এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, আগামী নির্বাচনে আমরাই ক্ষমতায় আসবো, শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসবে। আমেরিকার আইআরআই নামে একটি সংস্থার জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশের ৭০ ভাগ মানুষ শেখ হাসিনার পক্ষে। অতত্রব আবারো আমরা ক্ষমতায় আসছি। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) মিরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট পৌসভায় হাইওয়ে চত্ত্বরে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হানিফ বলেন ‘ভিসানীতি নিয়ে কথা বলার আগে আপনাদের একটু লজ্জিত হওয়ার দরকার ছিল, কারণ আপনাদের নেতা তারেক রহমান, যাকে নিয়ে আপনারা এত বড়াই করছেন সেইতো বাংলাদেশে প্রথম স্যাংশনের শিকার হয়েছেন। তাকেই আমেরিকা ২০০৮ সালে সন্ত্রাসী হিসেবে প্রথম স্যাংশন দিয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের লজ্জা নেই। সেই আল্টিমেটাম শুরু হয়েছিলো ২০১৩ সাল থেকে। একদিকে খালেদা জিয়ার মামলার ট্রায়াল চলছিল অন্যদিকে বিএনপি এতিমের টাকার লোভ যে সামলাতে পারে না তাদের সেই তথাকথিত নেত্রীকে মামলা থেকে বাঁচাতে সারাদেশে জালাও পোড়াও শুরু করেছিল। আজ ২০২৩ সাল এখনো তাদের সেই আল্টিমেটামের শেষ হলো না। শেখ হাসিনা বারবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছে, আর আপনাদের নেত্রী মামলায় সাজা হয়ে কারাগারে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কৃপায়, দোয়ায়, মমতায় ও আশির্বাদে তিনি (খালেদা) এখন বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।’ কর্নেল অলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একসময় উনি বলেছিলেন, মা ভালো হলে ছেলে ভালো হয়, এখন দেখি মাও খারাপ ছেলেও খারাপ। এখন তিনি তাদের সঙ্গে জোট করে সরকার পরিবর্তন চান।’
হানিফ আরো বলেন, ‘তারা বলে জনগণ আর এ সরকারকে চায় না। তাহলে কাকে চায়? আপনাদের চায়, আপনারা কারা। আপনাদের এক নেত্রী এতিমের টাকার লোভ সামলাতে না পেরে আদালত কর্তৃক দন্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। আরেক নেতা আপনাদের মহান নেতা তারেক রহমান। যার বিরুদ্ধে চুরি, মানি লন্ডারিং, অর্থ আত্মসাতের মামলায় শুধু যাবজ্জীবন দন্ড নয়। সুদূর সিঙ্গাপুরের আদালতও তার বিরুদ্ধে দন্ড দিয়েছে। খালেদা ও তারেক যতদিন দলের দায়িত্বে থাকবেন, ততদিন মানুষ বিএনপিকে ভোট দেবে না। যথা সময়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধিনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, ‘আমি সাতবার এমপি নির্বাচিত হয়েছি, তিনবার মন্ত্রী হয়েছি। প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমানতো ঘোষণা করেই দিয়েছে, আমার ছেলে রুহেলের নাম। আমার তো বয়স হয়েছে। সে যদি এমপি হয় আমি খুশি হব।’
এদিকে শুক্রবার জনসভার মূল প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার আগে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার নেতাকর্মীদের পদচারনায় মুখরিত হয় পুরো এলাকা। খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছেন তারা। পুরো এলাকা ব্যানার, পেষ্টুন, পোষ্টার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে। দুপুরের আগেই জনসভাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মিরসরাইয়ের এমপি পুত্র ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুব রহমান রুহেলে নামে মিছিল দিতে থাকেন। মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এবং বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকনের সার্বিক তত্বাবধানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বি.এম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য খাদিজাতুল কোবরা সনি, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, সদস্য মাহবুব রহমান রুহেল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এরাদুল হক নিজামী ভুট্টো, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন দিদার, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপু। এসময় সীতাকুন্ড আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন, সীতাকুন্ড উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুনসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকসহ প্রায় ২০ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।