Logo
আজঃ সোমবার ২০ মে ২০24
শিরোনাম
রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ২২ মাগুরায় মহানবী (সাঃ)কে কুটুক্তি করায় দুটি বাড়িতে আগুন সংঘর্ষে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ আহত অর্ধশতাধিক মিরসরাইয়ে আবারো মিললো অবিস্ফোরিত গ্রেনেড, পরে ধ্বংস শীঘ্রই বাজারে আসছে টেকনো ক্যামন ৩০ সিরিজের ফোন হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত : ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি ছাড়াও যারা মারা গেলেন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবাজার বিপণিবিতানের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের কোনো আরোহী বেঁচে নেই ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে উদ্ধারে বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে রাশিয়া সুনামগঞ্জের ২৮৫ কৃষি উদ্যোক্তা পেলেন দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ‘প্লাটিনাম’ গ্রেডে লিড সার্টিফিকেট পেলো নিপা গ্রুপের ২ সহ প্রতিষ্ঠান

আগুন কেড়ে নিলো প্রতিবন্ধি বিধবা মনোয়ারা বেগমের মাথা গোঁজার ঠাই

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর 20২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | ১৮৭জন দেখেছেন

Image

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:আগুন কেড়ে নিলো প্রতিবন্ধি বিধবা মনোয়ারা বেগমের (৬৫) মাথা গোঁজার ঠাই। অল্পের জন্য রক্ষা পেল তিনটি জীবন। ঘটনা ঘটেছে বৃহস্পতিবার ভোররাতে আমতলী পৌর শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের বাঁশতলা গ্রামে। জানাগেছে, আমতলী পৌর শহরের ৯ নং ওয়ার্ডের বাঁশতলা গ্রামের মৃত্যু পনু আকনের শারীরিক প্রতিবন্ধি বিধবা স্ত্রী মনোয়ারা বেগম দুই নাতনি মিম ও ফারজানাকে নিয়ে একটি টিন সেডের ঘরে বসবাস করে আসছে।

বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘরে তারা ঘুমিয়ে ছিল। বিদ্যুতের সট সার্কিট থেকে ওই রাতে আগুনের সুত্রপাত হয়। মুহুর্তের মধ্যে আগুন ঘরে ছড়িয়ে পরে। আগুনের তাপ পেয়ে বিধবা মনোয়ারা, শিশু মীম ও ফারজানা ঘুম থেকে জেগে ডাক চিৎকার দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে। পরে আমতলী ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও স্থানীয়রা ঘন্টাখানেক চেষ্ঠা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষনে বিধবার ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিধবাকে আর্থিক সহায়তা ও মুজিব বর্ষের আশ্রায়নের ঘর দেয়ার আশ্বাস দেন।

বিধবা মনোয়ারা বেগম কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, মোর সব শ্যাল অইয়্যা গ্যাছে। ব্যাডার আলহে একটু ঘর হেডাও পুইর‌্যা গ্যাছে। মুই এ্যাহন কোম্মে থাকমু। ম্যানে না উডাইলে মুই ও মোর দুই নাতনি পুইর‌্যা মইর‌্যা যাইতাম। আমতলী পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পৌর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক জিএম মুছা বলেন, বিধবা মনোয়ারা বেগমের আর কিছুই রইলো না। তার  স্বামীর শেষ সম্বল মাথা গোজার ঠাঁইটুকু আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, বিধবা মনোয়ারাকে মুজিব বর্ষের একটি ঘর দিলে শেষ জীবনে ভালোভাবে কাটাতে পারবে।

আমতলী ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন ম্যানেজার মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, ধারনা করা হচ্ছে বিদ্যুতের সট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওই বিধবা নারীকে আর্থিক সহায়তা করা হবে। তিনি আরো বলেন, ওই বিধবা প্রকৃত ভুমিহীন হওয়ার তাকে মুজিব বর্ষের আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর দেয়া হবে।


আরও খবর

গলাচিপায় বকনা বাছুর বিতরণ

বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪




হিলি সীমান্ত পরিদর্শন করলেন তিন বাহিনীর ৭৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ৯৮জন দেখেছেন

Image

মাসুদুল হক রুবেল,হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করলেন সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর ৭৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ঢাকাস্থ ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ এর এএফডাব্লুসি কোর্সের শিক্ষা সফরের অংশ হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন উর রশিদ এর নেতৃত্বে ৭৮ সদস্যের একটি প্রশিক্ষনার্থী দল হিলি সীমান্তে আসেন।

সোমবার দুপুর দেড় টায় হিলি সীমান্তের চেকপোস্ট গেটে পৌঁছালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন উর রশিদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জয়পুরহাট- ২০ বিজিবির অধিনায়ক তানজিলুর রহমান। এরপর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন উর রশিদ হিলি সীমান্তের চেকপোষ্ট গেটের শুন্য রেখায় ভারতের ৬১ ব্যাটালিয়ানের বিএসএফের সহকারী অধিনায়ক প্রেম বিসোয়াতকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে প্রতিনিধি দলটি সীমান্ত দিয়ে দুদেশের মাঝে আমদানি-রফতানি বানিজ্য,পাসপোর্ট যাত্রী পারাপারসহ বিজিবি ও বিএসএফের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত হন।এরপর প্রতিনিধি দলটি বিজিবির হিলি আইসিপি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। সেখানে বিজিবির সাথে বৈঠক করে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট এর উদ্দেশ্যে রওনা দেন।


আরও খবর



শ্রমিক দিবসে খাবার ও পানি এবং গেঞ্জি বিতরণ করেন সুজন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০২ মে 2০২4 | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ৯১জন দেখেছেন

Image
আব্দুস সবুর তানোর প্রতিনিধি :আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে রাজশাহীর তানোরে এমপি ফারুক চৌধুরী পক্ষে  খাবার ও বিশুদ্ধ পানি এবং গেঞ্জি বিতরণ করেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সমাজ সেবক আবুল বাসার সুজন। বুধবার দুপুরের দিকে থানা মোড়ে শ্রমিকদের মাঝে এসব বিতরণ করেন তিনি। এর আগে সকালের দিকে পৌর এলাকার কালিগঞ্জ বাজার ও কাশেম বাজার মোড়েও নিজ উদ্যোগে এসব সামগ্রী বিতরণ করেছেন তিনি। গত সোমবার ও মঙ্গলবারে তীব্র তাপদাহে ভ্যান চালক ও খেটে খাওয়া শ্রমিক দের মাঝে ছাতা ও জুস বিতরণ করেন সুজন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে থানা মোড়ে পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরন করবেন বলেও জানান তিনি। এসময় পৌর সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শিবলন, ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফুল, ৪ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ইনসান আলী, শাবান আলী সহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

সুজন বলেন, আমি যা কিছু করছি মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তোষ্টি অর্জনের জন্য। মানুষ মরনশীল সবাইকে সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। সাথে কিছুই যাবে না। শুধু মাত্র ভালো কাজগুলো থেকে যাবে। কোন লোক দেখানো বা সুনাম অর্জনের জন্য আমি এসব করিনা না।  আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন আমার এসব কাজগুলো যেন মহান আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন, এটাই আমার প্রত্যাশা।

আরও খবর



বাংলাদেশের ইতিহাসে দীর্ঘ তাপপ্রবাহ বইছে

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১৩৬জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক:সারাদেশে টানা ২৬ দিনের রেকর্ড তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।প্রচণ্ড গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই। প্রখর রোদে পথঘাট সব কিছুই উত্তপ্ত। কোথাও কোথায় সড়কের পিচ গলতে শুরু করেছে। গরমের কারণে বাড়ছে হিটস্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি। এর আগে ১৯ দিনের দীর্ঘ তাপপ্রবাহ ছিল গত বছরের এপ্রিল মাসে।

এটিই দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ তাপপ্রবাহ,আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।এপ্রিলের বাকি দিনগুলোতে এ দাবদাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এপ্রিল মাসের টানা তাপপ্রবাহ ‘অস্বাভাবিক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানিয়েছেন এটিই দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ তাপপ্রবাহ।

মো. আজিজুর রহমান জানান, আমাদের কাছে থাকা তথ্যমতে এর আগে এত দীর্ঘ মেয়াদে কখনো তাপপ্রবাহ বয়ে যায়নি। একটানা এতদিনের তাপপ্রবাহ, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম। এরইমধ্যে এটি সব রেকর্ড ভেঙেছে, কিন্তু এটি তো আরও চলবে। কমপক্ষে আগামী আরও ৪ থেকে ৫ দিন তো থাকছেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসজুড়ে টানা তাপপ্রবাহ ছিল না। গত বছর টানা ১৯ দিন তাপপ্রবাহ ছিল। এবার পুরো এপ্রিল মাস গড়িয়েও এর বাইরে যাচ্ছে।

গত ৩১ মার্চ ফের রাজশাহী ও পাবনা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। সেই তাপপ্রবাহ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) পর্যন্ত চলছে। সে হিসাবে এখন পর্যন্ত দেশের ওপর দিয়ে টানা ২৬ দিন ধরে তাপপ্রবাহ বইছে।

২০ এপ্রিল চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যশোরে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওইদিন দিনের তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৪ ও পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। গত কয়েক দিনে কিছুটা কমার পর বৃহস্পতিবার ফের যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দিনের তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

এবার সিলেট ছাড়া মোটামুটি পুরো দেশ টানা দাবদাহের শিকার হয়েছে। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিটস্ট্রোকে অনেকের মৃত্যু হয়েছে।


আরও খবর



মহান মে দিবস, বঙ্গবন্ধু ও শ্রমিক অধিকার

প্রকাশিত:বুধবার ০১ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ মে ২০24 | ১৩৬জন দেখেছেন

Image

লায়ন মোঃ গনি মিয়া বাবুল ॥১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস, যা বিশ্ব পরিমন্ডলে ‘মহান মে দিবস’ বা শ্রমিক দিবস হিসেবে গুরুত্বসহকারে পালন করা হয়। বিশ্বের শ্রমজীবী-কর্মজীবী, পেশাজীবী, মেহনতি মানুষের ঐক্য, সংহতি, সংগ্রাম, সাফল্য ও বিজয়ের দিন মহান মে দিবস। মে দিবস এলেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে ঘর্মাক্ত মেহনতি-শ্রমজীবী মানুষের প্রতিচ্ছবি। আর এই শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের প্রশ্নটিও সাথে সাথে উঠে আসে এই ঐতিহাসিক দিনে। এই দিবসের তাৎপর্য অনেক, এর পেছনে রয়েছে একটি রক্তস্নাত ইতিহাস। ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে আট ঘণ্টা শ্রম দিবস, মজুরী বৃদ্ধি, কাজের উন্নতর পরিবেশ ও শ্রমের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলনে আত্মহুতি দান করেছিলেন শ্রমিকরা, ১ মে তারিখে বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট সমাবেশে পুলিশের গুলি বর্ষণে ৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারায়। এর প্রতিবাদে পরদিন হে মার্কেটে শ্রমিকরা মিলিত হলে কারখানার মালিকরা সেখানে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এবং এতে ৪ শ্রমিক নিহত হয়। শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন করার দায়ে অগস্ট স্পাইস নামে এক শ্রমিক নেতাকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল সোশ্যালিষ্ট কংগ্রেসে ১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষিত হয় এবং তখন থেকে অনেক দেশে দিনটি শ্রমিক শ্রেণী কর্তৃক উদযাপিত হয়ে আসছে।

রাশিয়া এবং পরবর্তীতে আরো কয়েকটি দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সংগঠিত হবার পর মে দিবস এক বিশেষ তাৎপর্য অর্জন করে। জাতিসংঘের একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শাখা হিসেবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন বা আইএলও) প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার সমূহ স্বীকৃতি লাভ করে। আইএলও কতগুলো নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠা করে এবং সকল দেশের শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের তা মেনে চলার আহ্বান জানায় এবং এভাবে শ্রমিক ও মালিকদের অধিকার সংরক্ষণ করার চেষ্টা করে। বাংলাদেশ আইএলও কর্তৃক প্রণীত নীতিমালায় স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। বাংলাদেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মাধ্যমে মে দিবস পালিত হয়ে আসছে।
রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান, বিরোধীদলীয় নেতা এবং সংশ্লিষ্ট শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে থাকেন। মে দিবসের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্যে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র বা প্রবন্ধ কিংবা বিশেষ নিবন্ধন প্রকাশ করে। মাথায় রঙ-বেরঙের কাপড় বেধে নানা রঙের ফেস্টুনসহ শ্রমিকরা মিছিল শোভাযাত্রা বের করে, বেতার ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠানাদির ব্যবস্থা করে। বাংলাদেশে বিভিন্ন পেশাজীবী, শ্রমজীবী এবং সামাজিক -সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। দেশের সংবাদপত্র ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এই সকল সভা-সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের খবর গুরুত্বসহকারে প্রচার করে থাকে। বাংলাদেশ মে দিবস পালনের ক্ষেত্রে মোটেও পিছিয়ে নেই। এ দেশে ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৩৮ সালে নারায়ণগঞ্জে প্রথম মে দিবস পালিত হয়। তারপর পাকিস্তান আমলেও মে দিবস যথেষ্ট উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে হাজার হাজার শ্রমিক অংশগ্রহণ করে এবং দেশ মাতৃকার জন্যে শহীদ হয়।

১৯৭২ সালে ১ মে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১ মে-কে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা সহ রাষ্ট্রপতি আদেশ ২৭(ক) ধারা মোতাবেক এদেশের সকল ব্যাংক, বীমা, শিল্প- কলকারখানা, রেল, নৌ-পরিবহনসহ  বৈদেশিক বাণিজ্যের সিংহভাগ রাষ্ট্রায়ত্ব ঘোষণা করেন। ফলে এর সুফলও ঐ সকল শিল্প কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীগণ ভোগ করতে থাকেন। সরকার নীট মুনাফার ৫% শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে সমহারে বন্টনের ঘোষণা দেয়, ফলে বেশ কিছু শিল্পে উৎপাদন ও মুনাফা যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় যে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের পর জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে ১৯৭৭সালে প্রথম পাকিস্তানী অবাঙালিদের রেখে যাওয়া কিছু কিছু শিল্প কলকারখানা ব্যক্তি মালিকানায় দেওয়া শুরু করেন, পরবর্তীতে জেনারেল এরশাদ ও বেগম খালেদা জিয়ার সরকার কম-বেশী সবাই ব্যক্তি মালিকানায় মিল কলকারখানা হস্তান্তর করেন। আটের দশকের শেষের দিকে পূর্ব-ইউরোপে সমাজতন্ত্রের পতনের পর তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো অতিদ্রুত সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক কর্মসূচী পরিত্যাগ করে বাজার অর্থনীতি তথা মুক্তবাজার অর্থনীতি রাষ্ট্রীয় পলিসি হিসেবে ঘোষণা করেন।

এই সব কারণে একদিকে যেমন শোষণ- নির্যাতন বেড়েছে অপর দিকে ব্যক্তির লুটপাটে পানির দামে ক্রয়কৃত চালু মিল কলকারখানাগুলো একে একে বন্ধ হয়ে গেছে। দেশ আজ আমদানি নির্ভর একটি সিন্ডিকেট চক্রের হাতে জিম্মি । বাংলাদেশে আজ শ্রমিকদের অবস্থা খুবই নাজুক । নারী-পুরুষের মুজুরী  বৈষম্যতো আছেই, এছাড়াও প্রায় সকল সেক্টরে ৮ ঘন্টার বেশী শ্রম দিতে হয়। হোটেল- রেস্তোরায় ও পরিবহন সেক্টরে ভোর ৬ টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত শ্রমিক খাটানো হয়, তারপরও নেই কোন নিয়োগপত্র, নেই কোন মজুরী কাঠামো, নেই কোন উৎসব ভাতা কিংবা চিকিৎসাভাতা, এই সব সেক্টরে অধিকাংশ শিশু শ্রমিক নিয়োজিত আছে। দেশের তৈরী পোশাকশিল্প , চাউলের কল, চাতাল, চিংড়ী ঘের ও কৃষি কাজে হাজার হাজার নারী ও পুরুষ শ্রমিক কর্মরত আছে। এখানেও তাদের নেই কোন মজুরী কাঠামো বা নির্ধারিত শ্রম ঘন্টা অথবা কর্মের উপযুক্ত পরিবেশ, এমনকি শ্রমিকদের নেই নিজের জীবনের নূন্যতম নিরাপত্তা, অথচ তাঁরাই নিজের শ্রম দিয়ে, ঘাম দিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা চালু রেখেছেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে শ্রমিক হত্যাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ১,৫০০ শ্রমিক নিহত এবং দুইসহস্রাধিক শ্রমিক আহত হয়ে পঙ্গুবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাহ্যিকভাবে এটি দুর্ঘটনা। একটি ভবন ধসে লোক হতাহত হয়েছেন।

আসলে এটা কি শুধুই দুর্ঘটনা? কথিত দুর্ঘটনার আগের দিন ভবনটিতে ভয়াবহ ফাটল দেখা যায়। লোকজন ভবন ছেড়ে চলে যায়। পরের দিন ভবনে অবস্থিত কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান দুর্ঘটনার আশংকায় খোলেনি। সেখানে গার্মেন্টস শিল্পে কাজ করার জন্যে প্রায় ৪ হাজার শ্রমিককে চাকরির ভয়ভীতি দেখিয়ে ঐ ভবনের ভেতরে নেয়া হয়। তারপর এই দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবনটি বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করে সিলগালা করে বন্ধ করতে অসুবিধা কোথায় ছিল? ভবনটি নির্মাণে রাজউকের কোন অনুমোদন ছিল না। ভবন মালিক পৌরসভা থেকে ছয় তলা করার অনুমোদন নিয়ে, সেখানে নয় তলা ভবন তৈরী করলো কিভাবে? এই ভবন ধসের বিষয়টি মানবসৃষ্ট, কাজেই এই বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি নিছক দুর্ঘটনা নয়, ইহা হত্যাকান্ড। ফলে ভবন মালিক সোহেল রানাসহ দায়ী সব পোশাক শিল্পের মালিকদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ী পোশাক শিল্পের মালিকদের বাঁচানোর যে চেষ্টা অতীতে বিজিএমইএ করে এসেছে, তা থেকে তারা সরে আসবে বলে আশা করছি। দেশের তৈরী পোশাকশিল্প খাতকে বাঁচানোর স্বার্থেই এটা করতে হবে।কর্মস্থলে শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রানা প্লাজা হতাহত শ্রমিকদের অনেকেই আজও তাদের ক্ষতিপূরণ পায়নি।

এমনকি নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা শত চেষ্টা করেও খোঁজ কিংবা নিহত শ্রমিকের লাশও পায়নি। এই ভবন ধসের ঘটনার অভিজ্ঞতা নিয়ে অনুরূপ ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি অন্যান্য কারখানায় না ঘটে সেরকম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি।

মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক সংগ্রাম-আন্দোলনে বাংলাদেশের শ্রমিকদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। বাংলাদেশের শ্রমক্ষেত্রে যত আইন, নীতি, বিধি-বিধান ও নীতিমালা রয়েছে তা মূলত দেশের শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষা তথা শ্রমক্ষেত্রে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা  ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শ্রমিজীবী মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশী। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের একাগ্রতা ও শ্রমিক-মালিকের পারস্পরিক সুসম্পর্ক অপরিহার্য। টেকসই উন্নয়ন ও শিল্প-বাণিজ্য খাতে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও তাদের ন্যায্য অধিকারসমূহ নিশ্চিত করতে হবে।


আরও খবর



কুড়িগ্রামের রৌমারী প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে অসহায় পরিবারের মাঝে ভেড়া বিতরন

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ | ১২৪জন দেখেছেন

Image

মাজহারুল ইসলাম,রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃপ্রানী সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রৌমারী উপজেলার চরাঞ্চলের দরিদ্র অসহায় ৩৪জন পরিবারকে ৩টি করে ভেড়া বিতরন করা হয়। সরকারের দেয়া বিনামূল্যে তিনটি করে ভেড়া পেয়ে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রান ভোরে দোয়া করেন দরিদ্র পরিবার গুলো। একটি অসচ্ছল পরিবাকে সচ্ছলের পথে দ্বার করাতে এসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ৩৪টি পরিবারের মাঝে ৩ টি করে ভেড়া বিতরনকালে বক্তারা বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ভেড়া বিতরনে সভাপত্বিত করেন প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ হাবিবুর রহমান হাবিব এর সভাপত্বিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন রৌমারী উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন সাদাত,বাংলা টিভি রৌমারী প্রতিনিধি মাজহারুল ইসলামসহ আরও অনেকে।


আরও খবর