সাগর আহম্মেদ,কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে (বিডিইউ) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত সেমিস্টার ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ওই অতিরিক্ত ফি কমানোর দাবিতে ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিডিইউ’র একাডেমি ক্যাম্পাসের সামনে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।
এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে দেশের প্রথম ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে আওয়ামী সরকার। নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের সেমিস্টার ফি অতিরিক্ত টাকা আদায় করে নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই অতিরিক্ত ফি কমানোর দাবীতে রোববার সকালে ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা। পরে তারা সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। এসময় অতিরিক্ত ফি কমানো, শিক্ষার্থী বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতসহ বিভিন্ন দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিউর রহমান, শাহরিয়ার কবির সজীব, সাজিদ আমিন, মাহমুদুল ইসলাম, ফখরুল হাসান ফয়সাল, প্রীতম ভৌমিক, প্রতিভা সাহা, আশুরা জাহান, জিন্না জামান মাহি, নায়লা তাবাসসুম, জান্নাতুল ফেরদৌস রাত্রিসহ প্রায় ১৭৪ জন শিক্ষার্থী।
এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দোহাই দিয়ে শুরু থেকেই অতিরিক্ত বিভিন্ন ফিসহ সেমিস্টার ফি নেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে এর আগেও আন্দোলন করা হয়েছিল। তখন কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ^াস দেওয়া হয়েছিল, ফাইনাল পরিক্ষার আগেই ফি কমানোর বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত আসবে। কিন্তু আট বছর অতিবাহিত হলেও সেশন ফি কমানো হয়নি। আগামী সপ্তাহে আমাদের পরিক্ষা। অতিরিক্ত ফি কমানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এছাড়াও আমাদের ৬ মাসের জন যে সেমিস্টার ফি নেওয়া হচ্ছে। সেটা ১০ হাজার টাকা। আমরা জানি অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনসি শেষ করতে মোট এত বেিিশ টাকা দিয়ে থাকে। আমরা বছরে যে টাকা দিচ্ছি, অন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চার বছরেও ওই টাকা দিচ্ছে না। আর আমাদের অতিরিক্ত যে পাঁচ হাজার টাকার হিসাবও দেওয়া হচ্ছে না। তাই আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যতক্ষন পযন্ত আমাদের সেমিস্টার ফি কমানো হচ্ছে এবং সে বিষয়ে লিখিত কোনো সিদ্ধান্ত না আসছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা সকল ধরণের ক্লাস বর্জন করে এখানে অবস্থান কর্মসূচী পালন করবো। অপর দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে স্ট্রাকচার অনলাইনে গেলে দেখা যাবে সুন্দর স্ট্রাকচার করা হয়েছে। এটা আট বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয় সাহেবের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধুর নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এই রকম প্রহশন চলতেছে। যেগুলো বাস্তবায়ন হতে আমরা এখনো দেখছি না। আমাদের ক্যাম্পাসের যে স্থানটা বর্তমানে সেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যায় এগুলো বিরুদ্ধে কোনো হস্তক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিদ্যুতের সমস্যা জেনারেটর ঠিকমতো থাকে না। ক্লাসে গরমে খুব সমস্যা হচ্ছে। এসব বিষয়ে এটা আমাদের নায্য আন্দোলন।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মিল রেখে এই ফি ধরা হয়েছে। তারপরও এ সমস্যা সৃষ্টি কারণে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পেলে মাননীয় উপচার্য এই সমস্যার সমাধান করবেন।