মাজহারুল ইসলাম রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অবহেলা, চরম গাফিলতির, দুর্বল ব্যবস্থা পনায়, মামলা মোকদ্দমার কারনে চরশৌলমারী ডিগ্রী কলেজটির শিক্ষা ব্যবস্থা ঘোলা জলে ডুবে হাবুডুব খাচ্ছেন শির্ক্ষাথীরা। এ ছাড়া একই পদে ৪ জন শিক্ষক কলেজের অধ্যক্ষের পদ নিয়ে রশিটানাটানি অব্যাহত। এনিয়ে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেও সুরাহা মেলেনি। মামলার বেড়াজালে ৯ মাস কাল শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ ও শিক্ষা
ব্যবস্থা বেহাল। শিক্ষক-কর্মচারী বেতন অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ঘটনাটি রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী ডিগ্রি কলেজে। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, সাবেক অধ্যক্ষ কুদুরত আলী অবসরে যাওয়ার সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে পরিচালনা কমিটির সভাপতি কে এম ফজলুল হক মন্ডল ও অন্যান্য সদস্যদের যোগসাজশে মৌখিক ভোটের মাধ্যমে প্রভাষক ফরহাদ আলীকে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইং তারিখে ভারপ্রাপ্ত
অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়। এদিকে ফরহাদ আলী ভারপ্রাপ্ত (অধ্যক্ষ) থেকে নিয়মিত অধ্যক্ষ হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। এতে ৫ নভেম্বর ২০১৭ ইং তারিখে আবার রহস্যজনক কারনে প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাকের কাছে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। বিধিবাম, কয়েকমাস পর আব্দুর রাজ্জাক অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্বকালে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় ১৯ আগষ্ট ২০১৮ ইং তারিখে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদ ফেরত নেন ফরহাদ আলী।
পরে তিনি ওই কলেজে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব ধরে রাখেন প্রায় ১৩ মাস। তিনি দায়িত্ব থাকার সময়ে শিক্ষকদের মধ্যে দলাদলিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ চলমান রয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষার ভালো ফলাফল অজর্ন হয়নি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল ও লেখাপড়া মান বৃদ্ধি করতে কলেজের পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে ১২ নভেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে ফরহাদকে বাদদিয়ে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) খন্দকার মো. ফখরুল ইসলামকে দায়িত্ব প্রদান করেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পরে কলেজের সকল দাপ্তরিক কাগজপত্র চাইলে সাবেক অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ফরহাদ আলী তা না দিয়ে বিভিন্নভাবে সময়ক্ষেপন করেন। বিষয়টিও পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক মন্ডল কে
অবহিত করলে তিনি তা আমলে না নিয়ে একই ভুমিকা পালন করেন। কারণ সাবেক অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ফরহাদ আলীর পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক মন্ডল আপন বোন জামাই। ইতিমধ্যেই সহকারি অধ্যক্ষ মতিয়ার রহমান ও সাবেক অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ফরহাদ আলীর মধ্যে কলেজকে কেন্দ্র করে কুড়িগ্রাম জজ কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ফখরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বরত অবস্থায় ফরহাদ হোসেন অবৈধভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে একটি নিয়োগ নেন। এ নিয়োগের বিরুদ্ধে ফখরুল ইসলাম আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করেন। এতে বিভিন্ন ভাবে অভিযোগের ফলে গত -----তারিখে
মাউশি থেকে পরিচালক তপন কুমারের স্বাক্ষরিত অবৈধভাবে নিয়োগের বিরুদ্ধে পদ ¯’গিত রেখে কলেজের শিক্ষক জৈষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ ও ৯ মাস থেকে বেতন ভাতা বন্ধের জটিলতা থেকে রেহাই করার জন্য পত্র প্রদান করেন। এ পত্রের বিরুদ্ধেও অধ্যক্ষ ফরহাদ হোসেন হাই কোর্টে একটি মামলা করলে তাও ৬ মাসের ¯’গিতের আদেশ প্রদান করেন। এমতাবস্থায় মামলা ও বারবার অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) পরিবর্তনের কারনে
কলেজের শিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমন্বয় হীনতার সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে কলেজে অধ্যক্ষ পদের দায়িত্বশীল ব্যাক্তি না থাকায় কলেজটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে মানবেতর জীবন যাপন করছে শিক্ষক কর্মচারি। অন্যদিকে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। এবিষয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, নীতিমালা মোতাবেক ও যোগ্য হিসাবে আমি দায়িত্ব পেয়েছি। আমি নিয়োগ নিতে কাউকে কোন টাকা দেইনি। কেউ বললে তা মিথ্যা। আমার বৈধ নিয়োগের বিরুদ্ধে বন্ধের
নোটিশ আশায় আমি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে ৬ মাসের ¯’গীত আদেশ দিয়েছে কোর্ট। ফখরুল ইসলাম বলেন, আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে কয়েকদিন পর ভিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে দ্বায়িত্ব কেড়ে নেয়। ফলে আমি আইনগত ভাবে আশ্রয় নিয়েছি আবুল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, জৈষ্ঠতার ভিত্তিতে আমি এক নম্বর সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছি। কিš‘ আমাকে বাদদিয়ে অধ্যক্ষ কুদুরত উল্লাহ টাকার বিনিময়ে ৩ নম্বর শিক্ষক ফরহাদকে দায়িত্ব দিয়েছে তা বিধি সম্মত নয়।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সামছুল আলম বলেন, সিনিয়র শিক্ষককে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে অধ্যক্ষ পদে বসানো যাবে না বলে মাউশির একটি বিধিপত্র দিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে। তারপরেও বিধি ভেঙ্গে জুনিয়র শিক্ষককে দায়িত্ব দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারঃ) এবিএম সারোয়ার রাব্বি বলেন, কলেজের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অভিযোগ ও শিক্ষদের মামলার জটিলতায় আমার কিছু করার নাই। কলেজের সমস্যা নিয়ে ডিসি সারের সাথে কথা বলেছি। মামলার বেড়াজালে তাদের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে।