাওয়া যায় তবে ন্যায় বিচারের স্বার্থে অবশ্যই মামলায় তাকেও সেন্ড আপ করা হবে,ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার কোন কারন নেই।"
স্যাটেলাইট গার্ডেন-২ নামক নির্মানধীন ভবন মালিক আনোয়ার হোসেন মৃধা জানান,"আমার বিরুদ্ধে এ ঘটনায় তদন্ত করে পুলিশ কোন তথ্য পায়নি,আমি কোন ভাবে এ হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ত নই,পুলিশ ঘটনার সময়ে সিসিটিভিতে ধারন করা সব ফুটেজ নিয়ে তদন্ত করছে।"