
আবার জমবে চায়ের কাপের আড্ডা
মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ:
মানুষের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ন
সময় হলো ক্যাম্পাস লাইফ। যা তার সারা জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকে। আর এর মধ্যে অন্যতম হলো
ক্যাম্পাসের চায়ের আড্ডা। চায়ের কাপে এক চুমুক, ব্যাস শরীরের ক্লান্তি নিমিষেই দূর
হয়ে যায়। এক কাপ চা না হলে সকালটাই শুরু করতে পারেন না অনেকে। মানুষের সুস্থ থাকার
জন্য আড্ডা আর একরাশ হাসি, যে কোন দামী ওষুধের থেকে বেশি কার্যকরী। যখন একটা গুমোট,
গোমড়া পরিবেশ নিজের চারিদিকে তৈরি হয় তখন সেটা শরীর, মন দুটোর উপরেই প্রভাব ফেলে।
মানুষের মন এমনই অদ্ভুত।
সারাদিন ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, পরীক্ষা ও ভাইভা শেষে মনটাকে সতেজ করার জন্য টিএসসির
চাওয়ালা মামাদের চায়ের দোকানে এক কাপ চা যেনো সব ক্লান্তি দূর করে। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে
কিংবা পড়ন্ত বিকেলে ক্যাম্পাসে ফুটে ওঠে চায়ের কাপের আড্ডার এক দারুণ প্রতিচ্ছবি। টিএসসির
মামাদের টংঘরে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে, আধোঘুম চোখে দৌড়ে এসে, ক্লাস শেষে ক্লান্ত
দেহে নিয়ে বসে সবাই মিলে একসঙ্গে আড্ডা দেওয়ার মধ্য একটা প্রশান্তি পাওয়া যায়। কখনো
বা ক্লাসে ঢুকতে না পেরে আড্ডা দেওয়া। রাতগুলো আড্ডাতে পার করা। কোনো কথাই নেই, আড্ডা
চলবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ক্যাম্পাস-জীবনে আড্ডা ছাড়া অলস ও অসাড় মনে হয়। চা যেনো এই আড্ডা
গুলোর সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে আছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
টিএসসি চা ওয়ালা মামাদের চা কিংবা ক্যাফেটেরিয়ার চা বা বিবিএ ফ্যাকাল্টির নিচে সিধু
মামার চা অথবা কলা ভবনের কোনার দোকানের চা আড্ডার যেনো কোথাও কমতির নেই। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ সময় কাটে টিএসসির চায়ের টং দোকান গুলোতে। স্থানটিতে সারাক্ষণ
শিক্ষার্থীরা সমাগমে মুখরিত থাকে। সকাল, সন্ধ্যা বা বিকেলে জবিয়ান”রা টিএসসির চায়ের
টংয়ে কাপে কাপে উঠে ঝড়, সাথে পাল্লা দিয়ে নিকোটিনের ধোঁয়াও ভেসে বেড়ায়। সেই সাথে আড্ডা
আর গিটারের টুংটাং শব্দ। সেই আড্ডায় কোন ডিপার্টমেন্ট থাকেনা, কোন ব্যাচ থাকেনা, থাকে
শুধুই একপ্রাণ কিছু জবিয়ান।
লিকার চা, গ্রিন টি না দুধ
চা টিএসসির চা ওয়ালা মামাদের প্রথম প্রশ্ন এটা। চায়ে চিনি কে কম বেশি খায় সেটা অবশ্য
মামাদের মনেই থাকে। অনেকে আবার লিকার চায়ের সাথে আদা, এলাচ, দারচিনি যা মিশিয়ে খেতে
চান। সিধু মামার রং চা তো পুরো ক্যাম্পাস পরিচিত। কোথাও জায়গা না পেয়ে ক্যাফেটেরিয়ার
এককাপ রং চায়ের জন্য লাইনও ধরতে দেখা যায় অনেককে। চা খেতে ভালোবাসেন না এরকম মানুষ
খুব কমই পাওয়া যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে অনেকেই চা খোর হয়ে যান। টিএসসি আর ক্যাম্পাসের
আশেপাশের চায়ের দোকানের মামাদের সাথে শিক্ষার্থীদের এক আত্নার সম্পর্ক হয়ে গেছে। এইসব
কিছুই কেড়ে নিয়ে করোনা নামক ভয়াল থাবা। জবির ফাঁকা টিএসসি আর জনমানবহীন ক্যাম্পাস যেনো
সব কিছুই স্মৃতির পাতায় ঠায় দিয়েছে। করোনাকালেও টিএসসির চায়ের দোকানে বসছিলো আড্ডা,
তবে ছিলো না আগের মতো আমেজ। চায়ের কাপের আড্ডায় থাকে না কোনো সিনিয়র জুনিয়র ভেদাভেদ।
সবাই একসাথে মেতে উঠে আড্ডায়।
চায়ের কাপের আড্ডায় ভরপুর
ক্যাম্পাস জীবন। আড্ডাকে নিত্যদিনের রুটিন বলা যায়। আড্ডার মাঝে যেন প্রাণ খুলে কথা
বলার সুযোগ পায়। বন্ধুদের কাছে শেয়ার করা নিজের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা। চায়ের কাপে
চুমুক দিতে দিতে আড্ডা বেশ জমে ওঠে। আর এসব আড্ডার বিষয়ে নেই কোনো নির্দিষ্টতা। সুযোগ
পেলেই একে-অপরকে পঁচানো, হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠে সবাই। আড্ডার অংশ হিসেবে শুধু যে এগুলোই
থাকে তা কিন্তু না, থাকে ব্যক্তিগত নানা বিষয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাহিত্য,
সংস্কৃতিসহ গঠনমূলক আলোচনা। এগুলো নিয়ে কথা বলতে বলতে হাতের সেই কাপটি থেকে কখন যে
চা ফুরিয়ে যায় টেরই পাওয়া যায় না।
চায়ের কাপের আড্ডা সম্পর্কে
জানতে চাইলে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিথিলা দেবনাথ ঝিলিক বলেন, ক্যাম্পাস
জীবন আর বন্ধুত্ব এর নিত্য এক সঙ্গী চায়ের কাপের আড্ডা। রুটিনে বাধা আমাদের জীবনে প্রিয়
মানুষদের সাথে আড্ডা সবসময়ই প্রাণবন্ত করে তোলে, আর সেই প্রাণকে সজীবতা দেয় চায়ের কাপের
আলাপ। কোয়ারেন্টাইন এর অস্থিরতায় বারংবার স্মৃতিতে সেই হিসেববিহীন আড্ডা গুলোই ভেসে
উঠছে। ছোট, বড় কিংবা সম্পর্ক যেমনই হোক, ডিপ্রেশন কিংবা আনন্দ, গুরুত্বপূর্ণ কথা কিংবা
সাধারণ সবসময়ই চায়ের আড্ডাই সেরা।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী
সাদিয়া নওশিন বিন্তি বলেন, ক্যাম্পাসে সবার সাথে সবার যোগাযোগ ধরে রাখার মাধ্যম হচ্ছে
চায়ের কাপের আড্ডা। ক্যাম্পাসে সদ্য আসা জুনিয়র থেকে মাস্টার্স পাশ অথবা চাকুরী ক্ষেত্রে
প্রবেশ করা সিনিয়র সবার সাথে সম্পর্কের সুতো বেঁধে দেয় এই চায়ের কাপের আড্ডা। টিএসসির
প্রতিটি চায়ের দোকানে গড়ে ওঠে বছর চারেক হাজারো স্মৃতি হাজারো গল্প। অনেক অনেক মিস
করতেছি টিএসসির চা দোকানের মামাদের।
এই বিভাগের আরও খবর

অবহেলা নয় সাংবাদিকতায় গুরুত্ব দিন

বগা ইউনিয়নের ২ নং বানাজোড়া ওয়ার্ড মেম্বার প্রার্থীর দোয়া কামনা

প্রিয়তমা স্ত্রীর মৃত্যুর কথা শুনে স্বামীর মৃত্যু!পাশাপাশি চিরশায়িত হলেন তারা

ধর্ষণের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই স্কুলছাত্রীর মৃত্যু : ময়নাতদন্ত রিপোর্ট

ডেমরায় সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং সাঈদ বাহিনীর হামলা লুটপাটের ঘটনায় আহত ৪, গ্রেফতার ৩

কুমিল্লা ব্রাম্মনপাড়া চান্দলা গ্রাম কে বদলে দিতে কাজ করছে চান্দলা প্রবাসী শ্রমজীবী সমবায় সমিতি

কেটিভি বাংলার চেয়ারম্যান মামুনুর হাসান টিপু’কে কদমতলী থানা রিপোর্টার্স ক্লাব এর সংবর্ধনা

জরুরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

কেটিভি বাংলা’র ৪র্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন

১৯৭১ থেকে ২০২১ রাষ্ট্রের বয়স যখন ৫০ বছর ক্যালেন্ডারে হুবহু মিল

অবহেলা নয় তরুণ প্রজন্মকে সাংবাদিকতায় দিতে হবে

একনেকে তিন হাজার ৩০৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন

অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো কেটিভি বাংলা’র ৪র্থ বর্ষপূতি

এইচএসসির ফলাফল বিষয়ে মঙ্গলবার কথা বলবেন শিক্ষামন্ত্রী

কে কাকে বিয়ে করবে এটা অন্যকেউ কেন নির্ধারন করে দিবে ?

ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে নলতায় মতবিনিময় করলেন তুফান নলতা

বড় রঘুনাথপুর গ্রামের আমজেদ শরীফের মৃত্যুতে শোক

পটুয়াখালীর বাউফলে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, ধর্ষক গ্রেপ্তার

জোড় করে অবসরে পাঠানো,মাতুয়াইল হাজী আঃলতিফ ভুইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ অধ্যক্ষের বিবৃতি

২৫ বা ২৬ জানুয়ারি দেশে সিরামের ভ্যাকসিন আসবে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভারতে তিনদফায় কিশোরীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ

জাতীয় সংসদের শীতকালীন ও বছরের প্রথম অধিবেশন বসছে আজ বিকেলে
